জুম সফটওয়্যারটি তৈরির সময়ও এতোটা আশা করেননি চীনা বংশোদ্ভূত সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এরিক জুয়ান। এমনকি সফটওয়্যারটি তিনি সবার জন্য উন্মুক্ত করার উদ্দেশ্যে তৈরি করেননি।
২০১১ সালে তার টেক কোম্পানি যাত্রা শুরু করেন। বিগত বছরগুলোতে ওয়েবেক্স র্যাঙ্কে নিজের অবস্থান ধরে রেখে বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সারির একটি ভিডিও কনফারেন্সিং সফটওয়্যার কোম্পানির একটি জুম।
বৈশ্বিক লকডাউন শুরু হওয়ার পর জনপ্রিয়তা অর্জনের লক্ষে জুম ফ্রি ট্রায়াল ভার্সন থেকে টেস্ট করার সময়সীমার বাধাধরা নিয়ম তুলে নিয়ে পুরোপুরি উন্মুক্ত করে দিয়েছিল চীন, যুক্তরাজ্যসহ অনেকগুলো দেশে।
গত বছর ফার্ম প্রথমবারের মত তাদের শেয়ার পুজিবাজারে তুলে ১৫.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে বিক্রি করে। যা কিনা গত মাসে ৫৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। এ বছরে শুরু থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত জুমের সফটওয়্যার সার্ভিস বিক্রি ১৬৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৩২ কোটি ৮২ লক্ষ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। ১ লাখ ৮০ হাজারেরও বেশি নতুন গ্রাহক যোগ হয়েছে জুমের সঙ্গে। ত্রৈমাসিক হিসাবে জুমের আয় প্রায় ৩ কোটি মার্কিন ডলার।
করোনাকালীন প্রতিদিন গড়ে ৩০ কোটির বেশি মানুষ তাদের কাজ সম্পাদনে ব্যবহার করছে এই সফটওয়্যার। এমনকি গ্রাহকরা ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে এই হিসাবেরও ৩ গুণ বেশি ব্যবহার করেন। জনপ্রিয়তা বাড়ার সাথে সাথে বিনিয়োগের পরিধিও বাড়াতে হচ্ছে নতুন গ্রাহকদের জন্য। আর টানপোড়োনে পড়তে হচ্ছে ফ্রি ভার্সন ব্যবহারকারীদের জন্য।
জুমের খ্যাতির মূল আরেকটি কারণ হচ্ছে সফটওয়্যারটির এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন প্রাইভেসি ফিচারের কারণে। যেখানে অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো অবিরত ভাবে তথ্য বিক্রি, হ্যাক এবং সিকিউরিটি ফ্লু দিয়ে পরিপূর্ণ।
প্রথম দিকে জুমকে রাজনৈতিক ভাবে বিড়ম্বনার স্বীকার হতে হয়েছিল। চীনা সরকারের পক্ষ থেকে জুমকে সতর্কতা দিয়ে বলা হয়- জুম ব্যবহার করে সরকারি দাফতরিক কাজ করলে তথ্য ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তখন চীনা বংশোদ্ভূত এই মার্কিন নাগরিক জুয়ান সফটওয়্যারটির ত্রুটিগুলো সংশোধন করে পুনরায় বাজারে ছাড়েন।
বর্তমানে জুম শব্দটি লোকমুখে এতোটাই প্রচলিত হয়ে গেছে যে ভিডিও কনফারেন্সের কথা উঠলে মানুষ এক মুহূর্তের জন্য হলেও জুমের কথা চিন্তা করবে। তবে এই করোনা মহামারীতে মাইক্রোসফট আর সিসকোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ব্যবসায় এগিয়ে থাকা জুমের জন্য কিছুটা হলেও দুষ্কর। কেন না ভিডিও কনফারেন্স সুবিধা ছাড়া জুমের আর কোনো ব্যবহার নেই।