সামাজিক যোগাযোগের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুক। নানান ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন দেশে প্রায়ই বন্ধ করা হয় মাধ্যমটি। কোথাও কোথাও নির্দিষ্ট সময়ের পর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও তিন দেশে চিরস্থায়ীভাবেই বন্ধ রয়েছে ফেসুবক।
জেনে নিন, কোন কোন দেশে নিষিদ্ধ হয়েছে ফেসবুক—
উত্তর কোরিয়া
উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন দলের নেতা কিম জং উন তার দেশে সব সময়ই ইন্টারনেট ব্যবহার সীমিত রেখেছেন। বিভিন্ন সময় আরোপ করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। ২০১৬ সালের এপ্রিলে দেশটি ফেসবুক ব্লক করা শুরু করে। ধারণা করা হয়, অনলাইনে তথ্য বিস্তার এবং নিজেদের ক্ষমতা হারানোর ভয়ে কিম জং উন এ উদ্যোগ নেয়।
সোশ্যাল মিডিয়া গবেষক রামেস্ট শ্রিনিবাসন জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়া হচ্ছে এমন দেশ, যেখানে প্রত্যেকটি কম্পিউটার বা প্রযুক্তিতে সরকারি নজরদারি রয়েছে। সফটওয়্যার থেকে হার্ডওয়্যার সবকিছুতেই সরকারি বিধিনিষেধ জারি আছে।
চীন
‘দ্য গ্রেট ফায়ারওয়াল অব চায়না’ নামে ইন্টারনেটের ওপর সেন্সরশিপ এবং নজরদারি বজায় রেখেছে চীনা সরকার। ২০০৯ সালের জুলাইয়ে ‘উরুমকি দাঙ্গা’র পর চীনে প্রথম ফেসবুক ব্লক করা হয়। কারণ চীন সরকার ধারণা করেছিল, দাঙ্গা ছড়ানোর জন্য মানুষ যোগাযোগ এবং পরিকল্পনা করতো ফেসবুক ব্যবহার করে। ওই ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে ইন্টারনেটের ওপর আরো কড়াকড়ি আরোপ করে চীনা সরকার। ২০১৩ সালে সীমিত আকারে সেই নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছিল। যদিও তা সাংহাইয়ের মুক্তবাণিজ্য এলাকার মাত্র ১৭ বর্গমাইলের মধ্যে।
বর্তমানে চীনে স্বাধীনভাবে কেউ ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে না। কারণ তাদের প্রতিটি কার্যকলাপে দেশটির সরকার নজরদারি করে। চীনের কমিউনিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে যায়, এমন সব ওয়েবসাইট চীনে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। আর তার মাঝে অন্যতম ফেসবুক।
তবে বিদেশি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট বন্ধ থাকলেও উইবো, রেনরেন, উইচ্যাটের মতো চীনা সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট এবং অ্যাপগুলো এখন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে চীনে। আর তাই ফেসবুক বা টুইটারের অভাব এখন আর তেমন বোধ করেন না চীনারা।
ইরান
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এমনিতেই রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব চলছে দেশটির। কখনো কখনো এই দ্বন্দ্ব গড়িয়েছে সাইবার যুদ্ধে। এই দেশেও নিষিদ্ধ মার্কিন সোশ্যাল জায়ান্ট ফেসবুক। তবে মজার বিষয় হচ্ছে সাধারণ জনগণের ফেসবুকে প্রবেশাধিকার না থাকলেও, রাজনৈতিক নেতাদের ফেসবুক এবং টুইটার অ্যাকাউন্ট সক্রিয় রয়েছে।
মূলত ২০০৯ সালের নির্বাচনের পর সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগঠিত হওয়ার ভয়ে ফেসবুকসহ বেশ কিছু স্যোশাল মিডিয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছিল দেশটিতে।