তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, ভোগ নয়, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শ ছিল ত্যাগের। বঙ্গবন্ধু রাজনীতিতে নীতি-আদর্শকে সর্বোচ্চ স্থান দিতেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নেই, রয়েছে তাঁর আদর্শ। সাহস ও প্রজ্ঞা তাঁকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে এবং বিশ্ব নেতায় রূপান্তর করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রতিমন্ত্রী আজ ঢাকার আগারগাঁওস্থ আইসিটি টাওয়ারের বিসিসি মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস-২০২০ উপলক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ সব কথা বলেন।
আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যেদের মধ্যে বক্তৃতা করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ.কে.এম. রহমতুল্লাহ, এমপি, আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব, মোহাম্মদ শামসুল আলম। প্রধান আলোচক ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও সিনিয়র সাংবাদিক, অজয় দাশগুপ্ত।
প্রতিমন্ত্রী বলেন বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা বিরোধী চক্র মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস মুছে ফেলতে চেয়েছিল। দীর্ঘ ২১ বছর তরুণ প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে ও বুঝতে না দিয়ে বিকৃত করে উপস্থাপন করেছে। আইন করে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার বন্ধ করে খুনীদের দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুনর্বাসন করেছিলো বলে তিনি জানান।
পলক বলেন বিজয়ের আনন্দ ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু পরাজয়ের গ্লানি দীর্ঘস্থায়ী। একাত্তরের পরাজিত শক্তি পাকিস্তান ও পাকিস্তানের দোসর এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন কিছু বেঈমান, রাজাকার-আলবদর সেই রাতে পরাজয়ের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য সাড়ে তিন বছর বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে, মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ভাবে অপপ্রচার চালিয়েছে। চূড়ান্তভাবে তারা ১৯75 এর 15 আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে। এমনকি তাঁরা সেই রাতে নিষ্পাপ শিশু শেখ রাসেলকেও হত্যা করেছে। তাঁদের ভয় ছিল বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরসূরি কেউ যদি বেঁচে থাকে তাহলে তারা বাংলাদেশকে তাদের মত করে সেই পাকিস্তানের ভাবধারায় ফিরে যেতে পারবে না। আর সেই কারণেই বঙ্গবন্ধুর চার বিশ্বস্ত সহযোগীকে নভেম্বরের 3 তারিখে জেলের অভ্যন্তরে হত্যা করা হয়। ঘাতকেরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং স্বাধীন বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়াকেও হত্যা করতে চেয়েছে।
বঙ্গবন্ধু যুদ্ধ বিধ্বস্থ বাংলাদেশ গঠনে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছিলেন উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন সংবিধানে সকল জনগণের ৫টি মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জ্ববীত হয়ে আইসিটি বিভাগ কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের শুরুতেই নাগরিকদের জন্য করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত যেকোনো প্রয়োজনীয় পরামর্শ, করোনা সম্পর্কিত সকল সেবার হালনাগাদ তথ্যের জন্য করোনা পোর্টাল www.corona.gov.bd ও কন্টাক্ট ট্র্যাসিং অ্যাপ চালু করাসহ বহু কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে। তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে অনুসরণ করে প্রযুক্তিনির্ভর তথা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশের অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
পরে বঙ্গবন্ধুর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।