হ্যাকিং শব্দটার সাথে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত । যারা হ্যাক করে তাদেরকে বলা হয় হ্যাকার । বিশ্বে অনেক হ্যাকার রয়েছে৷ তার মধ্যে অনেকেই হোয়াইট হ্যাট হ্যাকার। আবার অনেকেই ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার । এরা প্রতিনিয়ত হ্যাকিং অ্যাটাক এর মাধ্যমে মানুষ অথবা কোন প্রতিষ্ঠান ক্ষতিসাধন করছেন। কিন্তু এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা এমন চারজন হ্যাকারস সম্পর্কে জানতে পারবেন যারা সারাবিশ্ব কাঁপিয়ে দিয়েছিল হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে৷
১.জনাথন জেমস :
জনাথন জেমস একজন বিস্ময়কর হ্যাকার। মাত্র ১৫ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের ডাটাবেজ হ্যাক করে ফেলেছিল এই বিস্ময়কর হ্যাকার । যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ডেটাবেজের এক মাথা থেকে আরেক মাথা ওলোট পালট করে ফেলেছিল জনাথন জেমস। শুধু যুক্তরাষ্ট্রের ডাটাবেজ নয় হ্যাক করে ফেলেছিল নাসার ডাটাবেজ এবং অফিশিয়াল ওয়েবসাইট । বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ করল নাসা অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে। এবং সে কারণে নাসার কর্মচারীরা বেশ কয়েকদিন তাদের কার্যকলাপ বন্ধ রেখেছিল। নাসা তাদের ওয়েবসাইট এবং ডাটাবেজ রিকভারি করার জন্য খরচ করেছিল ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। ২০০৭ সালে এক গোয়েন্দা দলের হাতে ধরা পড়ে জনাথন জেমস। ২০০৮ সালে হঠাৎ করে তাকে জেল থেকে মুক্ত করে দেওয়া হয়, তবে কিছুদিনের মধ্যেই আকস্মিকভাবে মৃত্যু ঘটে তার। ধারণা করা হয় যে জেলের ভেতরে তাকে এক ধরনের বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল যার ফলে মৃত্যু ঘটেছিল তার ।
২.কেবিন পৌলসেন :
কেবিন পৌলসেন আরেকজন বিস্ময়কর হ্যাকার। তবে বিশ্ববাসীর সামনে অন্যরকমভাবে উপস্থিত হয়েছিল তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের এই হ্যাকার একটি রেডিও কম্পিটিশনে যোগদান করেছিল । বিজয়ী হওয়ার জন্য সেখানকার টেলিফোন সংযোগ গুলিকে হ্যাক করে কল ডাইভার্ট করে রেখেছিল। সবাই হতবাক হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আসলে কিছুই করার ছিলনা। একটিমাত্র সঠিক উত্তর দিয়ে কেবিন পৌলসেন পুরস্কারটি হাতিয়ে নিয়েছিল । পরক্ষণে তা রেডিও চ্যানেল এর কর্তৃপক্ষদের নজরে আসে । গ্রেফতার করা হয় কেবিন পৌলসেন কে। 53 মাসের মতো জেল খেটে ছিল কেবিন পৌলসেন। তবে সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে সেই বিস্ময়কর হ্যাকার এখন বড় পুলিশ কর্মকর্তা৷
৩.গ্যারি :
গ্যারি ওরফে জিনি স্লো আরেকজন ভয়ঙ্কর এবং বিস্ময়কর হ্যাকার। তিনি একাধারে যুক্তরাষ্ট্র মিলিটারি এবং নাসার ডাটাবেজ হ্যাক করেছিল। এবং সেখান থেকে সকল ফাইল ও ভিডিও ডেলেট করে ফেলেছিল । তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল আপনি কি অর্থ উপার্জনের জন্য এমনটি করেছিলেন?
তিনি প্রতি উত্তরে বলেছিলেন,” না, আসলে অর্থ উপার্জন করতে নয় বরং আমি দেখতে চেয়েছিলাম আসলেই এলিয়েন বা ইউ এফ ও বলে কিছু রয়েছে কি না? সেই জন্যই আমি নাসার ওয়েবসাইট হ্যাক করেছিলাম”। তাকে প্রশ্ন করা হয় আপনি কি এ জাতীয় কিছু দেখতে পেয়েছিলেন?
তিনি উত্তরে বললেন,” হ্যাঁ আমি নাসার ডাটাবেজে যেসকল ফুটেজ ছিল সেখান থেকে এলিয়েন এবং ইউ এফ ও এর অস্তিত্বের প্রমাণ পেয়েছি৷
৪.কেবিন মিটনিক :
হ্যাকারদের রাজা বলা হয় কেবিন মিটনিককে। আইডিএম সহ আরও বড় বড় প্রতিষ্ঠান এর ডাটাবেজ হ্যাক করে ফেলেছিল কেবিন মিটনিক।
ছোটবেলা থেকেই হ্যাকিং সম্পর্কে তার মনের বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন জাগতে থাকে। এবং এক পর্যায়ে একটি হ্যাকিং কোর্স নি ফ্রী বাসের টিকিট কেটেছিলেন । এবং সেই থেকে হ্যাকিং কে ঘিরে তার যতসব ভাবনা তার মনের ভেতর৷ সবসময় কল্পনা করত আর কি কি হ্যাক করা যেতে পারে?
আমেরিকান মিলিটারি ডাটাবেজ হ্যাক করার চেষ্টা করেছিলেন তিনি৷ কিন্তু অক্ষম হন৷ পরক্ষণেই আইবিএমের ডাটাবেজ হ্যাক করে ফেলেন তিনি এটা ছিল ১৯৯৩ সালের ঘটনা৷
আইবিএম কোন মতে তাদের তথ্যগুলো রিকভারি করে । হ্যাকার কে ধরার চেষ্টা করে । কেবিন তখন পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন৷ এবং সে কারণে পুলিশ তাকে ধরতে অক্ষম হয়। কিন্তু ১৯৯৫ সালে আকস্মিক ঘটনার মাধ্যমে কেবিন পুলিশের হাতে ধরা দেয় । হ্যাকিংয়ের দায়ে তাকে পাঁচ বছর জেল খাটতে হয়েছিল। অথচ সেই কেবিনে এখন বিখ্যাত সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ।