মনে হবে নাটক কিংবা সিনেমার গল্প। বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিকাশের ১৬২৪৭ নাম্বার থেকে কল ও এসএমএস দিয়ে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিচ্ছে হ্যাকাররা। ফরিদপুরের এক গ্রাম থেকে চলছে সব কাজ। আইফোন ব্যবহার করে এ কাজটি করছে তারা।
প্রথম ধাপের প্রতারক বিকাশের দোকানে গিয়ে নাম্বার লেখার খাতার ছবি কৌশলে তুলে নেয়। হোয়াটসঅ্যাপে সে ছবি পাঠিয়ে দেয়া হয় ফরিদপুরের মধুখালীর ডোমাইন গ্রামে থাকা হ্যাকারদের কাছে। ছবির নম্বর দেখে, হ্যাকারদের একজন বিকাশ এজেন্ট সেজে গ্রাহককে কল দেয়।
এজেন্ট সেজে গ্রাহককে কল করা চক্রের একজন ফোন করে জানান, ‘হ্যালো, বিকাশের দোকানদার বলছিলাম। টাকা দিছিলাম সকালের দিকে পাইছিলেন? অভিযোগ পেয়েছি তো তাই কল দিলাম। অফিস থেকে কল দিলে কথা বইলেন।’
দ্বিতীয় ধাপের প্রতারক করেন মূল কাজ। বিশেষ একটি অ্যাপের মাধ্যমে, বিকাশ কল সেন্টারের ১৬২৪৭ নম্বরের আগে প্লাস কিংবা শূন্য যুক্ত করে গ্রাহককে কল দেয় হ্যাকাররা। বিকাশ নম্বর থেকে গ্রাহকের কাছে ওটিপি বা ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড পাঠিয়ে মূল পাসওয়ার্ড জানতে চায়। বলে দিলেই অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় হ্যাকারদের হাতে। কৌশল খাটিয়ে বের করে নেয়া পিন নাম্বারও।
প্রতারণার শেষ ধাপ বলা হয়, ‘নাম বলে বলা হয় কাস্টমার অফিস থেকে বলছি। আপনার কাছে একটা ওটিপি নাম্বার গেছে সেটা ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে বলতে হবে।’
এরপর সব টাকা ক্যাশ আউট করে নেয় হ্যাকারদের সহযোগীরা। বিকাশ প্রতারকদের নতুন এ ফাঁদে পা দিচ্ছেন বহু মানুষ। তারা বলছেন, হুবহু বিকাশ নম্বর থেকে কল ও মেসেজ আসায় অবিশ্বাসের কোন সুযোগ ছিল না।
একজন বলেন, ‘হুবহু বিকাশের নাম্বার থেকে ফোন, একই ফোন্ডারে যদি ম্যাসেজ আসে তাহলে কিভাবে বুঝবো কি আসল আর কে প্রতারক?’
কিভাবে এমন অভিনব কৌশল বের করলো হ্যাকাররা সময় সংবাদের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয় ডিবি এডিসি জোনায়েদ আলমের কাছে।
তিনি বলেন, ‘তারা আইফোনটা ইউজ করছে বর্তমানে। তারা ফোন করে গ্রাহক থেকে ওটিপি নাম্বারটা জেনেই মূলত অ্যাপসে বাকিটা করে নেয়।’
ডিবি’র ডিসি মশিউর রহমান পুলিশ বলছে, এ ধরনের প্রতারণায় দায় এড়াতে পারে না বিকাশ কর্তৃপক্ষ। গ্রাহকদের লেনদেনের সময় ফিঙ্গার প্রিন্ট ও দোকানে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর তাগিদ দেন তিনি।
এ নিয়ে বিকাশ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।