সম্প্রতি, ‘হুয়াওয়ে কানেক্ট ২০২০’ সম্মেলনে এন্টারপ্রাইজ মার্কেটের জন্য নিজেদের অটোনোমাস ড্রাইভিং নেটওয়ার্ক (এডিএন) সল্যুশন উন্মোচন করেছে হুয়াওয়ে। প্রয়োজনীয় এ সমাধানটি নেটওয়ার্কে ইন্টেলিজেন্স নিয়ে আসার পাশাপাশি নেটওয়ার্ক এলিমেন্ট (এনই), নেটওয়ার্ক এবং ক্লাউড লেয়ারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সমন্বয় ঘটাবে। এ সমাধানটি এন্টারপ্রাইজ নেটওয়ার্ককে অটোনোমাস ড্রাইভিং -এর দিকে চালিত করবে এবং খাতজুড়ে হাইপার-অটোমেটেড ডিজিটাল সেবা এবং এর কার্যক্রমের ক্ষমতায়ন ঘটাবে।
ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) ও ফাইভজি’র মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মের মোবাইল ইন্টারনেট প্রযুক্তিগুলোর চলমান বিকাশের ফলে মানবজাতি দ্রুত একটি ইন্টেলিজেন্ট ও কানেক্টেড বিশ্বের দিকে এগিয়ে চলেছে। এন্টারপ্রাইজ নেটওয়ার্ক অফিস থেকে উৎপাদনে বিস্তৃত হবে এবং সিঙ্গেল ডোমেইন ম্যানেজমেন্ট থেকে নেটওয়ার্ক-ওয়াইড সমন্বয়ে রূপান্তর ঘটবে।
হুয়াওয়ের গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রি ভিশন (জিআইভি) ২০২৫ অনুযায়ী, বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর ৯৭ শতাংশই ২০২৫ সালের মধ্যে এআই ব্যবহার করবে। এন্টারপ্রাইজ নেটওয়ার্ক এআই সক্ষমতাকে একীভূত করে ম্যানুয়াল ওঅ্যান্ডএম দক্ষতার সীমাবদ্ধতাগুলো অতিক্রম করতে পারবে, হাই অটোমেশন এবং ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে অটোনোমাস ড্রাইভিং সক্ষমতা অর্জন করতে পারে। একবার তৈরি হয়ে গেলে, এডিএন প্রতিষ্ঠানগুলোর ডিজিটাল সেবার উদ্ভাবন এবং কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির পথকে সুগম করবে।
এ নিয়ে হুয়াওয়ের জেনারেল ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট এর প্রেসিডেন্ট লু হংজু বলেন, ‘হুয়াওয়ে কানেক্টিভিটি খাতে এআইকে পুরোপুরিভাবে চালু এবং এডিএন তৈরির পরিকল্পনা করেছে, যার ফলে নেটওয়ার্ক হিউম্যান-মেশিনের সমন্বয়ে সাধারণ অটোমেশন থেকে হাইপার-অটোমেশনে বিকশিত হবে। আমাদের প্রত্যাশা তিন বছরের মধ্যে লেভেল-৩ কন্ডিশনাল অটোনোমাস নেটওয়ার্ক, পাঁচ বছরের মধ্যে লেভেল-৪ হাই অটোনোমাস নেটওয়ার্ক এবং সাত থেকে দশ বছরে মধ্যে লেভেল-৫ সম্পূর্ণ অটোনোমাস নেটওয়ার্ক অর্জন করা।’
তিন স্তরের এআই সক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে একীভূতকরণের মাধ্যমে হুয়াওয়ে এডিএন’র সেলফ অর্গানাইজিং, সেলফ-হিলিং এবং সেলফ-অপ্টিমাইজিং অটোনোমাস নেটওয়ার্ক তৈরির লক্ষ্য রয়েছে যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিবর্তিত হতে পারবে। প্রয়োজনীয় এ নেটওয়ার্ক এন্টারপ্রাইজের ডিজিটাল সেবার উদ্ভাবনকে ত্বরান্বিত করবে, গ্রাহকসেবার উন্নত অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করবে এবং এন্টারপ্রাইজ নেটওয়ার্কগুলোর ইন্টেলিজেন্ট ওঅ্যান্ডএম বাস্তবায়ন করবে।
এনই+এআই: ডিজিটাল ইন্টেলিজেন্ট এনই তৈরিতে বিদ্যমান এনই’তে বুদ্ধিমত্তা সমন্বিত করা হয়েছে। এভাবেই, প্রতিটি এনই সহ সম্পূর্ণ নেটওয়ার্কে ইনসাইট, প্রসেসিং এবং এক্সিকিউশন আরও সুনির্দিষ্ট হয়েছে।
নেটওয়ার্ক + এআই: নেটওয়ার্ক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এনএমএস) পুনঃগঠনে এআই ব্যবহার করা হয়েছে। একটি ইন্টেলিজেন্ট ম্যানেজমেন্ট ও কন্ট্রোল সিস্টেমের মাধ্যমে নেটওয়ার্কের ডিজিটাল টুইন তৈরি করে আরও কার্যকরী উপায়ে নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এক্ষেত্রে, মূল বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে অটোমেটিক ডেপ্লয়মেন্ট, প্রি-ইভেন্ট সিমুলেশন, পোস্ট-ইভেন্ট ভেরিফিকেশন, প্রো অ্যাকটিভ অপটিমাইজেশন এবং প্রতিরোধ ও অনুমান।
ক্লাউড+এআই: ক্লাউডে নেটওয়ার্ক এআই ট্রেনিং এবং মডেল সেবা রাখা হয়েছে। অটোনোমাস ড্রাইভিং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ডিভাইস এবং নেটওয়ার্কে সফ্টওয়্যার সিস্টেম এবং এআই ধারাবাহিকভাবে আপগ্রেড করা হয়েছে। ফলে, আমরা যতো বেশি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করবো এটি ততো ইন্টেলিজেন্ট হয়ে উঠবে।
হুয়াওয়ে এডিএন হলো একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাধান যেখানে রয়েছে ইন্টেলিজেন্ট ক্যাম্পাস, আইপি ডব্লিউএএন, অপটিক্যাল ট্রান্সপোর্ট এবং ডেটা সেন্টার নেটওয়ার্ক ডিভাইস নিয়ে গঠিত; আইমাস্টার এনসিই এবং আইমাস্টার এমএই (ইন্টেলিজেন্ট নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনা এবং নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি যা ব্যবস্থাপনা, নিয়ন্ত্রণ এবং বিশ্লেষণকে সমন্বিত করে); এবং দুটি প্রধান ক্লাউড সেবা বিষয়ক পণ্য (নেটওয়ার্ক এআই সেবা এবং ক্লাউড-পরিচালিত নেটওয়ার্ক সেবা)। হুয়াওয়ের এ সল্যুশনটি সামগ্রিকভাবে ফুল-সিরিজ সিস্টেম আর্কিটেকচার, ওঅ্যান্ডএম মডেল এবং ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে বিবিধ উদ্ভাবন নিয়ে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত হয়েছে।
পরের দশকটি হবে ইন্টেলিজেন্সের জন্য সোনালী অধ্যায়। হুয়াওয়ে এডিএন সকল আকারের প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাকে স্বয়ংক্রিয় উপায়ে ও ঝামেলাহীনভাবে নতুন এ যুগে নিয়ে আসবে এবং ইন্টেলিজেন্ট কানেক্টিভিটির মাধ্যমে দূরত্ব কমাবে। ইন্টেলিজেন্ট কানেক্টিভিটির ক্ষমতায়নের মাধ্যমে হুয়াওয়ে এ খাত জুড়ে সকল অংশীদারদের সাথে নিয়ে নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে নিরলস কাজ করে যাবে।