মার্চেন্ট বে’র আয়োজনে সফল ভাবে শেষ হল পোশাকখাতের প্রথম ডিজিটাল ট্রেড উইক। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের জন্য এমন একটি উদ্যোগ এই প্রথম। প্রথম এই উদ্যোগে অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে অসাধারণ সাড়া পাওয়া গেছে।
ডিজিটাল ট্রেড উইকের সাতদিনে ১৫ হাজার ইন্ডাস্ট্রি পার্টনার, ৪০০’র বেশি সাপ্লায়ার মার্চেন্ট বে’র সঙ্গে ব্যবসায়িক সুযোগ সম্পর্কে আলোচনা করেছে এবং ডিজিটাল ট্রেড উইকের সময়েই ১৫০ নতুন সাপ্লায়ার মার্চেন্ট বে’তে রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন করেছে। এ নিয়ে মার্চেন্ট বে প্ল্যাটফর্মে ১২০০ সাপ্লায়ারের রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন হলো।
পুরো ট্রেড উইক জুড়ে ৪০ দেশ থেকে ৩০০ বায়ারের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়েছে। বায়াররা বাংলাদেশের সাপ্লায়ারদের প্রোডাক্ট, প্রাইসিং ও অন্যান্য বিষয়ে সম্পর্কে জেনেছে। এ সময়ে ৭০টি প্রাইভেট সেশানের মাধ্যমে মার্চেন্ট বে বায়ারদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে।
ট্রেড উইক জুড়ে পাঁচটি পাব্লিক সেশনের আয়োজন করা হয় যেখানে বাংলাদেশ ছাড়াও ৭ দেশের বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ অংশ নেন।
প্রথম দিনে ডিজিটাল ট্রেড ইন গ্লোবাল পার্সপেক্টিভ শিরোনামের সেশনে ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশনের মিনা হাসান ও পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের ড. মাশরুর রিয়াজ ডিজিটাল ট্রেডের বিভিন্ন নীতিগত দিক নিয়ে আলোচনা করেন। জেট্রোর বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইউজি অ্যান্ডো আলোচনা করেন কীভাবে জাপান ডিজিটাল ট্রেডকে ফ্যাসিলিটেট করছে এবং কীভাবে তারা ২০২৭ সালের মধ্যে ৫ ট্রিলিয়ন ডলার ডিজিটাল ট্রেডের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। বিজিএমইএ’র সভাপতি ড. রুবানা হক আলোচনা করেন বাংলাদেশের বাস্তবতায় কীভাবে আমরা ডিজিটাল ট্রেডের সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে পারি। নিউ ভিশন সলিউশনস লিমিটেডের তারেক রাফি ভুঁইঞা আলোচনা করেন ডিজিটাল ট্রেডের সম্ভাবনা ও আমাদের করণীয় বিষয়ে।
তৃতীয় দিনে জেসিআই বাংলাদেশের আয়োজনে লিডারশিপ কনক্লেভের তিনটি ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়।
প্রথম ওয়েবিনারে কিভাবে উদ্যোক্তারা ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের মাধ্যমে নিজেদের বদলে নিচ্ছেন সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এতে উঠে আসে দক্ষিণ এশিয়া ও বাংলাদেশের ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জের বিষয়গুলো। এই ওয়েবিনারেও বাংলাদেশ ও বিশ্বের স্বনামধন্য উদ্যোক্তারা অংশ নেন।
দ্বিতীয় ওয়েবিনারে করোনাকালের প্রতিকূল অবস্থায় এগিয়ে থাকা বিষয়ে উদ্যোক্তারা মত প্রকাশ করেন। এই ওয়েবিনারে উঠে আসে এমন ক্রাইসিস সময়ে কীভাবে ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে হয় এবং কীভাবে সফল হতে হয়।
তৃতীয় দিনের শেষ ওয়েবিনারে স্টার্ট-আপের ফান্ডিং নিয়ে আলোচনা করেন তিনজন ইনভেস্টর। বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য এই সেশনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্যানেলিস্টরা জানান যে, ব্যবসায় বিনিয়োগ পেতে হলে ব্যবসার সূচকগুলো পরিষ্কারভাবে জানতে হবে, অ্যাকাউন্টস ও ডকুমেন্টেশন পরিষ্কার থাকতে হবে এবং কেন ফান্ডিং দরকার তা সম্পর্কে পরিষ্কার তথ্য ও উপাত্ত থাকতে হবে।
পঞ্চম দিনে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের তরুণ উদ্যোক্তারা উদ্ভাবন সম্পর্কে মত প্রকাশ করেন। তারা মনে করেন পারষ্পরিক সহযোগীতার মাধ্যমে কম খরচে পরিবেশবান্ধব ও এফিশিয়েন্সি ফ্রেন্ডলি ইনোভেশনকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ইন্ডাস্ট্রিতে জনপ্রিয় করা সম্ভব।
মার্চেন্ট বে’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবরার হোসেন সায়েম এই আয়োজন নিয়ে বলেন, “বাংলাদেশের তৈরি পোশাকখাত ও এ সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরা তাগিদ থেকে প্রথমবারের মত এমন আয়োজন করে মার্চেন্ট বে। ইন্ডাস্ট্রি পার্টনার্স, সাংবাদিক, অ্যাসোসিয়েশান ও নীতিনির্ধারকরা আমাদের প্রতি যে সমর্থন দেখিয়েছেন তার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। আমরা আশা করি ভবিষ্যতেও এমন সমর্থন অব্যাহত থাকবে। আপনাদের দোয়া ও সমর্থন নিয়ে আমরা আমাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে পারবো এবং প্রতি বছর ডিজিটাল ট্রেড উইক আয়োজন করতে পারবো।”