আশিক আহমেদ বাংলাদেশি বংশদ্ভুত অস্ট্রেলিয়ান । ডেপুটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা । তার মেধা এবং পরিশ্রমের ফলে ডেপুটি আজ মিলিয়ন ডলার মূল্যর একটি স্টার্টআপ ইন্ডাস্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি অস্ট্রেলিয়াতে পাড়ি জমান এবং মেলবোর্নে একটি ফাস্টফুড কোম্পানিতে বার্গার তৈরির কাজ শুরু করেন । এখানে তিনি ঘন্টা ভিত্তিক পারিশ্রমিকের কাজ করতেন। ঘন্টা ভিত্তিক কাজে শ্রমিকদের কাজের হিসাব রাখা এবং তা পর্যালোচনা কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল তা তিনি এখানে কাজ করে অনুধাবন করতে পেরেছিলেন। তার এই অভিজ্ঞতার আলোকেই একটি সফটওয়্যার বানানোর আইডিয়া মাথায় আসে যাতে করে যেকোন বিষয়ের ডাটা সংগ্রহ করা সহজ হয়।
ডেপুটিতে আসার গল্প:
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেড়িয়ে আসার সময় তার এক বন্ধুর মাধ্যমে বর্তমানে তার সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্টীভ শেলের সাথে পরিচয় তার হয়। তিনি একটি বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং এর ব্যবসা পরিচালনা করতেন । কাজটি অত্যন্ত কঠিন ছিল কারন তাকে ২৪ ঘন্টা এখানে সময় দিতে হতো। বিমানের কাজ মানে তাকে অনেক সতর্কতার সাথে কাজটি পরিচালনা করতে হতো কারন এখানে অনেক মানুষের জীবন জড়িয়ে। কোন রকম ত্রুটির কারনে বড় ধরনের এক্সিডেন্ট হয়ে যেতে পারে। সেখানে একটি শ্রমশক্তি চালানো কষ্ট দায়ক ছিল। তার ব্যবসা ছিল সিডনি, মেলবোর্ন, নিউক্যাসল এবং কেয়ার্নস জুড়ে। ১৯৯২ সালে শুরু করা তার ডেপুটি ১০ বছরে মাত্র ২০০ জন শ্রমিকে রূপান্তরিত করতে পেরেছিল। সেখান থেকেই তাকে সাহায্য করার লক্ষ্য ডেপুটির সাথে কাজ করার ইচ্ছে পোষণ করেন আশিক আহমেদ এবং এখান থেকেই তার কাজের সূত্রপাত হয়। যেহেতু গণিত এবং বিজ্ঞানের প্রতি তার একটা দুর্বলতা ছিল, তাই কিভাবে একটি সফটওয়্যার তৈরি করার মাধ্যমে শ্রমিকদের কাজের হিসাব রাখা যায় তা নিয়ে তিনি কাজ শুরু করলেন।
ডেপুটি (www.deputy.com):
ডেপুটী একটি স্টার্টআপ কোম্পানি । একটি শিডিউলং সফটওয়্যার কোম্পানি। আশিক আহমেদ ২০০৩ সালে ডেপুটি জয়েন করার পরে এই প্লাটফর্মের উন্নয়ন হয়। তিনি কর্মীদের সময়সূচি এবং তাদের কর্মক্ষেত্রে উপস্থিতি পরিচালনা স্বয়ংক্রিয়করণের জন্য একটি সফটওয়্যার তৈরি করেন। যার ফলে ডাটা এনালাইসিস অনেক সহজ হয়ে যায় এবং এর ফলে ২০০২ সালের পরে মাত্র এক বছরে এই কোম্পানিরে কর্মী সংখ্যা দাঁড়ায় ২০০ থেকে ১৪০০ । বর্তমানে ডেপুটি ৭০ এর বেশি সংখ্যক দেশে হাজারো মানুষকে তাদের শ্রমশক্তি পরিচালনায় সময় এবং অর্থ সাশ্রয়ে সহায়তা করছে যাতে তারা তাদের কাছের প্রতি ভালোভাবে ফোকাস করতে পারেন। এতে করে যেমনি তাদের সময় বেঁচে যাচ্ছে তেমনি আর্থিক দিক থেকেও তারা লাভবান হচ্ছেন।
আশিক আহমেদ একটি সমস্যাকে সমাধানের লক্ষ্য কাজ করে যান এবং এর ফলে ডেপুটি মিলিনিয়ার কোম্পানিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। টাকা উপার্জনকে তিনি কখনও বড় করে দেখেননি তিনি । তিনি বিশ্বাস করতেন অর্থ হলো কর্মফল। তার এই চিন্তা হাজার মানুষের সময়কে সাশ্রয় করে তাদেরকে নিজস্ব কাজ এবং ব্যবসা পরিচালনায় মনোনিবেশ করতে সাহায্য করেছেন । নিজের অদ্যম সাহস এবং কাজের প্রতি নিষ্ঠা তাকে কম বয়সে একজন সফল প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে সবার মাঝে পরিচিতি লাভ করতে সাহায্য করেছে । আশিক আহমেদের ব্যবসায়িক বিভিন্ন আইডিয়া এবং কাস্টমারদের হেন্ডেলিং সম্পর্কে তার জ্ঞান অন্যদেরকেও অনেক সাহায্য করছে নিজেদের ব্যবসা পরিচালনা করতে । তরুণ সমাজের একজন সফল ব্যক্তিত্ব হিসেবে তার কাজের প্রতি নিষ্ঠা এবং শ্রম হাজারো তরুণদের কাজের প্রতি নিষ্ঠাবান হওয়ার অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। একজন বাঙালি হিসেবে তাকে নিয়ে আমরা গর্বিত।
সূত্র: ইন্টারনেট