বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর দৈনিক লেনদেন ২০০ কোটি টাকা অতিক্রম করেছে। গত বৃহস্পতিবার এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘নগদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক এ ঘোষণা দেন।
সরকারের পক্ষ থেকে আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে দৈনিক ২০০ কোটি টাকা লেনদেনের মাইলফলক স্পর্শ করার কথা বলা হলেও নির্ধারিত সময়ের আগেই তা অতিক্রম করে দেশের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল এই ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল অপারেটরটি। এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে দৈনিক ১০০ কোটি টাকা লেনদেনের মাইলফলক অতিক্রম করে ‘নগদ’।
‘নগদ’ এর দ্রুত গতির অগ্রযাত্রাকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং গ্রাহক বান্ধব সেবা চালু করার সফল বলে মনে করেন দেশের দ্বিতীয় গ্রাহক সেরা ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক। তিনি বলেন, “প্রচলিত সব পরিষেবা যাতে ‘নগদ’-এ পাওয়া যায় তার জন্য আমরা ‘সব হবে নগদ-এ’ লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। আর সে জন্য প্রতিদিনই আমরা অসাধ্য সাধনের আশায় কাজ করছি। মোবাইল ফোন থেকে *১৬৭# নম্বরে ডায়াল অ্যাকাউন্ট খোলা পৃথিবীর আর কোথাও সম্ভব না হলেও ‘নগদ’ সেটি সম্ভব করেছে। অথচ একসময় একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে কত কিছুই না করতে হতো। উদ্ভাবনী প্রচেষ্টার এই গতিধারায় প্রতিষ্ঠার মাত্র দেড় বছরের মধ্যে ‘নগদ’ ২০০ কোটির মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেছে। এটি আমাদের জন্য অনেক আনন্দের।”
‘নগদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছিলেন, ২০২১ সালের জানুয়ারির আগে ২০০ কোটির মাইলফলক স্পর্শ করার কথা, যেটি আমরা আগেই করে ফেলেছি। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাই, আমাদের জনগণের সেবা করার সুযোগ দেওয়ার জন্য। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টাকেও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।’
আনুষ্ঠানিক পথচলা শুরুর পর থেকে ‘নগদ’ দেশের ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস খাতসহ আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। যাত্রা শুরুর মাত্র দুই বছরেরও কম সময়ে ১২ হাজার মার্চেন্টকে ‘নগদ’ নেটওয়ার্ক যুক্ত হয়েছে, আছে প্রায় সাড়ে ৩০০ ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে লেনদেনের সুবিধা। ফলে কেনাকাটার ডিজিটাল লেনদেনে ‘নগদ’-ই এখন সেরা পছন্দ।
বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, টেলিফোনসহ সব রকম পরিষেবার বিল প্রদান কোনো রকম বাড়তি খরচ ছাড়া শুধুমাত্র ‘নগদ’-এ করা যাচ্ছে। ‘নগদ’ থেকে প্রায় ২০০-এরও বেশি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কোম্পানির বিল প্রদান এবং মোবাইল ফোন অপারেটরে রিচার্জ এবং বিভিন্ন প্যাকেজ কেনা এখন নিমিষের ব্যাপার।
বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন রকমের আর্থিক কর্মকাণ্ড বিশেষ করে প্রাথমিকের উপবৃত্তির টাকা ‘নগদ’-এর মাধ্যমে বিতরণ, সরকারি বিভিন্ন অনুদান ও ভাতার টাকাও যাবে ‘নগদ’-এর মাধ্যমে। এর ফলে উপকারভোগীরা সুফল পাবেন। কারণ তাদের টাকায় অন্যকেউ ভাগ বসাতে পারবে না। এ ছাড়া টাকা তুলতে বাড়তি ঝক্কি পোহাতে হচ্ছে না।
টানা লকডাউনের কারণে কাজ হারানো ৫০ লাখ পরিবারকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরিবার আর্থিক সহায়তা দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যার মধ্যে ১৭ লাখই বিতরণ করা হয় ‘নগদ’ এর মাধ্যমে। বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নিসা মুজিবের ৯০তম জন্মদিনে দুস্থ মহিলাদের মাঝে ভাতা বিতরণেও প্রধানমন্ত্রী বেছে নেন কেবল ‘নগদ’-কে।
অতিমারির সময়ে মানুষ যাতে ঘরে বসেই ভিসা ও মাস্টারকার্ড থেকে ‘নগদ’ ওয়ালেটে টাকা আনতে পারে তার ব্যবস্থা করে ‘নগদ’। করোনার টেস্টের ফি প্রদান প্রক্রিয়া ডিজিটাল করতে আর কোনো অপারেটর এগিয়ে না আসলেও একমাত্র ‘নগদ’ এই সেবাটি চালু করে। ফলে ঘরে বসে করোনা পরীক্ষার ফি প্রদান, কিংবা কোনো বুথে গিয়েও করোনা পরীক্ষার ফি প্রদান হয়ে যায় ঝামেলা মুক্ত। পাশাপাশি দুই লাখের বেশি গার্মেন্টস কর্মীর বেতন-ভাতা ‘নগদ’-এর মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে কোভিডের সময়।