অবৈধ পথে দেশে আসা, ক্লোন বা চুরি করা হ্যান্ডসেটে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধে এনইআইআর ১ জুলাইয়ের মধ্যে চালু করার আশা করছে বিটিআরসি।
বৃহস্পতিবার টেলিকম সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, যে হ্যান্ডসেটগুলো গ্রাহকের হাতে আছে তাদেরকে ডিসটার্ব না করে কাজটি করতে চাই। যেগুলো চালু আছে তাদের ইনকর্পোরেট করে নেব, সে সুযোগ দেব। নতুন হ্যান্ডসেট যেগুলো আসবে সেগুলো অবশ্যই নিবন্ধন হয়ে আসতে হবে। গ্রাহকদের কোনো সমস্যায় ফেলতে চাই না আমরা।
বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদুল আলম বলেন, হ্যান্ডসেট বৈধ কিনা তা এখন যাচাই করা যাচ্ছে। মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো ১৬ জানুয়ারি ম্যানুয়ালি জানাবে নতুন কোন হ্যান্ডসেটগুলো তাদের নেটওয়ার্কে আছে। এগুলো ম্যানুয়ালি অননেট চেক করে পরবর্তী সাতদিনের মধ্যে জানানো হবে সেটটি বৈধ কি অবৈধ। বাকিগুলো পুরোদমে ১ জুলাই হতে।
সরকারি কোনো পরিসংখ্যান না থাকলেও ব্যবসায়ীদের হিসাবে, দেশে বর্তমানে প্রায় তিন কোটি অবৈধ হ্যান্ডসেট মানুষের হাতে রয়েছে। নকল মোবাইল সেট বৈধের সুযোগ, অবৈধ আমদানি, চুরি, স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও নকল হ্যান্ডসেট প্রতিরোধ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত, রাজস্ব ক্ষতি ঠেকাতে এই পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়ে আসছে বিটিআরসি। খসড়া নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, অপারেটররা তাদের লাইসেন্স নীতিমালা অনুযায়ী সব মোবাইল হ্যান্ডসেটের ইএমআই নম্বর দিয়ে এই ডেটাবেজ তৈরি করবে।
ইএমআই নম্বর হল ১৫ ডিজিটের একটি স্বতন্ত্র সংখ্যা, যা বৈধ মোবাইল ফোনে থাকে। একটি মোবাইল ফোনের কি-প্যাডে *#06# পরপর চাপলে ওই মোবাইল ফোনের বিশেষ এই শনাক্তকরণ নম্বরটি পর্দায় ভেসে উঠে। অপারেটরদের ইআইআর তৈরির পর তা জাতীয় ইআইআর (এনইআইআর) এ সংযুক্ত হবে। এর ফলে সব অপারেটরদের ইআইআর খুব সহজেই নজরদারি করতে পারবে বিটিআরসি। ইআইআর ও এনইআইআর বাস্তব সময়ে সিঙ্ক্রোনাইজেশন হবে অর্থাৎ ইআইআরে ডেটা সংযুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা এনইআইআরে চলে আসবে।
গ্রাহকের হাতে যেসব নকল বা অবৈধ হ্যান্ডসেট রয়েছে, এই প্রক্রিয়া শুরু করার ছয় মাস পর্যন্ত নির্দিষ্ট সিমে তা চালু রাখার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছিল। অর্থাৎ যে সিমে মোবাইল চালু থাকবে সেই সিমের মাধ্যমেই তা নিবন্ধিত ধরে নেওয়া হবে। ছয় মাস পর কোনো নকল, অবৈধভাবে আমদানি করা বা ক্লোন হ্যান্ডসেটে সিম কাজ করবে না।
মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানিকারকদের সংগঠন বাংলাদশে মোবাইল ফোন ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমপিআইএ) যুগ্ম সম্পাদক মো. মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘দেশে যেগুলো তৈরি হচ্ছে ও আমদানি হচ্ছে তার ইএমইআই ডেটা বিটিআরসিতে জমা দেওয়া হচ্ছে। সবাই এখন ডেটাবেজে আপলোড করছে। এনইআইআর শুরু হলে অবৈধ হ্যান্ডসেট বন্ধ হলে বৈধ ব্যবসায়ীদের জন্য সুযোগ বাড়বে।’
মোবাইল ফোনের বৈধতা যাচাইয়ের পদ্ধতি হল মোবাইল ফোনের ম্যাসেজ অপশনে গিয়ে KYD স্পেস ১৫ ডিজিটের আইএমইআই নম্বর লিখে 16002 নম্বরে পাঠাতে হবে। মোবাইল ফোনের প্যাকেটে প্রিন্টেড স্টিকার থেকে অথবা *#06# ডায়াল করার মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট হ্যান্ডসেটের আইএমইআই জানা যাবে।