ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দ্রুত পরিকল্পনা না নিলে আগামীতে ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়বে পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র্য। তাই মোবাইল ফোন উৎপাদক ও আমদানিকারকদের এখন থেকেই ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার।
রোববার (১০ জানুয়ারি) সকালে বিটিআরসির প্রধান সম্মেলন কক্ষে কমিশনের স্পেকট্রাম বিভাগ কর্তৃক মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদনকারী ও আমদানিকারক প্রতিনিধির সঙ্গে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদনকারী ও আমদানিকারকদের পক্ষ থেকে সংগঠনের সভাপতি রুহুল আলম আল মাহবুব আশাপ্রকাশ করে বলেন, ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিক্রেতা ও উৎপাদনকারীরা সমন্বিত উদ্যোগ নিলে সহজেই এ সমস্যার সমাধান সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, দেশেই চাহিদা মোতাবেক ফোরজি ও ফাইভজি হ্যান্ডসেট উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। তবে স্মার্টফোনের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য দরকার দেশব্যাপী মানসম্পন্ন মোবাইল নেটওয়ার্ক। নেটওয়ার্কের মানোন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বিটিআরসির প্রতি আহ্বান জানান রুহুল আলম আল মাহবুব।
দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখা ও প্রতিযোগিতামুলক বাজারে উৎপাদনকারীদের সাফল্যের প্রশংসা করে আইনগত বাধা থাকলে তা সমাধানের আশ্বাস দেন বিটিআরসির লীগ্যাল এন্ড লাইসেন্সিং বিভাগের কমিশনার আবু সৈয়দ দিলজার হুসেইন।
এসময় বেশ কয়েকটি মোবাইল উৎপাদন কারখানা পরিদর্শনের কথা উল্লেখ করে তাদের গুণগত মান নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং আগামীতে ৫০ ভাগ ফিচার এবং ৫০ ভাগ স্মার্টফোন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কাজ করতে উৎপাদনকারীদের প্রতি আহ্বান জানান কমিশনের স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহীদুল আলম।
বিটিআরসির সিস্টেমস এন্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ বলেন, উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কার্যক্রম দূরদর্শীতার পরিচয় দিয়েছে এবং শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডগুলো আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশেই হ্যান্ডসেট উৎপাদন করছে।
শুধু আমদানি বা সংযোজন শিল্পে মনোযোগী না হয়ে দেশে সেমিকন্ডাক্টরসহ অন্যান্য তথ্যপ্রযুক্তির ডিভাইস তৈরি এবং ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শিগগিরই পদক্ষেপ নেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বিটিআরসির অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব বিভাগের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মো. মেসবাহুজ্জামান। আমদানিকারক ও উৎপাদনকারীদের কোন সমস্যা থাকলে আইনি কাঠামোর মধ্য থেকে সমাধানের আশ্বাস দেন ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র।
সভাপতির বক্তব্যে বিটিআরসির চেয়ারম্যান সময়ের চাহিদা অনুযায়ী দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য পাঠক্রমে ইলেক্ট্রো মেকানিকস্, কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা, ব্লকচেইন, ক্লাউড, আইওটির মতো বিষয় অন্তর্ভুক্তির ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের সঙ্গে সংযুক্ত থেকে কার্যক্রম গ্রহণের জন্য কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদান করেন। আগত প্রতিনিধিরা এ বিষয়ে কমিশন ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থাসমূহকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার মনোভাব ব্যক্ত করেন।