উদ্যোক্তা এবং উদ্ভাবনের হাত ধরে বাংলাদেশের বিস্ময়কর রূপান্তর ঘটতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, আমাদের নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের মেধা ও সৃজনশীলতাকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারলে আগামী দিনের বাংলাদেশ হবে অভাবনীয়। বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য, জীবনধারা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির সাথে তার চিরায়ত মেধা, দক্ষতা ও সৃজনশীলতা যোগ করে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সারা পৃথিবীতে আরেকটি রূপান্তরের দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
বুধবার (১৩ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনোভেশন কেন্দ্রে আয়োজিত উদ্যোক্তা উন্নয়নে উদ্ভাবন শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাসুদ উর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, অধ্যাপক খন্দকার বজলূল হক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা মো. আরিফুজ্জামান বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে ময়মনসিংহ বিভাগের উদ্যোক্তা উন্নয়ন সংক্রান্ত অনুসন্ধানী ও গবেষণা লব্ধ তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর কোন যন্ত্র মেধা-সৃজনশীলতার বিকল্প হতে পারে না। তবে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এর সাথে ডিজিটাল দক্ষতা অর্জন অপরিহার্য। ডিজিটাল যন্ত্র পরিচালনার জন্য দক্ষতার প্রয়োজন। এইক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার হবে না। যন্ত্র চালাতে পারলেই চলবে।
ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত মোস্তাফা জব্বার বলেন, পৃথিবীতে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে বাংলাদেশ অতীতের তিনটি শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্বদানকারী দেশসমূহ থেকে পিছিয়ে নেই।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ পৃথিবীতে একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা পরবর্তী যুদ্ধের ধ্বংসস্তুপের উপর দাঁড়িয়েও প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণের পাশাপাশি বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র স্থাপন টিএন্ডটি বোর্ড গঠন, আইটিইউ ও ইউপিইউ এর সদস্যপদ অর্জনের মাধ্যমে ডিজিটাইজেশনের বীজ বপন করেন। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরসূরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে তা চারাগাছে রূপান্তরিত হয়। ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণার ধারাবাহিকতায় ২০০৯ সাল থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা বাস্তবায়নের পথ বেয়ে গত একযুগে তা বিরাট মহীরূহে রূপান্তর লাভ করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী বৃহত্তর ময়মনসিংহকে একসময় উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় জেলা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ছিল পাট। ময়মনসিংহ ছিল পাট উৎপাদনে সবচেয়ে এগিয়ে। দেশের মিঠা পানির মাছের চাহিদার একটি বড় অংশ বৃহত্তর ময়মনসিংহ থেকে যোগান হয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের বড় সম্পদের নাম মানুষ। প্রযুক্তির সাথে মানুষকে যুক্ত করতে পারলে প্রতিটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা সক্ষম। এ দেশের মানুষ সোনাফলা মাটির সাথে তার মেধা ও সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়েছে দক্ষতার সাথে। তাই এই দেশের সাথে পাল্লা দেবার কেউ নেই।
মন্ত্রী মেধা, সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনকে কাজে লাগিয়ে নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ যুগান্তকারী সাফল্য অর্জন করেছে বলেও উল্লেখ করা হয়।
অনুষ্ঠানে ড. আতিউর রহমান বলেন, বর্তমান সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচির ফলে বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী অবস্থানে জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়েছে। তিনি অন্তর্ভূক্তিমূলক নতুন নতুন উদ্ভাবনের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।