পাসওয়ার্ড ভুলে অ্যাকাউন্টে ঢুকতে পারছি না – এমন পরিস্থিতির মুখে আমরা সবাই পড়েছি। পাসওয়ার্ড মনে করার সুযোগ শেষ হয়ে আসছে, সে অবস্থা আরও ভয়াবহ। তবে, এর চেয়েও বড় ধরনের বিপদে পড়েছেন প্রোগ্রামার স্টেফান টমাস।
নিজের বিটকয়েন হার্ড ড্রাইভের পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন তিনি। শেষ হয়ে আসছে মনে করে পাসওয়ার্ড চেষ্টা করে দেখার সুযোগ। আর দুই বার মাত্র চেষ্টা করে দেখতে পারবেন। না হলে হারিয়ে যাবে ২৪ কোটি ডলার মূল্যের বিটকয়েন।
এ ঘ্টনা নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে উঠে আসার পর ভাইরাল খবরে পরিণত হয়েছে। বিবিসি এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ফেইসবুকের সাবেক নিরাপত্তা প্রধান অ্যালেক্স স্টামোস খুলে দিতে চেয়েছেন ওই হাডড্রাইভ। তবে, এজন্য মোট অর্থের ১০ শতাংশ রাখবেন তিনি।
গত কয়েক মাসে বিটকয়েনের মূল্যমান বেড়েছে। বর্তমানে এক বিটকয়েন ৩৪ হাজার ডলারের সমান। তবে, ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্যমান পরিবর্তনশীল। এটির দাম বাড়বে না কি কমে যাবে, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা ভিন্ন ভিন্ন মত পোষণ করেন।
স্টেফান টমাসের জন্ম জার্মানিতে, কিন্তু তিনি বসবাস করেন যুক্তরাষ্ট্রের স্যান ফান্সিসকোতে। কীভাবে ক্রিটোকারেন্সি কাজ করে, সে সম্পর্কিত এক ভিডিও তৈরি করে পারিশ্রমিক হিসেবে ৭,০০২টি বিটকয়েন পান। পুরো ব্যাপারটিই ঘটেছে প্রায় এক দশক আগে।
ওই সময়টিতে বিটকয়েনের মূল্য ছিল কয়েক ডলার করে। এক হার্ড ড্রাইভে আয়রন কি ডিজিটাল ওয়ালেটে বিটকয়েনগুলো সংরক্ষণ করেন তিনি। এক কাগজের টুকরোয় পাসওয়ার্ড লিখে রেখেছিলেন তিনি যা পরে হারিয়ে গেছে।
দশটি ভুল চেষ্টার পর পাসওয়ার্ড নিজেকে এনক্রিপ্ট করে ফেলবে। ফলে চাইলেও আর ওয়ালেটে প্রবেশ করা সম্ভব হবে না। ঘটনাটি নিয়ে ক্রিপ্টোকারেন্সির উপর খেপেছেন টমাস। তার ভাষ্যে, “পুরো পরিকল্পনাটিই হচ্ছে নিজেই নিজের ব্যাংক হওয়া – এভাবে যদি বলি, আপনি কী আপনার জুতা নিজে বানান? আমরা ব্যাংকের দ্বারস্থ হই কারণ ওই কাজগুলো করতে চাই না যা ব্যাংক করে।”
এরই মধ্যে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি অবজারভেটরি’র অধ্যাপক ও সাবেক ফেইসবুক নিরাপত্তা প্রধান স্টামোস টমাসের উদ্দেশ্যে টুইটে লিখেছেন, “২২ কোটি ডলারের বিটকয়েন আটকে থাকলে আপনি দশ বার পাসওয়ার্ড চেষ্টা করবেন না, সেটিকে পেশাদারদের কাছে নিয়ে যাবেন, এবং ২০টি আয়রন কি কিনে ছয় মাস সময় নিয়ে সাইড চ্যানেল বা আনক্যাপিংয়ের চেষ্টা করবেন। আমি ১০ শতাংশের বিনিময়ে এ কাজ করতে পারবো, কল করুন।”
এরকম বিপাকে টমাসই প্রথম পড়েননি। এর আগেও বহু মানুষ এভাবে বিটকয়েন হারিয়েছেন। বিবিসি’র প্রতিবেদন বলছে, প্রায় ১৪ হাজার কোটি ডলার মূল্যমানের বিটকয়েন হারিয়ে গেছে বা ওয়ালেটে আটকে রয়েছে। প্রতিদিন অন্তত এ ধরনের একাধিক অনুরোধ পান ডিজিটাল কারেন্সি উদ্ধারকারী পেশাদাররা।