ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, মেধা, দক্ষতা, সৃজনশীলতা ও আন্তরিকতার কারণে নারীরা কর্মক্ষেত্রে ভাল করছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী দশ বছরে দেশে ব্যবসা, বাণিজ্য, শিক্ষা, কর্ম এবং প্রযুক্তিতে নারীরা নেতৃত্ব দিবে।ইতিহাস বলে মাতৃতান্ত্রিক সমাজই হলো আমাদের ভিত্তি আমি প্রত্যাশা করি বিশ্বটা আবার মাতৃতান্ত্রিক সমাজেই পৌছাক। কৃষিযুগ পর্যন্ত আমরা সেই যুগেই ছিলাম।মেয়েরা নিজেদের সৃজনশীলতা দিয়ে ভবিষ্যতের ব্যবসা- বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণ নেবেন।
মন্ত্রী গতকাল শনিবার রাতে ঢাকায় ওয়েবিনারে পিআরআই ও বণিক বার্তা আয়োজিত আর্থিক লেনদেনে জেন্ডার অসমতা দূরীকরণে প্রযুক্তির ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বণিক বার্তা সম্পাদক হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে, সেলিমা আহমেদ এমপি, পিআরআই নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর, বিজিএমইএ প্রেসিডেন্ড রুবানা হক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, বিকাশ এর সিইও কামাল কাদির, ব্র্যাকের পরিচালক কেএএম মোর্শেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো: হুমায়ুন কবির, ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরফান আলী প্রমূখ বক্তৃতা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক তানিয়া হক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন বাংলাদেশের রূপান্তরের ক্ষেত্রে মেয়েরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে উল্লেখ করে বলেন, নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু পরিবেশ পেলে নারীরা অর্থনীতিতে আরও বড় ভূমিকা রাখবে ওদেরকে শেকল দিয়ে ঘরে বেধে রাখার দিন শেষ।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীর ক্ষমতায়নে যুগান্তকারী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছেন্। এরই ধারাবাহিকতায় কর্মক্ষেত্রে সুবিধা প্রসারিত হয়েছে যা বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার পাথেয়। নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশ গ্রহণ এই বিষয় গুলো ব্যাপক আলোচনার প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, পঞ্চাশ বছর আগেও নারী শিক্ষার হার ছিলো একেবারেই কম।
আগামী দিনের ব্যবসা বাণিজ্য বড় পুজির কাছে থাকবে না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সৃজনশীলতা ও মেধা নগরকেন্দ্রীক হবে না, পুরো দেশ থেকে আসবে।
তিনি বলেন, মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস আর্থিক লেনদেনে গত একযুগে নারীর অন্তর্ভুক্তিতে অভাবনীয় ভূমিকা রেখেছে।
ব্যাংকসমূহে মেধাসম্পদের মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে দেশে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসার উদ্যোগ নিয়েছে। এই জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ধন্যবাদ। মন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচিকে জাতীয় জীবনের এগিয়ে যাওয়ার এক বিস্ময়কর কর্মসূচি উল্লেখ করে বলেন, কোভিডকালে অচল জীবনযাত্রা সচল রাখার মাধ্যমে বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বের জীবনযাত্রার সাথে কোন অংশেই পিছিয়ে নেই। তিনি মূল প্রবন্ধকার তানিয়া হক এর সাথে একমত হয়ে আর্থিক খাতে বাংলা ভাষা প্রচলনের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, যে কোন বিচারে পুরুষের তুলনায় নারী উদ্যোক্তারা অনেক বেশী সফল ও সৃজনশীল। ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ থেকে ঋণ নেওয়ার পরিবর্তে নারীরা এখনো অনানুষ্ঠানিক খাত থেকে বেশী ঋণ নিচ্ছেন। গত কয়েক দশকে নারী পুরুষের বিদ্যমান বৈষম্য কমে এসেছে বলে তারা উল্লেখ করেন।