২০২১ সালটা আসলো এবং এর প্রথম মাসও শেষের দিকে। ‘শাওমি’ মোবাইল ব্র্যান্ড এ বছরও তাদের বিভিন্ন মডেল বাজার আনার মাধ্যমে মাতিয়ে রেখেছে মোবাইল প্রেমী মানুষগুলোকে। বিশেষ করে ‘শাওমি’ তাদের ‘রেডমি ৯’ সিরিজের মডেলগুলো দিয়ে এবছর শুরুতেই অনেক সাফল্য পাওয়া শুরু করে দিয়েছে। মানে একরকম এগিয়ে রয়েছে বাজারে থাকা বিভিন্ন মোবাইল ব্র্যান্ডের থেকে৷ তো এরকমই নতুন মডেলের একটি ফোন বের করেছে ‘শাওমি’, যেটার নাম হচ্ছে ‘রেডমি ৯ পাওয়ার’। নামটা বেশ শক্তপোক্ত মনে হচ্ছে। তো আজ, কথা হবে ‘শাওমি’র রেডমি সিরিজের এই ফোনটি নিয়ে। যেটি রিলিজ হয়েছে ২০২০ সালের, ২০ ডিসেম্বর তারিখে। ফোনটি বাংলাদেশে আসে এই বছরের, জানুয়ারী মাসের ১৮ তারিখে।
চলুন নতুন এই ফোনটির ব্যাপারে জেনে আসা যাক বিস্তারিতঃ⤵
বডিঃ
ফোনটির বডি ডিমেনশন হচ্ছে ১৬২.৩×৭৭.৩×৯.৬ মি.মি.। ফোনটির মোট ওজন ১৯৮ গ্রাম। ফোনটির ডিসপ্লে হচ্ছে ‘গরিলা গ্লাস ৩’ এর প্রটেকশন দেয়া। তবে, ফোনটির পিছনের বডি এবং ফ্রেমে ব্যাবহার করা হয়েছে প্লাস্টিক। পিছনের সাইডটা গ্লাসের হলে ভালো হতো। থাকছে ডু্য়্যাল সিম ব্যাবহারের সুবিধা, যেখানে ন্যানো সিম ব্যাবহার করা যাবে।
ডিসপ্লেঃ
‘শাওমি’ তাদের এই ফোনটিতে দিয়েছে ৬.৫৩ ইঞ্চির একটি ডিসপ্লে। ডিসপ্লেটির স্ক্রিন থেকে বডির রেশিও ৮৩.৪%। এছাড়াও ডিসপ্লেটি ‘আইপিএস এলসিডি’ যুক্ত। ডিসপ্লেটির রেজুলেশন হচ্ছে ১০৮০×২৩৪০ পিক্সেল (৩৯৫ পিপিআই ডেনসিটি) ।
প্লাটফর্মঃ
ফোনটির প্লাটফর্ম অএস’এ থাকছে ‘এন্ড্রোয়েড ১০’। যেটা ‘এমআইইউআই ১২’ ভার্সন। ফোনটিতে প্রসেসর হিসেবে থাকছে ‘ কোয়ালকম এসএম৬১১৫ স্ন্যাপড্রাগন ৬৬২’ প্রসেসর। যেটা ‘১১ ন্যানোমিটারে’র৷ বাজেট অনুযায়ী ফোনটির প্রসেসর ভালোই ছিলো। ফোনটির সিপিইউ তে থাকছে ‘ অক্ট্যা কোর কেআরওয়াইও ২৬০ সিলভার’ এবং জিপিইউ তে থাকছে ‘ এদ্রেনো ৬১০ ‘।
ক্যামেরাঃ
ব্যাকঃ ‘শাওমি’ তাদের এই ফোনটির পিছনে রয়েছে চারটি ক্যামেরা। যেটা বাজেট সেগমেন্টে এই ফোনটির অন্যতম আকর্ষণীয় একটি দিক। ক্যামেরাগুলো হচ্ছে ৪৮ মেগাপিক্সেলের ওয়াইড, ৮ মেগাপিক্সেলের আল্ট্রাওয়াইড এবং ২ মেগাপিক্সেলের আলাদা আলাদা দুইটি মেক্রো ডেপথ সেন্সর। ক্যামেরাগুলোর ফিচারে থাকছে এলইডি ফ্ল্যাশ, এইচডিআর এবং প্যানোরামা মোড। এই ক্যামেরা দিয়ে ১০৮০’পি@৩০’এফপিএসে’র ভিডিও রেকর্ড করা যাবে।
ফ্রন্টঃ ফোনটির সামনে রয়েছে একটি ওয়াটারড্রপ নচ ক্যামেরা। যেটা ৮ মেগাপিক্সেলের ওয়াইড সেন্সরের। এই ক্যামেরা দিয়েও ১০৮০’পি@৩০’এফপিএসে’র ভিডিও ভালোমতোই রেকর্ড করা যাবে।
মেমোরীঃ
‘শাওমি’ তাদের নতুন এই মডেলটিকে বাজারে ছাড়ে দুইটি ভ্যারিয়্যান্টে। সেগুলো হচ্ছে ৪/৬৪ এবং ৪/১২৮ জিবি। ফোনটিতে আরও রয়েছে একটি ‘মাইক্রো এসডি কার্ড স্লট’। যেটাতে আলাদাভাবে ১২৮ জিবি’র উপরের মেমোরি পর্যন্ত লাগানো যাবে।
নেটওয়ার্কঃ
‘শাওমি’র এই ফোনটির নেটওয়ার্ক স্পিড ৪জি।ফোনটির নেটওয়ার্ক টেকনোলজিতে রয়েছে ‘জিএসএম / এইচএসপিএ / এলটিই’। ২জি ব্যান্ডসে রয়েছে ‘জিএসএম ৮৫০ / ৯০০ / ১৮০০ / ১৯০০- সিম১ & সিম২। ৩জি ব্যান্ডসে রয়েছে ‘এইচএসডিপিএ ৮৫০ / ৯০০ / ২১০০’। অবশেষে ৪জি ব্যান্ডসে রয়েছে ‘১, ৩, ৫, ৮, ৪০ & ৪১’।
সাউন্ডঃ
ফোনটির সাউন্ড কোয়ালিটি ছিলো ভালো রকমের ক্লিয়ার। যেকোনো ধরনের মিউজিক অথবা সাউন্ডট্র্যাক সুন্দরভাবেই শুনতে পাওয়া যাচ্ছিলো ফোনটির স্টেইরো স্পিকারে। থাকছে ৩.৫ মি.মি.’র ইয়ারফোন জ্যাক।
ব্যাটারীঃ
‘শাওমি’ তাদের এই ফোনে ব্যাটারী হিসেবে দিয়েছে ‘৬০০০ এমএইচে’র লিথিয়াম পলিমার ব্যাটারী। যেটা নন রিমুভেবল। এছাড়াও, চার্জার হিসেবে পেয়ে যাচ্ছেন ১৮ ওয়াটের ফাস্ট চার্জার। এই বাজেট সেগমেন্টে এটি অবশ্যই ভালো একটি ব্যাপার।
ফিচারঃ
ফোনটিতে সেন্সর হিসেবে থাকছে ‘ফিঙ্গারপ্রিন্ট’। যেটা দেয়া হয়েছে ফোনটির পাওয়ার বাটনে। আপগ্রেড হিসেবে এই সেন্সরটি সত্যিই অনেক কাজের। সেন্সর হিসেবে আরও রয়েছে ‘অ্যালসেলেরোমিটার, প্রক্সিমিটি এবং কম্পাস’।
যেসব পরিবর্তন রয়েছে এই ফোনেঃ
‘শাওমি’ তাদের এই বাজেট ফোনে এনেছে অনেক রকমের পরিবর্তন। ক্যামেরা, ব্যাটারী এবং ফিচার গুলো অসাধারন ভাবে আপগ্রেড করে এই ফোনটি বাজারে নিয়ে এসেছে ‘শাওমি’। আশা করা যায় সামনে এরকম আরও বেটার কিছু আপগ্রেডেড ফোন নিয়ে বাজারে আসবে ‘শাওমি’।
দামঃ
বর্তমানে বাংলাদেশে এর একটি ভ্যারিয়্যান্ট অ্যাভেইলেবল রয়েছে। সেটার দাম হচ্ছে ৪/৬৪ জিবি – ৳১৫,০০০।