বর্তমানে আমরা পরিচিত আছি বিভিন্ন ধরনের স্মার্টফোন ব্র্যান্ডের সাথে। এদের মধ্যে কিছু স্মার্টফোন আছে খুব কম সময়ের মধ্যেই তারা হয়ে উঠেছে জনপ্রিয়। তাদের মধ্যে অন্যতম একটি স্মার্টফোন ব্র্যান্ডের নাম হচ্ছে ‘ভিভো’। এই স্মার্টফোন ব্র্যান্ডেকে অনেকেই চিনে থাকবে এদের পপ আপ ক্যামেরার স্মার্টফোনগুলোর জন্য। এছাড়াও বিভিন্নভাবে তারা তাদের স্মার্টফোনগুলো আপডেট করে বাজারে লঞ্চ করছে৷
‘ভিভো’ সংস্থাটির পুরো নাম ‘ভিভো কমিউনিকেশন টেকনোলজি কো. লিমিটেড। এটি একটি বি বি কে ইলেকট্রনিকসের প্রযুক্তিক সংস্থা। যেখানে স্মার্টফোন এবং স্মার্টফোন সংক্রান্ত উপাদান সমূহ উৎপাদন করা হয় এবং বাজারজাত করা হয়। ‘ভিভো,’ স্মার্টফোনের উপাদান ছাড়াও সফটওয়্যার এবং অনলাইন সার্ভিস দিয়ে থাকে। বি বি কে ইলেকট্রনিকসের ‘ভিভো’ ব্র্যান্ড ছাড়াও ‘অপো, রিয়েলমি, ওয়ানপ্লাস’ এর মতো স্মার্টফোনের মূল সংস্থা। এই স্মার্টফোন সংস্থার শুরুটা হয়েছিলো আজ থেকে ১২ বছর আগে। ২০০৯ সালে ‘চেন উই ই’ এর হাত ধরে চায়না’তে এর যাত্রার শুরু হয়। এরপর সেখান থেকে আস্তে আস্তে শুরু হয় এর সফলতার যাত্রা। ২০১৪ সালের মধ্যেই এর স্মার্টফোনগুলো ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মায়ানমার, ফিলিপাইন এবং ভিয়েতনামে ছড়িয়ে পরে। ২০১৭ সালে ‘ভিভো’ পাকিস্তান-নেপাল সহ রাশিয়া, শ্রীলঙ্কা, তাইওয়ান, হংকং, মাকাও, লাওস এবং বাংলাদেশে চলে আসে।
২০১৮ সালে ‘আমেরিকা’তেও ‘ভিভো’ তাদের স্মার্টফোনগুলোর মাধ্যমে বাজার মাতিয়ে রেখেছিলো। ২০১৯ সালের প্রথম দিকে ‘ভিভো’ মধ্যপ্রাচ্যে এদের আধিপত্য বিস্তার করেছিলো। ২০১৫ সালে যখন ‘ভিভো’ প্রথম প্রথম বাজার মাতিয়ে রাখে, তখন টপ ১০টি স্মার্টফোন ব্র্যান্ডের মধ্যে থেকে ২.৭ শতাংশ বাজার দখল করেছিলো। এরপর আস্তে আস্তে তারা তাদের ফোন ভিন্ন ভিন্ন ভাবে আপডেট করে নিয়ে আসতে থাকে বাজারে।
২০১৫ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ভারতের জনপ্রিয় প্রিমিয়ার লীগ ক্রিকেট ‘আইপিএল’এ ‘ভিভো’ ব্র্যান্ড স্পন্সর করেছিলো। এরপর আবার ভারতের আরেকটি জনপ্রিয় খেলা ‘প্রো কাবাডি’তেও স্পন্সর হিসেবে থাকে ‘ভিভো’। ২০১৭ সালে ‘ভিভো’ ‘ফিফা’র সাথে চুক্তি করে ২০১৮ ফুটবল বিশ্বকাপেও ‘ভিভো’ অফিসিয়াল ভাবে সেখানে স্পন্সরশিপ করে এবং ২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ পর্যন্ত এই চুক্তি তারা অব্যাহত রাখবে।
২০২০ সালের প্রথম দিকে বিশ্বের ৭ শতাংশ স্মার্টফোন বাজার ছিলো ‘ভিভো’র দখলে এবং মাত্র চার মাসে ২১.৬ মিলিওন ফোন বিক্রি করার রেকর্ডও ছিলো তাদের কাছে। সেই সাথে ২০২০ সালেই ‘ভারতে’র স্মার্টফোন বাজার ১৭ শতাংশ ধরে রেখেছিলো ‘ভিভো’। কিন্তু, সে বছরেরই জুন মাসে একটি সাইবার ক্রাইম ইউনিট ‘ভিভো’র বিপক্ষে কেস করে। কারন, ‘ভিভো’ তাদের ১৩,৫০০ এর মতো স্মার্টফোন একই ‘আইএমইআই’ নাম্বার দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছিলো। এরপরও পিছপা হয়নি তারা। পরে তারা তাদের এই ভুল শুধরে নিয়ে আবারও এগিয়ে যেতে থাকে। বর্তমানে তাদের স্মার্টফোনের চাহিদা গুলো আগের মতো না হলেও, সফলভাবেই স্মার্টফোন বাজারে এগিয়ে যাচ্ছে তারা। আশা করা যায় সামনে হয়তো তাদের কিছু আপডেট ফোনের মাধ্যমে তারা আবারও ফিরে আসবে তাদের পুরোনো রুপে।