চীনভিত্তিক ইন্টারনেট কোম্পানি বাইদু রাজস্ব আয়ে প্রত্যাশা ছাড়িয়েছে। গত বছর চতুর্থ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) ডিজিটাল বিজ্ঞাপন খাত থেকে আয় বৃদ্ধি এবং ক্লাউড সেবা ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় রাজস্ব আয়ে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের পূর্বাভাসকেও অতিক্রম করেছে প্রতিষ্ঠানটি। খবর রয়টার্স।
বাইদুর আর্থিক খতিয়ান অনুযায়ী, অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব আয় ৩ হাজার ২৬ কোটি চাইনিজ ইউয়ানে পৌঁছেছে, যা আগের প্রান্তিকের তুলনায় ৫ শতাংশ বেশি। অথচ বিশ্লেষকদের অনুমান ছিল অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে বাইদুর আয় হবে সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৬ কোটি ইউয়ান।
বিবৃতিতে বাইদু জানায়, তারা চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ) রাজস্ব আয় ২ হাজার ৬০০ কোটি থেকে ২ হাজার ৮৫০ কোটি ইউয়ানে পৌঁছানোর প্রত্যাশা করছে, যা বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি। বিশ্লেষকদের পক্ষ থেকে জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে বাইদুর রাজস্ব আয় ২ হাজার ৫৭৯ কোটি ইউয়ানে পৌঁছানোর পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল।
বিশ্ববাজারে আধিপত্য বিস্তারে ইন্টারনেটভিত্তিক সেবার পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান ইলেকট্রিক যানবাহন বাজারে ব্যবসা জোরদার করেছে বাইদু, যা অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব আয়ে বৈচিত্র্য এনেছে। এছাড়া গত মাসে বাইদুর পক্ষ থেকে অটোমোটিভ কোম্পানি গিলির সঙ্গে মিলে একটি স্মার্ট ইলেকট্রিক ভেহিকল (ইভি) কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করার ঘোষণা দেয়া হয়।
এ বিষয়ে বাইদুর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এবং চেয়ারম্যান রবিন লি বলেন, আমাদের অংশীদারিত্ব একটি বিশ্বাসের ওপর প্রতিষ্ঠিত, যেখানে হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারে সমন্বয়ের মাধ্যমে আমরা অটোনোমাস ড্রাইভিংয়ে সর্বোত্কৃষ্ট উদাহরণ সৃষ্টি করব।
তিনি বলেন, ইলেকট্রিক যানবাহন উৎপাদন বিভাগের জন্য একজন সিইও ও পৃথক ব্যান্ডের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি, আগামী তিন বছরের মধ্যে ইলেকট্রিক যানবাহন বিভাগের আওতায় একটি নতুন মডেলের ইলেকট্রিক গাড়ি উন্মোচন করতে পারব।
কভিড-১৯ মহামারীর ধাক্কা সামলে চীনের অর্থনীতি সচল হতে শুরু করেছে। এ পরিস্থিতিতে বেইজিংভিত্তিক বাইদু নন-কোর ব্যবসা খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। আর এর মাধ্যমে সার্চ সেবা খাতে প্রতিদ্বন্দ্বী আলিবাবা, টেনসেন্ট হোল্ডিংস এবং বাইটডান্সের সঙ্গে প্রতিযোগিতা জোরদারে সক্ষম হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। কারণ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানগুলোও এখন নন-কোর ব্যবসা খাতে উপস্থিতি জোরদার করছে।
চীনভিত্তিক প্রযুক্তি জায়ান্ট টেনসেন্ট ও বাইটডান্সের মতো মার্কিন প্রশাসনের চাপের মুখে রয়েছে বাইদু। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতার একেবারে শেষ পর্যায়ে বাইদুসহ আলিবাবা ও টেনসেন্ট হোল্ডিংসকে কালো তালিকাভুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত এ উদ্যোগ স্থগিত করা হয়েছিল। অবশ্য চীনের বাইরে খুব বেশি উপস্থিতি না থাকায় ওই ঘটনার নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি বাইদুর গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকের রাজস্ব আয়ে।