নিজেদের মোবাইল ফোনের ব্যবসা অন্য কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেয়ার চেয়ে একেবারেই বন্ধ করার কথা ভাবছে এলজি ইলেকট্রনিকস। শিল্পসংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের বরাতে গতকাল এ তথ্য নিশ্চিত করে ডংএ ইলবো। প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, স্মার্টফোন ব্যবসা জার্মানির ফক্সওয়াগন ও ভিয়েতনামের ভাইনগ্রুপের কাছে বিক্রির আলোচনা ভেস্তে গিয়েছে। খবর ব্লুমবার্গ।
গত জানুয়ারিতে এলজি ইলেকট্রনিকসের সিইও কিও বং-সিয়ক জানিয়েছিলেন যে লোকসানি স্মার্টফোন ব্যবসা নিয়ে আলোচনা চলছে।
এলজির অন্য এক শীর্ষ কর্মকর্তা তখন দ্য কোরিয়া হেরাল্ডকে জানান, মোবাইল ডিভাইসে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা তীব্রতর হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের ঠাণ্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় এসেছে। স্মার্টফোন ব্যবসা বিক্রি, সরে আসা, ছোট করে দেয়াসহ সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ বিবেচনা করে দেখছি আমরা।
গতকাল দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষস্থানীয় দৈনিক ডংএ ইলবো জানায়, ইলেকট্রনিকস জায়ান্টটি যে রলেবল বা ঘূর্ণনযোগ্য ফোন আনার কথা ছিল তা নির্মাণ বন্ধ করে দিয়েছে। গত মাসেই ওই ফোনটির নির্মাণকাজ বন্ধ হয়েছে বলে জানা গেছে। চলতি বছরের প্রথমার্ধেই ওই ফোনটি বাজারে আনার পরিকল্পনা করছিল সিউলভিত্তিক প্রযুক্তি জায়ান্টটি।
স্মার্টফোন নির্মাণ বন্ধের এ সিদ্ধান্তের ফলে কর্মীদের ওপর কেমন প্রভাব পড়বে এ নিয়ে এপ্রিলের শুরুতে জানা যেতে পারে বলে মনে করছে ডংএ ইলবো।
চলতি বছরের শুরুতে এলজি জানায়, ২০২০ সালে এলজি ইলেকট্রনিকসের মোট আয় হয়েছে ৬৩ দশমিক ২৬ ট্রিলিয়ন ওন বা ৫ হাজার ৬৪৫ কোটি ডলার, যা ২০১৯ সালের তুলনায় বেড়েছে ৩১ দশমিক ১ শতাংশ। প্রিমিয়াম গৃহস্থালি সামগ্রী এবং ওএলইডি টেলিভিশন বিক্রি বৃদ্ধির জেরে কোম্পানিটি রেকর্ড ৩ দশমিক ২০ ট্রিলিয়ন ওন বা ২৮৫ কোটি ডলারের রেকর্ড মুনাফা করেছে। এছাড়া গাড়ির যন্ত্রাংশ বিক্রিও এতে ভূমিকা রেখেছে।
গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে এলজির বিক্রি হয়েছে ১৮ দশমিক ৭৮ ট্রিলিয়ন ওন বা ১ হাজার ৬৭৬ কোটি ডলার, যা ২০১৯ সালের একই প্রান্তিকের চেয়ে বেড়েছে ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ এবং পূর্বের প্রান্তিকের চেয়ে তা বেড়েছে ১১ শতাংশ। কভিড-১৯ মহামারীর ধাক্কা সত্ত্বেও চতুর্থ প্রান্তিকে এলজির পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৬৫ হাজার ২০ কোটি ওন বা ৫৮ কোটি ১ লাখ ৯০ হাজার ডলার। ২০১৯ সালের চতুর্থ প্রান্তিকের চেয়ে তা বেড়েছে ৫৩৯ শতাংশ।
গত বছর এলজি মোবাইল কমিউনিকেশনসের আয় হয়েছে ৫ দশমিক ২২ ট্রিলিয়ন ওন বা ৪৬৬ কোটি ডলার। চতুর্থ প্রান্তিকে বিক্রি হয়েছে ১ দশমিক ৩৯ ট্রিলিয়ন ওন বা ১২৪ কোটি ডলার। ২০১৯ সালের একই প্রান্তিকের চেয়ে তা ৪ দশমিক ৯ শতাংশ বাড়লেও পূর্বের প্রান্তিকের চেয়ে কমেছে ৯ দশমিক ২ শতাংশ। ফোর জি চিপসেটের স্বল্পতা এবং বিদেশের বাজারে প্রিমিয়াম স্মার্টফোনের বিক্রি কমাতে এ সেগমেন্টে আয় প্রত্যাশামাফিক হয়নি।
ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশন (আইডিসি) বলছে, বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে এখন নেতৃত্বের আসনে স্যামসাং, হুয়াওয়ে, শাওমি, ভিভো ও অ্যাপল। স্মার্টফোনের বাজার দখলে সেগুলোর তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছে এলজি।