বাংলাদেশে কোভিড-১৯ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে এবং টিকা নিতে দেশের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে বাংলাদেশের এটুআই, তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে প্রচারণা চালানোর উদ্যোগ নিয়েছে ফেসবুক। দেশে প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য-সুরক্ষা চর্চা এবং টিকাদান নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করাই এর মূল লক্ষ্য।
এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে ফেসবুক বাংলাদেশে কোভিড–১৯ টিকাদান কার্যক্রমে সহায়তা করার জন্য নানা পদক্ষেপ নেবে। একই সঙ্গে, স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে যাবে। সঠিক ও প্রয়োজনীয় তথ্য মানুষ সহজে যেন পেতে পারে, সেজন্য ফেসবুকে রয়েছে কোভিড-১৯ ইনফরমেশন সেন্টার। যার মাধ্যমে দেশবাসী বাংলা ভাষাতেই সব তথ্য পেতে পারবে। ফেসবুকের কোভিড–১৯ ইনফরমেশন সেন্টারে মাস্ক পরা থেকে শুরু করে কীভাবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধির ভালোভাবে মেনে চলা যায়, তা সম্পূর্ণভাবে পাওয়া যাবে। এছাড়াও ফেসবুকের মাধ্যমে মানুষ www.corona.gov.bd –এ যেতে পারবে খুব সহজেই, যেখানে কোভিড-১৯ বিষয়ে সরকারের সর্বশেষ নির্দেশাবলী পাওয়া যাবে।
নিউজফিড নোটিফিকেশনের মাধ্যমে ফেসবুক বাংলাদেশিদের আরও সহজে www.surokkha.gov.bd–এ গিয়ে টিকা নেবার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে সাহায্য করবে। এছাড়াও, কোভিড–১৯ ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নানা ভুল তথ্য চিহ্নিত করতে এবং এর প্রচার ঠেকাতে এই বছরে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসে বাংলাদেশে জনশিক্ষামূলক কার্যক্রম (www.fightcovidmisinfo.com) শুরু করেছে ফেসবুক। শিক্ষামূলক এই মডিউলগুলো বাংলাতেই পাওয়া যাবে, যাতে করে সর্বস্তরের মানুষের সেটা সহজে বুঝতে ও চর্চা করতে সুবিধা হয়।
“বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষামূলক এবং টিকাদান বিষয়ক সচেতনতা গণমানুষের মধ্যে আরও ছড়িয়ে দেয়া খুবই জরুরী।,” বলেন সাবহানাজ রশীদ দিয়া, যিনি ফেসবুকের বাংলাদেশ বিষয়ক পাবলিক পলিসি দেখার দায়িত্বে আছেন। তিনি আরও বলেন, “স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন সংস্থা ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আমরা ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি, যাতে করে ফেসবুকের বিশাল নেটওয়ার্ক কাজে লাগিয়ে মানুষের কাছে নির্ভরযোগ্য তথ্য পৌঁছে দেওয়া যায়। প্রয়োজনীয় তথ্য ও টিকাদানের মাধ্যমে মানুষ যেন আবার নিরাপদভাবে সামাজিক জীবনে ফিরতে পারে, তা নিশ্চিত করতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”
করোনাভাইরাসের টিকা সংক্রান্ত নির্ভরযোগ্য তথ্য দিতে ফেসবুক বিশ্বজুড়ে প্রচারণা কার্যক্রম চালাচ্ছে, যাতে মানুষ টিকা দেবার সঠিক জায়গা খুঁজে পেতে পারে এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক সঠিক তথ্য সহজে পেতে পারে। বাংলাদেশে এই করোনা মহামারির শুরু থেকেই ফেসবুক তথ্য–প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কোভিড-১৯ সম্পৃক্ত সুরক্ষা বার্তা প্রচারে কাজ করছে।
এটুআই-এর পলিসি অ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী বলেন, “আজ সমাজের সর্বস্তরে ডিজিটাল জীবনধারায় অভ্যস্ততা তৈরি হচ্ছে। কিন্তু তার পাশাপাশি ব্যক্তিগত তথ্য যেমন হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে তেমনি অনলাইনে ভুল কোনো পদক্ষেপের কারণে মারাত্মক সব ঝুঁকিতে পড়ার আশংকাও থাকছে। নিজেদের সুরক্ষার জন্য আমাদের প্রত্যেককে হাতে হাত রেখে কাজ করে যাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফেসবুককে সাহসী এই পদক্ষেপ নেওয়া জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি এবং টিকাদান কর্মসূচি, মাস্ক পরা এবং সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার ক্যাম্পেইনকে আরও বেশি সংখ্যক নাগরিকদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার অংশ হতে পেরে আমরা আনন্দিত।” তিনি আরও বলেন, “সংকটময় সময়ে নাগরিকদের জীবনকে স্বাচ্ছন্দ্যময় করতে এটুআই সবসময়ই নতুন নতুন উদ্ভাবন এবং পদক্ষেপ গ্রহণ করে আসছে। দেশের মানুষের কল্যাণে নিত্য নতুন পথ তৈরিতে ফেসবুকের সাথে সামনের দিনগুলোতে আরও কাজ করতে পারবো বলে আমরা আশা করছি।”
কোভিড–১৯ ইনফরমেশন সেন্টারের মাধ্যমে ফেসবুক সারা পৃথিবীতে ২ বিলিয়নেরও বেশি মানুষের কাছে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্য পৌঁছে দিয়েছে। এছাড়া ফেসবুক থেকে ১২ মিলিয়ন কোভিড বিষয়ক ক্ষতিকর ভুল তথ্যও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।