কোভিড সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব মেনে ঘরে থেকেই ডাক বিভাগের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সকল সেবা নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযো মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
গত কয়েক দিনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের নামে দেশের সকল কার্যকর মোবাইল সংযোগে এ সংক্রান্ত একটি সরকারি ক্ষুদে বার্তা (এসএমএস) পাঠানো হয়। সেখানেই ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের পক্ষ থেকে সচেতনামূলত এসএমএস-টি প্রচার করা হয়।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের হিসাব অনুসারে ফেব্রুয়ারির শেষে দেশে মোট কার্যকর মোবাইল সংযোগের সংখ্যা ১৭ কোটি ৩৪ লাখ, যার প্রতিটিতে ডাক বিভাগের এই এসএমএস-টি পাঠানো হয়েছে।
এসএমএসটিতে বলা হয়েছে, “সরকার কোভিডের বিস্তার রোধে লকডাউন দিয়েছে। এ সময়ে ঘরে থেকেই মোবাইল রিচার্জ, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, ইন্টারনেটসহ সকল পরিষেবার বিল চার্জ ফ্রি-তে পরিশোধ করুন ডাক বিভাগের সেবা ‘নগদ’-এ।”
বর্তমান কোভিড পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করেই ‘নগদ’ তার গ্রাহকদের জন্য ঘরে বসেই সেবা পাওয়ার নানা আয়োজন করেছে। এর মধ্যে ডিজিটাল দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকতে মোবাইল ফোনে ‘নগদ’-এর মাধ্যমে রিচার্জে ক্যাশব্যাকসহ দারুণ সব অফার দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া কোনো রকম খরচ ছাড়াই গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি ও ইন্টারনেটসহ সকল পরিষেবার বিল ফ্রি-তে পরিশোধ করার সুযোগ আছে। অন্যরা যেখানে এসব বিল পরিশোধে প্রতিবার ৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত চার্জ নিচ্ছে, সেখানে ‘নগদ’ বিল পে সেবা ফ্রি করেছে। কোভিড সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে – মানুষ বাঁচলে, দেশ বাঁচবে – স্লোগানকে ধারণ করে কাজ করছে ‘নগদ’।
এ ছাড়া কাগুজে টাকার ব্যবহার কমিয়ে সংক্রমণের হার যেন কমানো যায়, সেই দিক বিবেচনা করে এমএফএস-এর মাধ্যমে কোভিড টেস্টের ফি পরিশোধের ব্যবস্থা প্রথম চালু করে ‘নগদ’। যেকোনো নম্বরে অ্যাপের মাধ্যমে ফ্রি সেন্ড মানি করা সুযোগসহ সবচেয়ে কম খরচে ক্যাশ-আউটের সেবা দিয়ে আগেই বাজারে জনপ্রিয়তা পেয়েছে ‘নগদ’। বর্তমানে ‘নগদ’-এর সঙ্গে ১২ হাজার মার্চেন্ট এবং ৫০০ ই-কমার্স সংযুক্ত রয়েছে, ফলে ঘরে বসেই বাজার করাসহ নিত্যকার সকল প্রয়োজন মেটানো যাচ্ছে।
কোভিড সময়ে ঘরে বসেই সকল সেবা পেতে ‘নগদ’-এর আয়োজন দেখে মুগ্ধ হয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। সে কারণে গ্রাহক সচেতনতা বাড়ানো এবং দেশের মানুষকে নিরাপদে রাখার চেষ্টা থেকে এমন সচেতনতামূলক এসএমএস পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, “কোনো রকম খরচ ছাড়া বা নামমাত্র খরচে গ্রাহকদের আর্থিক লেনদেনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার যে চমৎকার উদাহরণ ‘নগদ’ তৈরি করেছে তাতে জনগণ আরো বেশি করে ডিজিটাল লেনদেন বা পেমেন্টে আগ্রহী হচ্ছে। শুরু থেকেই আমি দেখে আসছি ‘নগদ’ সব সময় মানুষের জন্য তার সেবার ডালি সাজিয়েছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কেন্দ্র থেকে প্রান্ত পর্যন্ত সেবা পৌঁছে দেওয়ার এই যে উদাহরণ ‘নগদ’ তৈরি করেছে, সেটি আসলে সরকারের ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়ার এক উৎকৃষ্টতম দৃষ্টান্ত। প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেরা সেবা দেওয়া, সবচেয়ে কম খরচে লেনদেনের সুযোগ নিশ্চিতসহ নানা বিবেচনায় ‘নগদ’ এখন দেশের এক নম্বর অপারেটর। খুব অল্প সময়ে এটি ব্যবসায়িকভাবেও দেশের শীর্ষ এমএফএস অপারেটর হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”
সম্প্রতি চার কোটি গ্রাহক এবং প্রতিদিন ৪০০ কোটি টাকার লেনদেনের দুটি ল্যান্ডমার্ক অতিক্রম করেছে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বেড়ে ওঠা ‘নগদ’। ২০১৯ সালের ২৬ মার্চ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত দিয়ে যাত্রা শুরু করা ‘নগদ’ গ্রাহক সংখ্যার বিবেচনায় এখন দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এমএফএস অপারেটর।
বাণিজ্যিক সেবা শুরুর মাত্র দুই বছরের মধ্যে একটি সরকারি সেবার এমন সাফল্য চারিদিকে সাড়া ফেলেছে। চলমান কোভিডের সময়ে সরকারি নানান ভাতা, উপবৃত্তি, আর্থিক সহায়তা বিতরণে ডিজিটালাইজেশনের প্রচলন করে ভাতাভোগীর হাতে সহজেই সরকারি সহায়তা পৌঁছে দেওয়া, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং সরকারি অর্থের সাশ্রয় করার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে প্রশংসা কুড়িয়েছে ‘নগদ’। সম্প্রতি প্রাথমিক পর্যায়ের দেড় কোটি শিক্ষার্থীর উপবৃত্তি তাদের মায়েদের ‘নগদ’ ওয়ালেটে বিতরণ করে উপবৃত্তি বিতরণে ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছে প্রতিষ্ঠানটি।
‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট খুলতে যেকোনো মোবাইল ফোন থেকে কেবল *১৬৭# ডায়াল করে পিস সেট করার সেবা গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেনে আরো বেশি আকৃষ্ট করেছে। ফলে ‘নগদ’ ব্যবহার করলে সাধারণ প্রয়োজনে গ্রাহকের আর ঘর থেকে বেরুনোর প্রয়োজন পড়ছে না।