বাংলাদেশের বৃহত্তম ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান কুটুমবাড়ি লিমিটেড বিশ্বের বৃহত্তম সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে।
এতে উল্লেখ করা হয় কুটুমবাড়ি নামে ফেসবুকে আরও বেশ কিছু ভুয়া পেজ খুলতে অনুমতি দেওয়ায় তাদের ব্যবসা ও সুনামের নানা ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অন্যদের ভুয়া কার্যক্রমের কারণে কুটুমবাড়ি তাদের ব্যবসা হারাতে বসেছে। এসব কারণ দেখিয়ে কুটুমবাড়ি লিমিটেড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত আমেরিকান বহুজাতিক প্রযুক্তি সংস্থার ফেসবুক থেকে ৮০০,০০০ মার্কিন ডলারও দাবি করেন।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাজী মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা, চেয়ারম্যান ও সিইও মার্ক জুকারবার্গকে এ আইনী নোটিশটি প্রদান করেছেন। ২০২০ সালে ৭ ডিসেম্বর কুটুমবাড়ি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গাজী খালেদ ইবনে মোহাম্মদ এর পক্ষে, ফেসবুককে এ আইনী নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
আইনী নোটিশে, ইউনিফর্ম রিসোর্স লোকেটর (Uniform Resource Locators) সহযোগিতায় কুটুমবাড়ি নাম অনুসারে ৬৩ টি নকল পেজের লিঙ্ক এবং দুটি গ্রুপ ফেসবুক-কে প্রেরণ করা হয়েছিল।
কুটুমবাড়ি লিমিটেডকে ২০১২ সালের ২২ নভেম্বর জয়েন স্টক কম্পানি (Joint Stock Companies) হিসেব নিবন্ধ করা হয়ে ট্রেড লাইসেন্স নং ০৫-৫-৫৩৩৩। কুটুমবাড়ি লিমিটেডের শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) ৫২৯১৮৫৫৩৫৭০৩।
কুটুমবাড়ি লিমিটেড ২০১৪ সালের ২৮ শে মার্চ একটি ফেসবুক পেজ খোলা হয়। কুটুমবাড়ির ফেসবুক পৃষ্ঠাটি ২০২০ সালের ২২ শে মার্চ প্রথম হ্যাক হয়েছিল। পরে এটি আবার হ্যাক হয়। বারবার অনুরোধের পরে, কুটুমবাড়ি ফেসবুক পেজটি গত বছরের ১১ এপ্রিল পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়।
কিন্তু কুটুমবাড়ি ফেসবুকের সঙ্গে সংযুক্ত কয়েক লক্ষ গ্রাহকে কাছে তথ্য পৌঁছাতে পারে নি। এই সময় ’Monkey Duo Duo’ একটি বেনামী এডমিন প্যানেল কুটুমবাড়ির পেজটি চালাতে সক্ষম হয়। এতে একদিকে যেমন কুটুমবাড়ির গোপন তথ্য যেমন চুরি হয় অন্যদিকে সুপরিকল্পিতভাবে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করেন।
আইনজীবি বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়েছে, এ সব কারণে কওভিড -১৯ মহামারীতে কুটুমবাড়ি একটি বিশাল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। কুটুমবাড়ি তার লক্ষ লক্ষ গ্রাহকের হানায়, তাই কুটুমবাড়ি লিঃ ফেসবুক থেকে ৮ লক্ষ মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়েছে।
অ্যাসোসিয়েটসের ব্যারিস্টার তাজকিয়া লবিবা করিম ফেসবুক পক্ষে কুটুমবাড়িড় আইনী বিজ্ঞপ্তির উত্তর দেন ২০২১ সালে ২৮ জানুয়ারীতে। সেখানে দাবি করেছেন যে তারা তাদের ক্লায়েন্টকে প্রতিনিধিত্ব করছেন। তারা জানান, ফেসবুক পরিষেবার শর্তাদি কপিরাইট এবং ট্রেডমার্ক সহ অন্য কারও ইন্টেলেকচুয়াল সম্পত্তির অধিকার লঙ্ঘন করে এমন পোস্ট করার অনুমতি দেয় না। তবে চিঠিটি পরিষ্কারভাবে সনাক্ত করতে পারে না যে কুটুমবাড়ি কোন ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অধিকারের ভিত্তিতে লঙ্ঘন করা হয়েছিল, বা কথিত লঙ্ঘনকে প্রমাণ করার জন্য কোনও প্রমাণ সরবরাহ করা হয়েছে, জবাব বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ কুটুমবাড়ি সুনামের সঙ্গে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। কুটুমবাড়ি হাতে কপিরাইট ও ট্রেডমার্ক সার্টিফিকেট থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের কুটুমবাড়ি নামে আরো বহু প্রতিষ্ঠান ব্যবসা করে আসছে। তেমনি ফেসবুকেও কুটুমবাড়ি নামে আরো অনেক পেজ দেখা যাচ্ছে এখনো পর্যন্ত। ফেসবুকের মত একটি বড় প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি দেশের কপিরাইট ও ট্রেডমার্ক আইন মেনে তাদের ব্যবসা পরিচালনা না করাটা সত্যিই দুঃখজনক।