চলতি বছরের শেষের দিকে বিশ্বে ১০০ কোটিরও বেশি ফোনে ওয়্যারলেস চার্জিং বা তারবিহীন চার্জিংয়ের সুবিধা থাকবে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। খবর আইএএনএস।
স্যামসাং, শাওমি, অপোসহ স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ইনফিনিওন, মিডিয়াটেক, স্যামসাং এসডিআই এবং কোয়ালকমের মতো প্রযুক্তি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এখন তারবিহীন চার্জিং প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, যার মাধ্যমে খুব সহজেই ব্যাটারি চার্জ করা যায়।
বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিটিক্সের মতে, ২০২১ সালের শেষে তারবিহীন চার্জিং সুবিধাযুক্ত স্মার্টফোনের সংখ্যা ১০০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। ১০ বছর আগে এ প্রযুক্তির উদ্ভাবন হয়। সে সময় এ প্রযুক্তি খুব একটা সাড়া ফেলেনি। তবে বর্তমান সময়ে বিভিন্ন নামিদামি প্রতিষ্ঠান তাদের স্মার্টফোনের অন্যতম আকর্ষণীয় ফিচার হিসেবে তারবিহীন চার্জিং সুবিধা যুক্ত করে থাকেন এবং বিজ্ঞাপনেও তা সম্প্রচার করে থাকেন।
স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিটিক্সের পরিচালক কেন হায়ারস বলেন, ২০২৬ সাল নাগাদ তারবিহীন চার্জিং সুবিধাযুক্ত স্মার্টফোনের সংখ্যা ২২৬ কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে আমরা ধারণা করছি। কেননা উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও এ প্রযুক্তির বাজার বিস্তৃত হচ্ছে এবং ফ্ল্যাগশিপ ফোনগুলোতে এ ফিচারের চাহিদাও বাড়ছে।
এ প্রযুক্তির দাম বেশি হলেও এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে এ প্রযুক্তির স্মার্টফোনের চাহিদা ও বিক্রি বেশি। ওই অঞ্চলে ৪৯ শতাংশ স্মার্টফোনে তারবিহীন চার্জিং প্রযুক্তি রয়েছে।
স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিটিক্সের সহযোগী পরিচালক ভিলে পেটেরি উকোনাহো বলেন, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, ভিয়েতনামসহ এশিয়া প্যাসিফিকের অন্য অঞ্চলগুলোর অর্থনীতি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা অঞ্চলটির একটি বিশাল অংশকে এ প্রযুক্তির স্মার্টফোন কেনার সক্ষমতাকে নির্দেশ করে।
এ প্রযুক্তি ব্যবহারের দিক থেকে উত্তর আমেরিকা ও পশ্চিম ইউরোপ অনেক পিছিয়ে আছে। উত্তর আমেরিকায় এর হার ২১ শতাংশ এবং পশ্চিম ইউরোপে মাত্র ১৬ শতাংশ।
এসব অঞ্চলের স্মার্টফোন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে চীনের প্রতিষ্ঠানগুলো আরো উন্নত প্রযুক্তির চার্জিং ফিচার নিয়ে কাজ করছে। যার মধ্যে শাওমির এমআই এয়ার চার্জ অন্যতম।
গবেষক ইয়েন উ বলেন, অদূর ভবিষ্যতে তারবিহীন চার্জিং প্রযুক্তির অন্যতম বাজার হিসেবে দীর্ঘদিন শীর্ষে থাকবে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চল। এর পাশাপাশি এ অঞ্চলে তারবিহীন চার্জিং সুবিধাযুক্ত স্মার্টফোনের উৎপাদন এবং বাজারে এর হার ধীরে ধীরে বাড়তে থাকবে।
অন্যদিকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে বাজারে আইফোন ১৩ ছাড়তে পারে টেক জায়ান্ট অ্যাপল। আইফোন ১২-এর সফলতার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানটি বাজারে নতুন চারটি মডেল আনতে পারে বলে ধারণা করছেন প্রযুক্তিবিদরা। স্ট্যান্ডার্ড আইফোন ১৩, ১৩ মিনি, ১৩ প্রো এবং ১৩ প্রো ম্যাক্স নামে এগুলো ছাড়া হতে পারে।
নতুন এসব ফোন বাজারে আসার আগেই এগুলোর কিছু ফিচারের তথ্য ফাঁস হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম একটি পরিবর্তন হচ্ছে তারবিহীন চার্জিং। ফাঁস হওয়া তথ্যানুযায়ী, আইফোন ১৩-তে তারবিহীন চার্জিংয়ের জন্য আরো বড় কয়েল প্রদান করা হবে। তারবিহীন চার্জিংয়ের পাশাপাশি এ কয়েলের মাধ্যমে অ্যাপল আইফোন ১৩-তে রিভার্স ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তিও চালু করতে পারে বলে গুঞ্জন উঠেছে।