চীনা কোম্পানি হুয়াওয়ের চেয়ারম্যান লিয়াং হুয়া বলেন, ‘ইনটেলিজেন্ট বিশ্ব হওয়া উচিৎ সবুজ বিশ্ব। প্রযুক্তির অগ্রগতি বিশ্বজুড়ে মানুষের কাজের প্রভাব হ্রাস করে প্রকৃতিকে আরও ভালোভাবে বুঝতে ও রক্ষা করতে সহায়তা করতে পারে।’
গত বছর হুয়াওয়ের অগ্রগতির একটি বিশেষ প্রতিবেদনে তিনি এ কথা বলেন। প্রতিষ্ঠানটি টানা ১৩ বছর ধরে এই বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে হুয়াওয়ে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষকে মানসম্মত শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তিতে সমানভাবে গ্রহণের সুযোগ করে দিতে হুয়াওয়ের উদ্ভাবনী আইসিটি সমাধান ব্যবহার করছে। ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের দুইশ’র বেশি স্কুলের ‘স্কিলস অন হুইলস’ ও ‘কানেক্টিং স্কুল’ প্রোগ্রাম চালু করেছে। এ উদ্যোগগুলোর মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ। এছাড়াও, হুয়াওয়ে প্রায় ৯০টি দেশের প্রযুক্তিগত সহায়তাদানে আইসিটি সমাধান ব্যবহার করেছে। হুয়াওয়ের রুরালস্টার প্রো সল্যুশনের মাধ্যমে প্রত্যন্ত গ্রামের পাঁচ কোটিরও বেশি মানুষকে ভয়েস ও মোবাইল ব্রডব্যান্ড সেবা প্রদান করেছে। সাইবার নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে একটি সম্পূর্ণ বিশ্বস্ত কোডিং প্রোডাকশন মেকানিজম তৈরিতে হুয়াওয়ে ২০২০ সালে সফটওয়্যার প্রসেস ট্রাস্ট অর্থিনেস ক্যাপাবিলিটি ফ্রেমওয়ার্ক ও অ্যাসেসমেন্ট ক্রাইটেরিয়া প্রকাশ করেছে। ২০২০ সালের শেষ পর্যন্ত, বিশ্বব্যাপী সাইবার নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা সুরক্ষা সম্পর্কিত হুওয়ায়ের ২ হাজার ৯৬৩টি পেটেন্ট রয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২০ সালে প্রতি মিলিয়ন চীনা মুদ্রা আয়ে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের পরিমাণ কমিয়েছে ২০১২ সালের তুলনায় ৩৩ দশমিক ২ শতাংশ; যা প্রতিষ্ঠানটির ২০১৬ সালের লক্ষ্যমাত্রাকে (৩০ শতাংশ) ছাড়িয়ে গেছে। বৈশ্বিক পরিবেশ বিষয়ক অলাভজনক সংস্থা সিডিপি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ৫ হাজার ৮০০ প্রতিষ্ঠানকে স্কোর প্রদান করেছে। এক্ষেত্রে, ২০২০ সালে হুয়াওয়ে অল্পকিছু প্রতিষ্ঠানের একটি হিসেবে ‘এ’ স্কোর লাভ করে। এক্ষেত্রে মানদণ্ড বিবেচনায় ছিল-কার্বন নিঃসরণ কমানো, জলবায়ুর ঝুঁকি হ্রাস করা এবং নিম্ন-কার্বন অর্থনীতি বিকাশ।
হুয়াওয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, নবায়নযোগ্য শক্তির বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করতে, হুয়াওয়ে ১৭০টিরও বেশি দেশে ও অঞ্চলে ডিজিটাল পাওয়ার সল্যুশন স্থাপন করেছে; যা বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ মানুষকে সেবা দিচ্ছে। এখন পর্যন্ত এই সল্যুশনগুলো নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস থেকে ৩২৫ বিলিয়ন কেডব্লিউএইচ (কিলোওয়াট পার আওয়ার) বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে এবং ১০ বিলিয়ন কেডব্লিউএইচ বিদ্যুৎ সাশ্রয় করেছে। এর মাধ্যমে ১৬০ মিলিয়ন টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ কমেছে। করোনা মহামারি চলাকালীন প্রতিষ্ঠানটি কর্মীদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং সরবরাহকারী ও ঠিকাদাররা যাতে আবার নিরাপদে কাজ শুরু করতে পারে এজন্য তাদের সহায়তায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলো। ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বজুড়ে ৬৫০টিরও বেশি দাতব্য কার্যক্রম আয়োজন করেছিল। এর ফ্ল্যাগশিপ সিএসআর প্রোগ্রাম ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার’ -এর মাধ্যমে ১৩০টি দেশ ও অঞ্চলের প্রায় ৯ হাজার শিক্ষার্থী উপকৃত করেছে; যা একইসঙ্গে ভবিষ্যতে আইসিটি খাতের জন্য মেধাবী কর্মী তৈরিতে সহায়তা করেছে।