২০২৫ সাল নাগাদ বিশ্বে স্মার্টফোন বিক্রির মাধ্যমে আয়ের শীর্ষে থাকবে ফাইভজি ফোন। ফলে মোট আয়ের পরিমাণ ৩৩ হাজার ৭০০ কোটি ডলারে পৌঁছবে। ২০২১ সালে যার পরিমাণ হবে ১০ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। সম্প্রতি জুনিপার রিসার্চ ফার্মের এক নতুন গবেষণায় এ তথ্য জানা গেছে। খবর ইটি টেলিকম।
তবে পরিবর্তনশীল প্রযুক্তি বাজারে ফাইভজির গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে সাশ্রয়ী মূল্যে ফাইভজি স্মার্টফোনের সহজলভ্যতা অনেকাংশেই প্রভাব বিস্তার করবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির আশা, ২০২৫ সাল নাগাদ বিশ্বে অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের দাম আইওএস স্মার্টফোনের তুলনায় ৬৫ শতাংশ কমে যাবে। সেই সঙ্গে কম মূল্যের কারণে অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন সংগ্রহ করা সহজজ হওয়ায় লাতিন আমেরিকায় ফাইভজি অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের বাজার ভালো প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হবে।
অন্যদিকে নর্থ আমেরিকা ও ইউরোপের উন্নত বাজারে আইওএস ডিভাইসগুলো ফাইভজির বাজার সম্প্রসারণে ৪০ শতাংশ স্থান দখলে রাখতে পারবে বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
বাজার গবেষণা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তথ্যানুযায়ী, সর্বনিম্ন ৪১০ ডলার গড় বিক্রয়মূল্য ও বাণিজ্যিক ফাইভজি নেটওয়ার্ক ছাড়াই ডিভাইস বাজারজাতের দিক থেকে চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানকে ছাড়িয়ে শীর্ষ চারে উঠে এসেছে ভারত।
ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশনের (আইডিসি) তথ্যানুযায়ী, শীর্ষ পাঁচ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২০২১ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ফাইভজি প্রযুক্তির ব্যবহার ও ডিভাইস সরবরাহের মাধ্যমে ২৩ শতাংশ বাজার নিয়ন্ত্রণে রেখেছে রিয়েলমি। এরপর রয়েছে ওয়ানপ্লাস ও অপো। অন্যদিকে প্রিমিয়াম ফাইভজির বাজারে নেতৃত্ব দিয়েছিল ওয়ানপ্লাস।
জুনিপার রিসার্চ জানায়, সেলফোনের হার্ডওয়্যার যেন মোবাইল ক্লাউড সলিউশন নিশ্চিত করে, সেটি স্মার্টফোন উৎপাদনকারীদের নিশ্চিত করতে হবে।
প্রতিষ্ঠানটি আরো জানায় যেসব স্মার্টফোন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নিজেদের শীর্ষ অবস্থান ধরে রাখতে চায়, তারা তাদের স্মার্টফোনে আল্ট্রা লো লেটেন্সিতে অধিক ব্যান্ডউইডথ সরবরাহে শক্তিশালী রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করবে। ফলে গ্রাহকরা আরামদায়কভাবে সাশ্রয়ী মূল্যের স্মার্টফোনে ক্লাউড কম্পিউটিং সেবা ব্যবহার করতে পারবেন।
জুনিপার উল্লেখ করে, উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপে রাইট টু রিপেয়ার নামে নতুন যে আইন বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে, তার ফলে এ দুই অঞ্চলে ফাইভজি স্মার্টফোন সরবরাহ ও বিক্রির মাধ্যমে রাজস্ব আয়ের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। কেননা এ আইন বাস্তবায়ন হলে অনেক ব্যবহারকারী নতুন প্রজন্মের ডিভাইস গ্রহণের পরিবর্তে তাদের পুরনো ডিভাইস মেরামতে আগ্রহী হবে।
গবেষক অ্যাডাম উইয়ার্স বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে এ আইন তেমন গুরুতর কোনো প্রভাব বিস্তার করবে না। কেননা লো লেটেন্সি সুবিধাযুক্ত উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবহারে গ্রাহকরা ফাইভজি স্মার্টফোন ব্যবহারের দিকেই ঝুঁকছেন। তিনি বলেন, বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়েই স্মার্টফোন নির্মাতাদের নতুন নতুন ডিভাইস উৎপাদনের মাধ্যমে গ্রাহকদের প্রতিনিয়ত ডিভাইস পরিবর্তনে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে বাজারে থাকা প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় এগিয়ে থাকতে হবে।
অন্যদিকে দ্রুতগতির ফাইভজি প্রযুক্তির ব্যবহার ও বিস্তৃতিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ৩০টিরও বেশি টেলিকম প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেছে বিশ্বের অন্যতম চিপ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কোয়ালকম। সেই সঙ্গে চীনের চায়না টেলিকম ও চায়না ইউনিকমের সঙ্গে যৌথভাবে ৩ শতাংশ ফাইভজি রেডিও চুক্তি করেছে সুইডেনের বহুজাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এরিকসন। ফাইভজি প্রযুক্তি সম্প্রসারণে কাজ করবে এ প্রতিষ্ঠান।