বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালি জাতির বড় সম্পদ মন্তব্য করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বিশ্বে অনেক রাজনীতিক দেখেছি কিন্তু একজন বঙ্গবন্ধুর মতো নেতা খুঁজে পাওয়া দুস্কর। স্বাধীনতা সংগ্রাম, দেশপ্রেম কিংবা রাষ্ট্র পরিচালনায় বঙ্গবন্ধুর সাথে তুলনা করার মতো একজনও নেই।
তিনি বলেন, ১৯৪৮ সাল থেকে সত্তরের নির্বাচন পর্যন্ত আন্দোলন সংগ্রামের পথবেয়ে একাত্তরের জনযুদ্ধ ছিলো পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। কেবল তাই নয়, বাহাত্তর থেকে পঁচাত্তর তার সাড়ে তিন বছরের শাসনকালে তিনি উপগ্রহ ভূ- কেন্দ্র স্থাপন থেকে শুরু করে প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণসহ বাংলাদেশের ভবিষ্যতের ঠিকানা নির্ধারণ করে দিয়ে গেছেন বঙ্গবন্ধু।
আজ বুধবার (২৫ আগস্ট) খুলনায় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ক্যাবল শিল্প লিমিটেড আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বক্তৃতায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ ক্যাবল শিল্প লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জগদীশ চন্দ্র মন্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে, কুয়েটের অধ্যাপক ড. মুস্তফা সারওয়ার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন। অনুষ্ঠানে বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার. বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো: শাহাদাৎ হোসেন বক্তৃতা করেন।
বঙ্গবন্ধুর মতো দূরদর্শী রাজনীতিবিদ ও রাষ্ট্র নায়ক যুগে যুগে আসেন না উল্লেখ করেন মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিত্তি হিসেবে টিএন্ডটি বোর্ড গঠন, বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, আইটিইউ, ইউপিইউ এর সদস্যপদ অর্জন, এমনকি খুলনার ক্যাবল শিল্প প্রতিষ্ঠা বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই হয়েছে। সুদীর্ঘকাল আগে কী করে বঙ্গবন্ধু আজ ও আগামী দিনের প্রয়োজনীয়তার কথা ভাবলেন এবং এই সব প্রতিষ্ঠান ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছেন তা অভাবনীয়।
তিনি বলেন, যুদ্ধের ধ্বংসস্তুপের ওপর দাঁড়িয়েও মাত্র সাড়ে তিন বছরে যেসব বড় কাজ করেছেন তার একটি সংক্ষিপ্ত তালিকায় আমি এ পর্যন্ত প্রাপ্ত হিসেবে একশত বায়ান্নটি বিশেষ উদ্যোগ পেয়েছি। আর আজকের বাংলাদেশ এই ভিত্তির ওপর ভর করেই অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে তারই সুযোগ্য উত্তরসূরি জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বঙ্গবন্ধু বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে কখনো আপস করেননি উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার সাথে বিভিন্ন শক্তি বিভিন্ন ভাবে জড়িত ছিলো।
বঙ্গবন্ধু কেবল বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠাই করেননি উল্লেখ করে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা জব্বার বলেন, বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব ছিলো অর্থনৈতিক মুক্তির সোপান। একুশ শতকের শিক্ষা, যোগাযোগ প্রযুক্তিসহ শোষণ, বঞ্চনা,বৈষম্যহীন – ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় তিনি লক্ষ্য নির্ধারণ করে গেছেন। ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত শক্তির ষড়যন্ত্রেরই ফসল উল্লেখ করে কম্পিউটার প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত মোস্তাফা জব্বার বলেন, পঁচাত্তরে পর ৬ বছরের শরনার্থী জীবন ও ৮১ সালে দেশে ফেরার পর ১৫ বছর মরণপণ যুদ্ধ করে ২১ বছরের জঞ্জাল অপসারণ করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনৈতিক সংগঠন পুনর্গঠন করে শেখ হাসিনার নেতৃত্ত্বেই বঙ্গবন্ধু ঘোষিত অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামে বাংলাদেশ আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
মন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের মহাসড়ক নির্মাণে টেলিকম বিভাগের ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, আমাদের এই অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করতে হবে। মোস্তাফা জব্বার বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা গ্রাম ও শহরের মধ্যে বৈষম্য দূর করতে কাজ করছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারিদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে বেগবান করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
মুস্তফা সারওয়ার বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরিকল্পনা কেবল বিপথগামী কয়েকজন সৈনিকেরই কাজ ছিলো না, এর সাথে তৎকালিন উপর মহলের কর্তারাও কোন না কোন ভাবে দায়ী। তিনি বলেন র‘সহ বিশ্বের অনেক নেতাই বঙ্গবন্ধুকে সতর্ক করে ছিলেন। কিন্তু আমাদের গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকা কী ছিলো প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতে পারেননি এদেশের মানুষে তাকে হত্যা করতে পারে।