আগামী বছর তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) খাতে সরকারি ব্যয় ৬ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে ৫৫ হাজার ৭৩০ কোটি ডলারে দাঁড়াবে। মহামারীর ফলে ডিজিটাল রূপান্তর ত্বরান্বিত হওয়ায় এ খাতে সরকারি ব্যয় বাড়বে। মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনার সম্প্রতি এমনই পূর্বাভাস দেয়।
কানেক্টিকাটভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটি তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানায়, বিদ্যমান আইটি অবকাঠামো ও অ্যাপ্লিকেশন আধুনিকীকরণ এবং ডিজিটাল সরকার ব্যবস্থায় রূপান্তর আগামী কয়েক মাসের গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অগ্রাধিকার। অন্যান্য যেসব খাতে বিনিয়োগ বাড়বে, তার মধ্যে রয়েছে গ্রাহকসেবার মান উন্নয়ন ও কর্মীদের উন্নত প্রশিক্ষণ।
গার্টনারের গবেষণাবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট ইরমা ফ্যাবিউলার বলেন, কভিড-১৯ মহামারীর কারণে জনস্বাস্থ্যে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা ও অব্যাহত রূপান্তরের বিষয়টি মাথায় রেখে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে সরকার বিনিয়োগ বৃদ্ধি চালিয়ে যাবে। গত দেড় বছরে মহামারী যে বিঘ্ন ঘটিয়েছে তাতে ডিজিটাল সরকারের এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে দাঁড়িয়েছে যে পাবলিক পলিসি ও প্রযুক্তি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
গার্টনার বলছে, আইটি খাতে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকা থাকবে বিভিন্ন সরকার কর্তৃক গৃহীত আর্থিক সহায়তা প্যাকেজ। গত মার্চে আমেরিকান রেসকিউ প্ল্যান অ্যাক্টের আওতায় ১ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ডলারের তহবিল ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত জুলাইয়ে নেক্সট জেনারেশন ইইউ ফান্ডের জন্য ৯৫ হাজার ৫৭০ কোটি ডলার বরাদ্দ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
ডিজিটাল সক্ষমতা বৃদ্ধি, টেকসই প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা, সামাজিক কর্মসূচি, সাইবার নিরাপত্তা শিক্ষা এবং ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তিতে ওই তহবিল ব্যয় হবে। আগামী বছর সরকারগুলো তাদের মোট আইটি বরাদ্দের ৬৪ শতাংশ ব্যয় করবে সেবা ও সফটওয়্যার খাতে। যাতে সরকারি সেবার গতিশীলতা, দৃঢ়তা ও নিরাপত্তা বৃদ্ধি পায়।
গার্টনারের প্রতিবেদনে বলা হয়, ছয়টি খাতের মধ্যে আইটি সেবাতে সর্বোচ্চ ২০ হাজার ৩৯০ কোটি ডলার ব্যয় হবে, যা মোট ব্যয়ের ৩৭ শতাংশ। বাকি ৩৫ হাজার ৩৩০ কোটি ডলার ব্যয় হবে সফটওয়্যার, টেলিকম সার্ভিস, ইন্টারনাল সার্ভিস, ডিভাইস ও ডাটা সেন্টার আপগ্রেড করে।
করোনার ফলে সৃষ্ট অভূতপূর্ব জনচাহিদার কথা মাথায় রেখে সরকারগুলো আইটি অবকাঠামোতে ব্যয় বাড়াচ্ছে। গার্টনারের প্রাক্কলন, ২০২৫ সালের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ সরকারি প্রতিষ্ঠান তাদের গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপ্লিকেশনগুলো আধুনিকীকরণ করবে, যাতে কার্যক্রম পরিচালনায় গতিশীলতা বৃদ্ধি পায়। কার্যকারিতা বৃদ্ধি ও ডাটা নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারি ক্লাউড সেবা নিয়ে ভাবছে বিভিন্ন দেশের সরকার।
মহামারীর ফলে ডিজিটাল সরকারে রূপান্তরে নাগরিকদের ডিজিটাল আইডেনটিটিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ডিজিটাল আইডেন্টিটি নির্ভরতা বাড়াতে সরকারগুলোর সামনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয় হিসেবে দাঁড়াচ্ছে নাগরিকদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।