প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে দেশের প্রতিটি জেলায় শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করা হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষে আয়োজিত এক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ এই কথা বলেন।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের অধীন গৃহীত একটি প্রকল্পের আওতায় দেশের ৮টি জেলায় এবং অপর একটি প্রকল্পের আওতায় ১১টি জেলায় শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করা হচ্ছে। আজ এই চুক্তির মাধ্যমে আরো ৩২টি জেলায় শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনের লক্ষ্যে ফিজিবিলিটি স্টাডি (সম্ভাব্যতা যাচাই) করা হবে।
চুক্তিতে দেশের ৩২ টি জেলায় শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনের নিমিত্ত সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্পের পক্ষে প্রকল্প পরিচালক জোহরা বেগম (উপ-সচিব) এবং সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য নির্বাচিত প্রতিষ্ঠান শেলটেক প্রাইভেটের পক্ষে ভাইস চেয়ারম্যান এস. কে. বশির আহমেদ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম বলেন, প্রতিযোগিতার এই যুগে আমাদের তরুণদের টিকে থাকতে হলে প্রযুক্তি শিক্ষার বিকল্প নাই। আর এজন্যই আমরা একটি প্রযুক্তিনির্ভর জাতি গড়ে তুলতে চাই। শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার থেকে ট্রেনিং নিয়ে তরুণ-তরুণীরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে, অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এখন থেকে আর চাকরির পেছনে ছুটতে হবে না, নিজেরাই উদ্যোক্তা হয়ে মানুষকে চাকরি দিবে।
বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. বিকর্ণ কুমার ঘোষ বলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ব্রেইন চাইল্ড এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে একদিকে যেমন বেকারত্ব দূর হবে, একইসাথে তথ্যপ্রযুক্তিতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে একরকম উল্লম্ফন সৃষ্টি হবে। মূলত এস.এস.সি ও এইচ.এস.সি পর্যায়ে ছাত্র-ছাত্রীদের আইটিতে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে এই প্রকল্প গৃহীত হয়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করে একাডেমিয়া এবং আইটি ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে সেতুবন্ধন প্রতিষ্ঠা করা হবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে। ফলে আইটি/আইটিইএস খাতে বাংলাদেশের যুব সমাজের আত্ম-কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হবে।
দশের ৩২ টি জেলায় শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনের নিমিত্ত সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্পের পক্ষে প্রকল্প পরিচালক জোহরা বেগম (উপ-সচিব) জানান, প্রকল্পের আওতায় ৪৮৯.৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত ৩২ জেলায় প্রাপ্ত জমি সরেজমিনে জরিপ এবং এ বিষয়ে বিশদ সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের মাধ্যমে প্রকল্পের উপযোগিতা নির্ধারণ করা হবে। জেলাগুলো হচ্ছে, ১) গাজীপুর, ২) শরীয়তপুর, ৩) মুন্সিগঞ্জ, ৪) মাদারীপুর, ৫) রাজবাড়ী, ৬) ফরিদপুর, ৭) নরসিংদী, ৮) চট্টগ্রাম (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়), ৯) ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ১০) খাগড়াছড়ি, ১১) কক্সবাজার, ১২) রাঙামাটি, ১৩) লক্ষীপুর, ১৪) রাজশাহী, ১৫) বগুড়া, ১৬) নওগাঁ, ১৭) চাপাইনবাবগঞ্জ, ১৮) পাবনা, ১৯) খুলনা, ২০) যশোর, ২১) বাগেরহাট, ২২) সাতক্ষীরা, ২৩) ঝিনাইদহ, ২৪) চুয়াডাঙ্গা, ২৫) মৌলভীবাজার, ২৬) ময়মনসিংহ, ২৭) জামালপুর, ২৮) বরগুনা, ২৯) ঝালকাঠি, ৩০) পিরোজপুর, ৩১) লালমনিরহাট ও ৩২) কুড়িগ্রাম।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) এন এম সফিকুল ইসলামসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।