সফলভাবে শেষ হলো ৩ দিনব্যাপী আয়োজিত “আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড ২০২১” । আজ রবিবার রাতে রাজধানী ঢাকার আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ার-এর বিসিসি অডিটরিয়ামে এর বর্ণাঢ্য সমাপনী এবং পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়। ব্রোঞ্চ এবং সিলভার দুইটি ক্যাটাগরিতে বিজয়ী ১০ টি দল পেল ৪০ হাজার মার্কিন ডলারেরও বেশি মূল্যের পুরস্কার
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল-সহ ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ এবং টেকনোহেভেন কোম্পানি লিমিটেড যৌথভাবে এর আয়োজন করে। বহুল প্রত্যাশিত এই অলিম্পিয়াড এবারই প্রথম হংকং এর বাইরে বাংলাদেশে আয়োজিত হয়।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন “আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড ২০২১” সত্যিই একটি অসাধারণ ইভেন্ট যেখানে সরকার, ইন্ডাস্ট্রি এবং অ্যাকাডেমিয়া সহ সকলের অংশগ্রহণ রয়েছে এবং সকলে একসাথে কাজ করেছে। তিনি বলেন, এই অনুষ্ঠানটি অত্যন্ত সুন্দর ও সফলভাবে আয়োজন করা সম্ভব হয়েছে যা ভবিষ্যতের জন্য একটি অভিজ্ঞতা হিসেবে কাজ করবে।
মন্ত্রী ব্লকচেইন একপ্রকার ডেটাবেইজ টেকনোলজি যা দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, “আমি বিশ্বাস করি যে আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড এই ধরনের প্রযুক্তির গবেষণা ও বিকাশকে তরুণদের দ্বারা আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। বাংলাদেশ সরকার তরুণদের এই মেধা ও প্রচেষ্টাকে সবসময় সমর্থন করবে।”
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ব্লকচেইনের বহুমাত্রিক ব্যবহারের কথা উল্লেখ করে বলেন এই প্রযুক্তিকে নতুন ধারার ইন্টারনেট। পলক বলেন এটা প্রতিটি ক্ষেত্রেই ব্যাপক পরিবর্তন আনছে। ফিনটেক, এগ্রিটেক, হেলথটেক, এ্যডুটেক- প্রতিটি ক্ষেত্রে আজ -কাল বা পরশু এই ব্লকচেইন ব্যবহৃত হবে। তাই আমাকে এই প্রযুক্তিকে আলিঙ্গন করতে হবে। সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।
তরুণদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে পলক বলেন, শিল্পখাতে রূপান্তরের অপারেটিং মডেলে দীর্ঘ মেয়াদে ব্লকচেইন ব্যবহৃত হবে। যেভাবে আমরা ইন্টারনেটে ব্যাপকভিত্তিক তথ্য বিনিময় করি, তেমনি ভ্যালুচেঞ্জ, মালিকানা হস্তান্তর এবং লেনদেন যাচাইয়ে ব্লকচেইন ব্যবহৃত হবে। এর মাধ্যমেই বোঝা যাচ্ছে ব্লকচেইন প্রযুক্তি কতটতা গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন আমাদের শিল্প খাতের প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই প্রযুক্তি ব্যবহৃত হবে। তাই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের প্রতি আমার আহ্বান,পুঁজিবাজার, অর্থমন্ত্রণালয়সহ দেশের বেসকারি খাতকেও এই প্রযুক্তিতে সংযুক্ত করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এর নির্বাহী পরিচালক সচিব ড. মোঃ আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্য বক্তব্য রাখেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনার ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ, “আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড ২০২১” এর চেয়ারম্যান এবং টেকনোহ্যাভেন কোম্পানি লিমিটেড এর সিইও হাবিবুল্লাহ এন করিম। অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন হংকং ব্লকচেইন সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ড. লরেন্স মা এবং ব্লকচেইন সোসাইটির ডেভিড সিজেল।
পরে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে “আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড ২০২১” এর বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন। বিজয়ীদের জন্য সর্বমোট ৪০,০০০ মার্কিন ডলারেরও বেশি মূল্যের পুরস্কার প্রদান করা হয়।
এই প্রতিযোগিতায় মোট ১২ টি দেশ অংশগ্রহণ করে।গত ৮ ই অক্টোবর একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে ৩ দিনব্যাপী এই অলিম্পিয়াড চলে ১০ অক্টোবর ২০২১ পর্যন্ত। এ বছর অন্যান্য আয়োজনের পাশাপাশি সিবিডিসি এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি, ই-গভর্নেন্স, আইডেন্টিটি অ্যান্ড প্রাইভেসি এবং ফিনটেক বিষয়ে মোট ৪ টি সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
সবশেষে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড “মাইলস” এর চমৎকার মিউজিক্যাল পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় ২০২১ এর আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড।