প্রযুক্তিখাতে ২০২০ সালের মধ্যে দেশের ২১টি জেলায় সাড়ে ১০ হাজারের বেশি নারী উদ্যোক্তা তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) রাজশাহী বরেন্দ্র কলেজে আইসিটি বিভাগের অধীনে চলমান ‘শী পাওয়ার’ প্রকল্পের প্রশিক্ষণ সেন্টার উদ্বোধন শেষে সময় সংবাদকে এ কথা বলেন তিনি।
সরকারের আইসিটি বিভাগের ‘শী পাওয়ার’ প্রকল্পের আওতায় নারী উদ্যোক্তাদের দক্ষতা বাড়াতে ফ্রিল্যান্সিং, হার্ডওয়্যার ও বিপিওখাতে প্রশিক্ষণ ও ইন্টার্নশিপের সুযোগ থাকছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী। এসময়, প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা ছাড়াও কলেজের শিক্ষক, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
নারী উদ্যোক্তা ও ‘শী পাওয়ার’ প্রকল্প নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বর্তমানে মাত্র ১৬ ভাগ নারী তথ্যপ্রযুক্তিখাত সম্পৃক্ত রয়েছে। এ খাতে নারী ও পুরুষের অংশগ্রহণ সমান করার লক্ষ্যেই ‘শী পাওয়ার’ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার আমাদের সাফল্যের একটি দৃষ্টান্ত তৈরি হয়েছে। মাত্র ৮/৯ বছরে এই সেন্টারগুলো দিয়ে সাত হাজারের বেশি নারী উদ্যোক্তা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি। এই সফলতা থেকেই আমাদের ‘শী পাওয়ার’ প্রকল্প হাতে নেয়া।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘নারীদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা তৈরি ও কর্মসংস্থান তৈরি করার জন্যই শী পাওয়ার নামে প্রকল্পটি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ প্রকল্পের আওতায় দেশের ২১টি বৃহত্তর জেলায় ১০ হাজার ৫শ’ জন নারীর কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা তৈরিতে ৯ মাসব্যাপি প্রশিক্ষণ ও ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমরা আশাবাদী, ২০২০ সালের মধ্যে দেশের ২১টি জেলায় প্রযুক্তিখাতে সাড়ে ১০ হাজারের বেশি নারী উদ্যোক্তা তৈরি করতে পারবো। যারা শুধু নিজেদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাই করবে না, তারা চাকরির নতুন সম্ভাবনাও তৈরি করবে।’
‘শী পাওয়ার’ প্রকল্পের আওতায় ২১টি জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ সেন্টার চালু থাকবে। যেখানে তিনটি ক্যাটাগরিতে প্রশিক্ষণ ও ইন্টার্নশিপের সুযোগ পাবেন নারী উদ্যোক্তারা। এ বিষয়ে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রথমত, আমাদের লক্ষ্য ফ্রিলান্সিংদের উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করা। যাতে তারা আরো কয়েকজনকে নিয়ে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারে। এতে জেলা-উপজেলা কিংবা বিভাগীয় পর্যায় থেকে অনলাইন মার্কেটিং ও আউটসোসিং করতে পারবে।
দ্বিতীয় ক্যাটাগরির বিষয়ে পলক বলেন, সময়ের প্রয়োজনে বাংলাদেশে হার্ডওয়্যার শিল্প তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশে। মোবাইল ও কম্পিউটারের মতো কোটি কোটি ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহৃত হচ্ছে। সেটি মেরামতের জন্য যে বিশাল ক্ষেত্র রয়েছে সেটি লক্ষ্য রেখে নারীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ‘শী পাওয়ার’ প্রজেক্ট।
তৃতীয় ক্যাটাগরির বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিজনেস প্রসেসিং আউটসোর্সিং-বিপিও খাতে কল সেন্টার, ডেটা এন্ট্রি ও ভয়েস সেন্টারে দিনদিন কাজের সুযোগ বাড়ছে। তাই নারীদের এ কাজে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য সহায়তা করবে ‘শী পাওয়ার’ প্রকল্প।
রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মতবিনিমিয় সভায় যোগ দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ বলেন, ‘সরকারি উদ্যোগে ২০১৪ সালে জেলা শহর পর্যন্ত অপটিক্যাল ক্যাবল সংযোগের আওতায় আনা হয়েছিলো। ২০১৫ সালে সেটি উপজেলা পর্যন্ত নেয়া হয়। এখন ইউনিয়ন পর্যন্ত নেয়া হচ্ছে। আগামী ২০২১ সালে দেশের প্রতিটি এলাকা ব্রডব্রান্ড হাইস্পিড ইন্টারনেটের আওতায় থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ সুযোগ নিশ্চিত হলে, মানুষ গ্রামে বসেই ব্যবসা-বাণিজ্য, নাগরিক সেবা গ্রহণ করতে পারবে। ফলে গ্রামীণ জনপদে দক্ষতা উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও ডিজিটাল বৈষম্য রোধ সম্ভব হবে।’