১১ নভেম্বর থেকে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে তথ্যপ্রযুক্তির বিশ্ব সম্মেলন ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অন ইনফরমেশন টেকনোলজির (ডব্লিউসিআইটি) ২৫ তম আসর। দ্য ওয়ার্ল্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেস অ্যালায়েন্সের উদ্যোগে এই সম্মেলনের দেশীয় আয়োজক বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি। অংশীদার হিসেবে আরো আছে বেসিস, বাক্কো, ই-ক্যাব এবং আইএসপিএবি। এ বিশ্ব সম্মেলনের এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘আইসিটি দ্য গ্রেট ইকুলাইজার’।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী আজ রাজধানীর প্যান-প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের পদ্মা হলে “মিট দ্য প্রেস” অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব তথ্য জানান।
তিনি আরও জানান ৪ দিনব্যাপী এ সম্মেলনে থাকছে মোট ২৩টি সেমিনার, মিনিস্টেরিয়াল কনফারেন্স, বিটুবি সেশন। অনলাইনে নিবন্ধিত হয়ে এই সেমিনারগুলোতে অংশ নেয়া যাবে।
১১ নভেম্বর মিনিস্টেরিয়াল কনফারেন্সে কি-নোট স্পীকার হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন।
প্রতিদিন সেমিনারের পাশাপাশি থাকছে বিশেষ আয়োজন। এ বিশেষ আয়োজনে প্রথম দিন থাকবে “ডিজিটাল বাংলাদেশ নাইট”। ডিজিটাল বাংলাদেশ নাইটে বাংলাদেশের বিগত ১২ বছরের তথ্য-প্রযুক্তিতে অগ্রগতির সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।
১২ নভেম্বর, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে স্বাধীন সর্বোভৌম রাষ্ট্র ও তথ্য প্রযুক্তিতে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর গৃহিত উদ্যেগসমূহ উপস্থাপন করা হবে। এ দিনে ‘অ্যাসোসিও অ্যাওয়ার্ড নাইট’ অনুষ্ঠানে এশিয়া-ওশেনিয়া অঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তিতে বিশেষ অবদানের বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করা হবে।
১৩ই নভেম্বর, সন্ধ্যায় স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের অগ্রগতি, অর্জন-গৌরবের বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে। এ দিন ‘উইটজা আইসিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড নাইট’ অনুষ্ঠানে সারা বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তিতে বিশেষ অবদানের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি এবং সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করা হবে ।
১৪ই নভেম্বর অনুষ্ঠানের সমাপনী দিনে, ডব্লিউসিআইটি এর রজত জয়ন্তী উদযাপিত হবে। ৪ দিনব্যাপী এ বিশ্ব সম্মেলনের বিভিন্ন সেমিনারে অংশগ্রহণ করবেন সারাবিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিভিন্ন সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিবর্গ।
সংবাদ সম্মেলনে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন বিগত প্রায় ১৩ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশের যে অর্জন তা এই সম্মেলনের মাধ্যমে বহির্বিশ্বে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ হিসেবে ব্র্যান্ডিং করার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি ঐতিহাসিক রূপকল্প ঘোষণা করেছিলেন, সেটি ছিল ২০২১ সালে বাংলাদেশ যখন স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করবে তখন বাংলাদেশ হবে প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা, ডিজিটাল বাংলাদেশের আর্কিটেক্ট, সজীব ওয়াজেদ জয়ের সুদক্ষ নেতৃত্বে মাত্র ১২ বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত করা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন আইসিটির শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের শোষণমুক্ত সোনার বাংলার আধুনিক রূপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ আর কল্পনা নয়, বাস্তবে রূপান্তরিত হয়েছে।
পলক বলেন প্রযুক্তির অলিম্পিক খ্যাত “ডব্লিউসিআইটি ২০২১” আমরা আয়োজন করতে যাচ্ছি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, বাণিজ্য, প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং বিচারিককার্যে বৈষম্য দূর করা এবং বাংলাদেশকে শ্রমনির্ভর অর্থনীতির দেশ থেকে একটি প্রযুক্তি ও মেধা নির্ভর ডিজিটাল অর্থনীতিতে রূপান্তর করতে আইসিটিকে শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছি। বিগত ১২ বছরে আইসিটি খাতে সঠিক অবকাঠামো গড়ে তোলার কারণে কোভিড-১৯ মহামারীতেও প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে সবকিছু সচল রাখা সম্ভব হয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্মেলনটির বিভিন্ন অংশ উপভোগ করার জন্য অ্যাপ উন্মুক্ত করা হয়েছে। গুগল প্লে স্টোর ও আইফোনের অ্যাপ স্টোর থেকে “WCIT 2021” নামের অ্যাপটি বিনামূল্যে ডাউনলোড করা যাবে। তবে ব্যবহারের পূ্র্বে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে। এছাড়াও www.wcit2021.com.bd ওয়েবসাইট ভিজিট করে ভার্চুয়ালি সম্মেলন ও প্রদর্শনী ঘুরে আসা যাবে। ফিজিক্যাল এবং অনলাইন রেজিস্ট্রেশন-সহ ডব্লিউসিআইটি সম্মেলনের যাবতীয় তথ্য www.wcit2021.org.bd ওয়েবসাইটটিতে পাওয়া যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক ড. মোঃ আব্দুল মান্নান, বিসিএসের সভাপতি মো: শাহিদ-উল-মুনীর। এছাড়া ওয়ার্ল্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেস অ্যালায়েন্স এর সেক্রেটারী জেনারেল মি: জেমস এইচ পয়সান্ট অনলাইনে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন।