অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ ১০ থাকা পিসিগুলোতে বিনামূল্যে উইন্ডোজ ১১ এ আপগ্রেড করা শুরু হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে মাইক্রোসফট। এছাড়াও, নতুন পিসিতে উইন্ডোজ ১১ প্রাক-ইনস্টল করা থাকবে বলেও জানিয়েছে মাইক্রোসফট। আগের তুলনায় বর্তমানে কম্পিউটার আমাদের জীবনে আরও বেশি অপরিহার্য হয়ে উঠেছে, ফলে নিরাপদ এবং মানুষকে আরও কার্যক্ষম ও সৃজনশীল করে তোলার মতো করে উইন্ডোজ ১১ ডিজাইন করা হয়েছে।
এ সম্পর্কে মাইক্রোসফট বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউসুপ ফারুক বলেন, “কোটি কোটি মানুষের কাজের, কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছানোর এবং প্রিয় মানুষের সাথে সংযুক্ত হওয়ার চমৎকার একটি প্ল্যাটফর্ম এই উইন্ডোজ ১১- কে পরবর্তী প্রজন্মের উইন্ডোজের সূচনা হিসেবে বিচেচনা করা যায়। উইন্ডোজ ১১ -এর মাধ্যমে আমরা ব্যবহারকারীদের পূর্ণাঙ্গ অভিজ্ঞতাকে নতুন করে সাজিয়েছি, যা আপনাকে আপনার পছন্দের জিনিসের আরও কাছাকাছি নিয়ে যাবে, সৃষ্টিশীল হতে সহায়তা করবে এবং নতুন কিছু তৈরিতে অনুপ্রেরণা দিবে। এটি উন্মুক্ত একটি প্ল্যাটফর্ম, যা আমাদের পার্টনার ও ব্যবহারকারীদের ফর্ম ফ্যাক্টরস, স্টাইল ও ফিচারের মাধ্যমে বিস্তৃত ডিভাইস প্রদান করে উদ্ভাবনে সক্ষম করে তোলে। কাজ, শেখা, নতুন কিছু তৈরি করা বা গেমিং করা – এমন যেকোনো কিছুর মাধ্যমেই ব্যবহারকারীরা তা উপভোগ করতে পারবেন। বাংলাদেশে নতুন উইন্ডোজ ১১ আনতে পেরে আমরা আনন্দিত।”
উইন্ডোজ ১১ ব্যবহারকারীদের তাদের পছন্দের কাছাকাছি নিয়ে আসে
উইন্ডোজ ১১ ব্যবহারকারীদেরকে তাদের পছন্দনীয় জিনিসের কাছাকাছি নিয়ে আসে। কর্মক্ষেত্রে, বাসায় অথবা স্কুলে- যেখানেই হোক না কেন, মানুষের জীবনের প্রতিটি অংশে স্বাচ্ছ্যন্দের সাথে অতিবাহিত করতে সহায়তা করার মত করে এটি ডিজাইন করা হয়েছে।
নতুন স্টার্ট মেনু ও টাস্কবার থেকে শুরু করে শব্দ, ফন্ট এবং আইকন পর্যন্ত প্রত্যেক ফিচারে ব্যবহারকারীরা উইন্ডোজ ১১ -এ পাবেন আরও আধুনিক, ফ্রেশ ও চমৎকার অভিজ্ঞতা। কেন্দ্রে থাকা স্টার্ট মেনুর সাহায্যে ব্যবহারকারীরা সহজেই তাদের পছন্দের কনটেন্ট অথবা অ্যাপে যেতে পারবেন। ক্লাউড ও মাইক্রোসফট ৩৬৫ (আলাদাভাবে বিক্রি হয়) এর সাহায্যে তারা সাম্প্রতিক সময়ে যে ফাইল নিয়ে কাজ করেছে তা রিসেন্ট ফাইলে দেখতে পারবেন। এক্ষেত্রে, অ্যান্ড্রয়েড বা আইওএস যে ডিভাইসই হোক না কেন, ব্যবহারকারীরা এ সুবিধাটি গ্রহণ করতে পারবেন।
মাইক্রোসফট টিমস এর চ্যাট’র সাহায্যে ব্যবহারকারীরা তাদের প্রিয় মানুষের সাথে সংযুক্ত থাকার চমৎকার একটি অভিজ্ঞতা নিতে পারবেন। উইন্ডোজ, ম্যাক, এন্ড্রয়েড অথবা আইওএস যেকোনো ডিভাইস অথবা প্ল্যাটফর্মে থাকা ব্যবহারকারীই শুধু একটি ক্লিকের মাধ্যমেই ব্যাক্তিগত কন্টাক্টে থাকা মানুষের সাথে চ্যাট, ভয়েস ও ভিডিও কলের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারবেন। এছাড়াও, এআই এর সাহায্যে তৈরি পার্সোনালাইজড ফিড উইজেট দিয়ে ব্যবহারকারীরা তাদের চাহিদা অনুযায়ী দ্রুত তথ্য পাবেন।
কার্যক্ষম ও সৃজনশীল যাত্রায় নতুন এক অভিজ্ঞতা
স্কুল প্রজেক্ট, কাজের জন্য প্রেজেন্টেশন তৈরি করা, নতুন অ্যাপ তৈরি করা অথবা নতুন আইডিয়া নিয়ে আসা – সবক্ষেত্রেই উইন্ডোজ ১১ ব্যবহারকারীদেরকে চমৎকার নতুন একটি অভিজ্ঞতা দিবে। এর স্ন্যাপ লে-আউট ও গ্রুপস এর মত ফিচারের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা আরও দুর্দান্তভাবে মাল্টি-টাস্কিং করতে পারবেন এবং এটি দৃশ্যত আরও স্পষ্টভাবে স্ক্রিন রিয়েল এস্টেট অপ্টিমাইজ করে। এর ডেস্কটপ মেনুর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ব্যক্তিগত ডেস্কটপ তৈরি করতে পারবেন, যার বিভিন্ন অ্যাপ তাদেরকে আরও গোছানো ও মনযোগী হতে সাহায্য করবে।
উইন্ডোজ ১১ উন্নয়নের শুরু থেকে অ্যাক্সেসিবিলিটি’র বিষয়ে বিবেচনা করা হয়েছিল। এটি ব্যবহারকারীদের সহায়তা করতে ন্যারেটর, ম্যাগনিফায়ার, ক্লোজড ক্যাপশন এবং উইন্ডোজ স্পিচ রিকগনিশনের মত পরিচিত সহায়ক প্রযুক্তি প্রদান করে। মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ১১ তে টাচ এবং ভয়েস টাইপিংয়ের অভিজ্ঞতাও উন্নত করেছে।
গেমিংয়ের উপযোগী উইন্ডোজ ১১
উইন্ডোজ ১১ গেমিংয়ের জন্য উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে। এর অত্যাধুনিক উদ্ভাবনী ফিচার ব্যবহারকারীদের পিসি গেমিং অভিজ্ঞতায় নতুন মাত্রা যোগ করবে। বিস্তৃত রেঞ্জের কালার ও ব্রাইটনেস প্রদান করে এই অপারেটিং সিস্টেম এইচডিআর-সক্ষম ডিসপ্লের পিসিকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ১০০০ ডাইরেক্টএক্স ১১ ও ডাইরেক্টক্স ১২ – এ আপগ্রেড করবে। মাইক্রোসফট গেমারদের পছন্দকে গুরুত্ব দেয়, তাই উইন্ডোজ ১১ -এ গেম অনুসারে অটো এইচডিআর চালু ও বন্ধের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
উইন্ডোজ ১১ এ ডিরেক্টস্টোরেজ’র সাপোর্ট সংযোজন করা হয়েছে, যে ফিচারটি প্রথম এক্সবক্স সিরিজ এক্স ও এক্সবক্স সিরিজ এস কনসোলে চালু করা হয়েছিল। এনভিএমই সলিড-স্টেট ড্রাইভ ও ডাইরেক্টএক্স ১২ জিপিইউ’র সাথে যুক্ত হলে ডিরেক্টস্টোরেজের গেমগুলো হ্রাসযোগ্য লোডের সুবিধা নিতে পারে এবং আরও নিখুঁত ও বিস্তৃত আকারে গেম ডেলিভার করতে পারে।
ভবিষ্যতের জন্য হাইব্রিড জনশক্তি ও ক্লাসরুম
এছাড়াও, মাইক্রোসফট বিশ্বাস করে, উইন্ডোজ ১১ হাইব্রিড কাজ ও শেখার জন্য উপযোগী একটি অপারেটিং সিস্টেম। এটি সামঞ্জস্যপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক এবং উইন্ডোজ ১০ এর ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে যা তথ্য প্রযুক্তিগত কাজ পরিচালনা সহজ করবে। ব্যবহারকারীদের নতুন কাজের পরিবেশ ও এর বাইরের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উইন্ডোজ ১১ চিপ-টু-ক্লাউড সুরক্ষার উপযোগী করে ডিজাইন করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো আজ থেকেই শক্তিশালী কম্পিউটারে উইন্ডোজ ৩৬৫ অথবা আজুর ভার্চুয়াল ডেস্কটপ সহ ক্লাউডের সাহায্যে উইন্ডোজ ১১ এ আপগ্রেড করা শুরু করতে পারবে।
উইন্ডোজ ১১ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন – www.microsoft.com/en-us/windows/windows-11 ।