বিশ্বজুড়ে চলমান সংকট নিরসনে চিপ উৎপাদন ও এর সঙ্গে জড়িত প্রযুক্তির উন্নয়নে কাজ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত দুটি গাড়ি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফোর্ড ও জেনারেল মোটরস (জিএম)।
উৎপাদন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গ্লোবাল ফাউন্ড্রিজের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে ফোর্ড। এক ঘোষণায় প্রতিষ্ঠানটি এ কথা জানায়। নন-বাইন্ডিং এ চুক্তিতে চিপ উৎপাদনের বিষয়ে খুব সামান্য কথা থাকলেও একটি বিষয়ের পরিকল্পনা পরিষ্কার। প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরেই চিপ উৎপাদন ও এর প্রযুক্তির উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্বে চিপ সংকট চলমান। প্রথমে গাড়ি উৎপাদন শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ধীরে ধীরে তা ভোক্তা পণ্য, স্মার্টফোন ও কম্পিউটার শিল্পেও প্রভাব ফেলতে শুরু করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কম্পিউটারের মাদারবোর্ড, প্রসেসর, গ্রাফিকস প্রসেসিং ইউনিট, স্মার্টফোন, স্মার্টটিভিসহ বিবিধ ইলেকট্রনিক পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করে।
চিপ উৎপাদনে নতুন কোনো কেন্দ্র স্থাপন না করার কথা উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠান দুটি জানায়, বিশ্বের গাড়ি উৎপাদন শিল্পকে সহযোগিতার লক্ষ্যে তারা উন্নত প্রযুক্তিতে চিপ উৎপাদনের সম্ভাব্য সব পন্থার খোঁজ করবে। অন্য এক অনুষ্ঠানে জিএমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক রিউস বলেন, নতুন চিপ উৎপাদনে আমরা কোয়ালকম, টিএসএমসিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের কাছে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে ফোর্ডের ভেহিকল এমবেডেড সফটওয়্যার অ্যান্ড কন্ট্রোল বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট চাক গ্রে জানান, আমাদের বিশ্বাস আমরা একই সঙ্গে উৎপাদিত পণ্যের কার্যক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রযুক্তিগত স্বাধীনতাও বিস্তৃত করতে পারব।
ট্রেন্ডফোর্সের তথ্যানুযায়ী, ২০০৯ সালে এএমডি থেকে গ্লোবাল ফাউন্ড্রিজ আলাদা হয়ে যায়। টিএসএমসি, স্যামসাং ও ইউএমসির পর প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম চিপ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি এএমডি, কোয়ালকম এমনকি স্যামসাংয়ের জন্যও চিপ উৎপাদন করে থাকে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গাড়িতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে চিপের চাহিদা বেড়েছে। তবে কিছু প্রতিষ্ঠান পুরনো ও সাশ্রয়ী প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে এবং অ্যাপল বা এনভিডিয়ার মতো প্রতিষ্ঠানের তুলনায় কম সরবরাহ চাহিদা গ্রহণ করে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রে চিপ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে উৎপাদন কার্যক্রমে সরকারি সহায়তা ও অনুদান পেতে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের উদ্যোগ অব্যাহত রেখেছে। তবে এসব উদ্যোগ কার্যকরে আরো ১০ বছরের বেশি সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ফোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জিম ফারলে বলেন, চলমান সংকট নিরসনে কিছু পন্থা রয়েছে। বিশেষ করে একক উৎপাদনের ক্ষেত্রে আমরা রেনেসাস নাকার চিপ কারখানা ব্যবহার করতে পারি। তাদের চিপ ব্যবহার করে আমরা কিছু বাফার স্টক চালু করতে পারি। এসব চিপ ব্যবহার আদর্শ না হলেও একেবারে খালি হাতে বসে থাকার চেয়ে উত্তম।