ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, পাকিস্তানি দোসরদের উত্তরসূরিরা দেশে ও দেশের বাইরে থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এখনো যড়যন্ত্র করছে। পঁচাত্তরের প্রলয়ংকরী ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে দেশে ও দেশের বাইরে ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে। এসব ষড়যন্ত্রকারিদের বিরুদ্ধে সকল শক্তিকে সজাগ থাকতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে যার যা কিছু ছিলো তাই নিয়ে এ দেশের মানুষ যুদ্ধ করেছে। বঙ্গবন্ধু বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা আইটিও এবং ইউপিইউ সদস্য পদ অর্জন, টিএন্ডটি বোর্ড গঠন, কারিগরি শিক্ষায় গুরুত্বারোপ কিংবা প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করে দেখিয়ে গেছেন বাংলাদেশ এ পথেই যাবে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৮ বছরে বাংলাদেশকে বিশ্বে উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তর মিলনায়তনে মুজিবশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তর আয়োজিত আলোচনা সভা ও প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য বঙ্গবন্ধু ও বিজয় দিবস শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো: খলিলুর রহমান অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন।
টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: কামরুজ্জামান-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: সিরাজ উদ্দিন, বিটিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. রফিকুল মতিন, সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমান এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের যুগ্মসচিব মুহাম্মদ আবদুল হান্নান বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের জেনারেল ম্যানেজার এবং বিসিএস টেলিকম ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো: আবু তালেব মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
মন্ত্রী ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীন সকল দপ্তর ও সংস্থাকে ডিজিটাল প্রযুক্তি নির্ভর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় চলমান অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করতে আরও আন্তরিকতা ও দক্ষতার সাথে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, জ্ঞান ভিত্তিক ডিজিটাল সাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের দায়িত্ব অপরিসীম। ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত মোস্তাফা জব্বার বলেন, করোনাকালে ডিজিটাল কানেক্টিভিটি সচল রাখতে দিনরাত কাজ করেছি-লড়াই করেছি। আমরা ডিজিটাল কানেক্টিভিটির মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবন যাত্রা সচল রেখেছি। ফাইভ-জি প্রযুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিতে আমাদের কাজ করতে হবে।
শিক্ষায় ডিজিটাল রূপান্তরের পথপ্রদর্শক মোস্তাফা জব্বার শিশুদের চোখের দিকে তাকালে বাংলাদেশের আগামী দিন দেখতে পান উল্লেখ করে বলেন , ‘ আমাদের শিশুদের জন্য যে সময় দিয়েছি, এটা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা জব্বার বলেন, এদেশের কিছু পাকিস্তানি দোসর রাজাকার, আলবদর আলশামস ছাড়া প্রতিটি মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুদ্ধ করেছে। এ দেশের মায়েরা নিজেরা না খেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার দিয়েছেন, আশ্রয় দিয়েছেন এমনকি ৫বছরের শিশুরাও হানাদার বাহিনীর গতিবিধির সংবাদ বহন করে মুক্তিযোদ্ধাদের পৌঁছে দিয়েছেন। পরোক্ষ যোদ্ধা হিসেবে তাদেরও স্বীকৃতি পাওয়া উচিৎ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
২৫ মার্চ রাতে টেলিগ্রাম বার্তার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঐতিহাসিক ঘোষণার বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠ শুনতে পাইনি কিন্তু তার নামের উপর, তার নির্দেশ মেনে আমরা যুদ্ধ করেছি। যার যা কিছু ছিলো তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করেছি।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় ডাক ও টেলিযোগাগ সচিব তৎকালীন গোপালগঞ্জ মহকুমায় মিশনারি স্কুল পরিদর্শনকালে বঙ্গবন্ধু হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর দৃষ্টিতে পড়েন উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হোসেন সোহরাওয়ার্দী সাহেব চিনতে ভুল করেননি, আমরাও চিনতে ভূল করিনি। তিনি তার যোগ্যতা ও নেতৃত্বের দৃঢ়তা মানুষের প্রতি তার অকৃত্রিম ভালবাসার গুণেই জাতির দিশারীর আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পিতার কাছ থেকে নেতৃত্বের সে যোগ্যতা অর্জন করেছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারলে আমরা সফল হবো। আমরা সফল হলে জাতি সফল হবে।
অনুষ্ঠানে রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।