ব্যক্তিগত ডাটার সুরক্ষা নিয়ে বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর প্রতি আস্থা নেই সংখ্যাগরিষ্ঠ আমেরিকানের। কিন্তু এসব সেবা গ্রহণ ছাড়া তাদের কাছে কোনো বিকল্প নেই। ওয়াশিংটন পোস্ট ও স্কার স্কুলের নতুন এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর ডেইলি ডট।
গত নভেম্বরে প্রাপ্তবয়স্ক ১ হাজার ১১২ জন আমেরিকানের ওপর জরিপটি চালানো হয়েছে। তারা বলছেন, প্রযুক্তি জায়ান্টগুলোর ওপর বেশকিছু ইস্যুতে আস্থার ঘাটতি রয়েছে। কীভাবে তাদের অনলাইন তত্পরতা নজরদারির আওতায় যাচ্ছে কিংবা মনিটাইজ হচ্ছে, সে ব্যাপারে ব্যবহারকারীদের সীমিত নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি তাদের জন্য উদ্বেগের।
ওয়াশিংটন পোস্ট ও স্কার স্কুলের জরিপে দেখা গেছে, ফেসবুক ও টিকটকের সেবা নিয়ে অধিকাংশ আমেরিকানের আস্থার সংকট রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে আন্তঃসম্পর্কিত বিশ্বে তাদের এড়িয়ে চলা প্রায় অসম্ভব বলে মনে করছেন তারা। এর সমাধান হিসেবে ৬৪ শতাংশের দাবি ক্রমবর্ধমান সরকারি নীতিমালা।
সব প্রযুক্তি কোম্পানিকে অবশ্য সমান চোখে দেখছেন না মার্কিনরা। নয়টি শীর্ষ কোম্পানিতে ব্যক্তিগত তথ্য ও ডাটার সুরক্ষা নিয়ে তাদের আস্থা কতটুকু—এমন প্রশ্নের জবাবে ৭২ শতাংশ জানান, ফেসবুকে তাদের তেমন আস্থা নেই কিংবা একেবারেই আস্থা নেই।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অনাস্থার প্লাটফর্ম হচ্ছে টিকটক। বাইটড্যান্স মালিকানাধীন ভিডিও স্ট্রিমিং প্লাটফর্মটিতে ডাটা সুরক্ষা নিয়ে অনাস্থা প্রকাশ করেছেন ৬৩ শতাংশ। তৃতীয় ও চতুর্থ অনাস্থার প্লাটফর্ম হচ্ছে মেটা নিয়ন্ত্রণাধীন ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ। তার পরেই রয়েছে ইউটিউব, গুগল, মাইক্রোসফট ও অ্যাপল। শীর্ষ কোম্পানিগুলোর মধ্যে অ্যামাজন নিয়ে মাত্র ৪০ শতাংশ মার্কিন উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
আরো বেশ কয়েকটি প্রশ্নে ব্যবহারকারীদের নেতিবাচক উত্তর দিতে দেখা গেছে। সমাজে ফেসবুকের মতো সোস্যাল মিডিয়ার ইতিবাচক প্রভাব আছে কিনা, এ প্রশ্নে মাত্র ১০ শতাংশ ইতিবাচক উত্তর দিয়েছেন। বিপরীতে ৫৬ শতাংশ বলেছেন, সমাজে নেতিবাচক প্রভাব রাখছে ফেসবুক। যারা প্রতিদিন ফেসবুক ব্যবহার করছেন বা তিনবারের বেশি লগইন করছেন, তারা বলছেন সোস্যাল নেটওয়ার্কটির ইতিবাচকের চেয়ে নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের প্রতি ১০ জনের সাতজনই মনে করেন, ফোন ও অন্যান্য ডিভাইস তাদের অনেক তথ্য ও ডাটা মজুদ ও শেয়ার করছে, যাতে তাদের সম্মতি নেই। এ ধরনের ডাটা সংগ্রহ ও সরবরাহের মাধ্যমে তাদের যে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের লক্ষ্যবস্তু বানানো হচ্ছে, তাতে বিরক্তি প্রকাশ করেন তারা। প্রতি ১০ জনের আটজনই জানিয়েছেন, তারা ওই বিজ্ঞাপন দেখেন। তবে ৮২ শতাংশ এটাকে বিরক্তিকর বলছেন। ব্যক্তিগত পরিসরে হানা হিসেবে দেখছেন ৭৪ শতাংশ। অন্তত ৬৬ শতাংশ বলছেন, যে লক্ষ্যে বিজ্ঞাপন দেখানো হচ্ছে, তাতে এটা (জোরপূর্বক দেখানো) সহায়তা করে না। ব্যক্তিগত ডাটা হাতিয়ে নিয়ে প্লাটফর্মগুলোর ফ্রি সার্ভিস গ্রহণ ন্যায্য নয় বলে মনে করছেন ৭৩ শতাংশ মার্কিন। ২০১২ সালে একই প্রশ্ন করা হলে মাত্র ১৫ শতাংশ এমন মত জানিয়েছিলেন।