কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব এবং চীনের অন্যতম প্রধান শিল্প কেন্দ্রে কঠোর লকডাউনের ফলে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছে বিশ্বের দুই শীর্ষ মাইক্রোচিপ উৎপাদক প্রতিষ্ঠান।
চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর জিয়ানে করোনাভাইরাস মহামারীর সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির ফলে সেখানে কার্যক্রমে পরিবর্তন আনতে হয়েছে বলে জানিয়েছে চিপ উৎপাদক প্রতিষ্ঠান স্যামসাং ও মাইক্রন। কোভিড পরিস্থিতির কারণে কর্তৃপক্ষ সেখানে যে ব্যাপক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তা মহামারীর মূল কেন্দ্র উহানের পর সবচেয়ে কঠোর বলে উঠে এসেছে সিএনএন-এর প্রতিবেদনে।
মাইক্রোচিপ শিল্পে শহরটির উৎপাদন ক্ষমতায় যে কোনো রকম আঘাত সরাসরি বিশ্বব্যাপী চিপ ঘাটতির ওপর প্রভাব ফেলবে। এই ঘাটতির রেশ গিয়ে ঠেকবে আইফোন থেকে নতুন গাড়ি উৎপাদন পর্যন্ত।
জিয়ানের কারখানায় উৎপাদন প্রক্রিয়া সাময়িকভাবে সমন্ময় করতে হয়েছে বলে বুধবার জানিয়েছে স্যামসাং। শহরে নিজেদের কর্মীদের সুরক্ষাকে “সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার” হিসেবে বর্ণনা করে দক্ষিণ কোরিয়ান এই প্রযুক্তি জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানটি আরও যোগ করেছে, প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠানটি তাদের “বৈশ্বিক উৎপাদন নেটওয়ার্ককে কাজে লাগানো থেকে শুরু করে সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা” নেবে, যাতে গ্রাহকরা প্রভাবিত না হন।
জিয়ানের উৎপাদন কেন্দ্রে স্যামসাং এক হাজার কোটি ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করেছে। তিন হাজার তিনশ’ কর্মীর ওই কারখানা থেকে স্যামসাংয়ের বৈশ্বিক ন্যান্ড মেমরি চিপের শতকরা ৪০ শতাংশ উৎপাদিত হয়। স্মার্টফোন, ট্যাবলেট এবং হার্ড ড্রাইভের জন্য এই চিপ গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
তবে, ওই কারখানায় প্রভাব বিষয়ে বিস্তারিত আর কোনো কোনো তথ্য জানাতে অস্বীকার করেছে স্যামসাং।
এদিকে অপর শীর্ষ চিপমেকার মাইক্রনও জানিয়েছে, জিয়ানের লকডাউন তার মেমরি চিপ উৎপাদনে প্রভাব ফেলতে পারে। মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি এ শহরের কারখানায় কম্পিউটারে ব্যবহার্য ডির্যাম উৎপাদন করে। লকডাউনের কারণে সম্প্রতি কারখানায় জনবল কমাতে বাধ্য হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
মাইক্রন আরও জানিয়েছে, গ্রাহক চাহিদা পূরণের স্বার্থে প্রতিষ্ঠানটি “বিশ্বব্যাপী সরবরাহ চেইন ও চুক্তিভিত্তিক সরবরাহকারীদের প্রস্তুত থাকতে বলেছে। তবে, প্রতিষ্ঠানটি সতর্ক করে বলেছে, নেটওয়ার্ক সক্রিয় করার প্রক্রিয়ায় কিছুটা দেরি হতে পারে।”
“জিয়ানে নতুন বা আরও কঠোর বিধিনিষেধ এলে সেটি আমাদের কার্যক্রমকে প্রভাবিত করবে এবং সেটি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে উঠতে পারে।” প্রতিষ্ঠানটি কর্মী নিরাপত্তাকে “সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার” হিসেবে বর্ণনা করেছে।
শানসি প্রদেশের প্রাচীন শহর জিয়ানে সর্বশেষ প্রাদুর্ভাবে এক হাজার একশ ১৭ জন আক্রান্তের খবর মিলেছে। কর্তৃপক্ষ শহরজুড়ে কোভিড পরীক্ষা শুরু করেছে এবং গত সপ্তাহে এর এক কোটি ৩০ লাখ বাসিন্দাকে কঠোর লকডাউনে রেখেছে। উহানের লকডাউনে এক কোটি ১০ লাখ বাসিন্দা ঘরবন্দী হয়েছিলেন।