স্মার্টফোন বিক্রিতে গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে শীর্ষস্থান ছিল অ্যাপলের। ২০২১ সালে প্রথম তিন প্রান্তিকে শীর্ষস্থান ধরে রাখলেও শেষ প্রান্তিকে দ্বিতীয় স্থানে নেমে এসেছে স্যামসাং। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যানালিসের প্রতিবেদনে বলা হয়, অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে অ্যাপলের বাজার শেয়ার দাঁড়িয়েছে ২২ শতাংশ। বিপরীতে স্যামসাংয়ের বাজার শেয়ার ২০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। খবর টেক রাডার।
আইফোন ১৩ উন্মোচন ও ছুটির মৌসুমের বিক্রি বৃদ্ধিতে চতুর্থ প্রান্তিকে শীর্ষে উঠে এসেছে অ্যাপল। গত প্রান্তিকে বেশ ধাক্কা খেয়েছে শাওমির মতো চীনা স্মার্টফোন নির্মাতা কোম্পানিগুলো। গত প্রান্তিকে স্মার্টফোন বিক্রিতে তৃতীয় স্থানে নেমে এসেছে চীনা স্মার্টফোন জায়ান্ট শাওমি। এমনকি অপো ও ভিভোর মতো চীনা কোম্পানিরও বিক্রি কমেছে। শাওমি, অপো ও ভিভোর বাজার শেয়ার কমেছে যথাক্রমে ১২, ৯ ও ৮ শতাংশ।
ক্যানালিসের প্রতিবেদনে বলা হয়, সেপ্টেম্বরে বাজারে আইফোন ১৩ উন্মোচনের ফলে স্যামসাংকে বড় ধাক্কা দিতে সক্ষম হয় অ্যাপল। বৈশ্বিক মহামারীর ফলে সরবরাহ চেইনে সংকটের কারণে অ্যাপল তার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা কমালেও প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলোর চেয়ে বাজারে শক্তিশালী অবস্থান ছিল ক্যালিফোর্নিয়ার কুপার্টিনোভিত্তিক কোম্পানিটির। ভারতে তারা একটি আইফোন তৈরির কারখানা স্থাপন করেও চাহিদা পূরণের চেষ্টা চালিয়েছে অ্যাপল। মূল ভূখণ্ড চীনে আইফোনের বিক্রি বৃদ্ধি অ্যাপলের বৈশ্বিক বাজার শেয়ার বেড়েছে।
২০২১ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে স্যামসাংয়ের বাজার শেয়ার ২০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। শীর্ষস্থান হারালেও তৃতীয় প্রান্তিকের তুলনায় স্যামসাংয়ের বাজার শেয়ার কমেছে। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে স্যামসাংয়ের বাজার শেয়ার ছিল ১৭ শতাংশ।
বিদায়ী বছরের শেষ প্রান্তিকে শীর্ষ স্মার্টফোন বিক্রেতার তালিকায় যে রকম উত্থান-পতন হয়, নতুন বছরের প্রথম প্রান্তিকেও এ ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০২২ সালের প্রথম প্রান্তিকে চীনা কোম্পানিগুলো বেশকিছু ফ্ল্যাগশিপ ফোন আনতে যাচ্ছে। শিগগিরই শাওমি ১২ সিরিজের ফোন বাজারে উন্মোচন হবে। এছাড়া অপো, ভিভো, ওয়ানপ্লাস ও রিয়েলমির মতো বেশকিছু স্মার্টফোন আনছে। দুটি ফোল্ডেবল ফোন দিয়ে প্রিমিয়াম স্মার্টফোনের বাজারে শক্তিশালী অবস্থানের পর গ্যালাক্সি এস২২ সিরিজের ফোন আনতে যাচ্ছে স্যামসাং।
প্রথম প্রান্তিকে অ্যাপল যেহেতু নতুন কোনো স্মার্টফোন আনছে না, সে কারণে শীর্ষস্থান ধরে রাখা প্রায় অসম্ভব বলেই মনে হচ্ছে। তবে আইফোন এসই ফোন উন্মোচনের ফলে এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে ফের শক্তিশালী অবস্থান করতে পারে অ্যাপল। মাঝারি দামের ফোন হওয়ায় এটি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বেশ সাড়া ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
স্মার্টফোন কোম্পানিগুলোর মাথাব্যথা হিসেবে থাকছে চিপ সংকট। চলতি বছরের শেষ নাগাদ এ স্বল্পতা বহাল থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কোয়ালকম, স্যামসাং ও মিডিয়াটেকের মতো সেমিকন্ডাক্টর নির্মাতা জায়ান্ট নতুন চিপ নিয়ে আসছে। সামনের প্রান্তিকগুলোয় নতুন ফ্ল্যাগশিপ চিপ নিয়ে শক্তিশালী স্মার্টফোন আনতে যাচ্ছে নির্মাতা কোম্পানিগুলো।