রাস্তাঘাটে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য রোবট নামল জাপানের রাস্তায়। দেশটির সিকম নামক এক নিরাপত্তা সংস্থা এমনই একটি রোবট তৈরি করেছে, যা উন্মুক্ত স্থানের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার কাজটি নিশ্চিত করছে। রোবটের নাম কোকোবো।
এআই বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ওপর ভিত্তি করে কাজ করতে সক্ষম এই রোবট নিরাপত্তাকর্মীর পরিবর্তে টহলদারি ও এলাকা পরিদর্শনের কাজ করছে জাপানে। এই রোবটের সর্বোচ্চ স্পিড ঘণ্টায় ৬ কিলোমিটার। ভিজ্যুয়াল, অডিও ও স্মোক ওয়ার্নিং পর্যন্ত দিতে পারে কোকোবো নামের রোবটটি। অপরাধী ও সন্দেহজনক কাউকে কাটিংএজ প্রযুক্তির সাহায্যে ধরতে পারে রোবটটি।
মানুষের বন্ধুর মতোই কাজ করে কোকোবো
জাপানের প্রযুক্তি বিষয়ক সংবাদমাধ্যম ডিজাইনবুমের একটি রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, কোকোবো নামের রোবটটি ডেভেলপ করা হয়েছে সিকমের ডিজাইন ফ্যাক্টরিতে। কোটা নেজু অফ জুঙ্গ ডিজাইন ও লোফ্টওয়ার্কের সহযোগিতায় এই রোবটটি তৈরি করেছে সিকম।
উন্মুক্ত স্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্য, মর্যাদা ও বন্ধুত্বের মতো ধারণাগুলোর ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে এই রোবটগুলো। যাতে কোকোবো দৈনন্দিন জীবনে দক্ষতার সঙ্গে একত্রিত হতে পারে। কগনিটিভ কোঅপারেশন রোবট থেকেই এই কোকোবো নামটি এসেছে। প্রযুক্তিগত প্রাণী যাতে মানুষের সঙ্গে মিশে তার দৈনন্দিন কাজে সহযোগিতা করতে পারে, সেই ভাবনা থেকেই কোকোবো নামটি দেওয়া হয়েছে বলে জানালেন রোবটের নির্মাতারা।
যেভাবে কাজ করে
টহলদারির রাস্তায় স্বয়ংক্রিয়ভাবেই চলতে পারে কোকোবো। এর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিশ্লেষণটি অনবোর্ড ক্যামেরার সাহায্যে তোলা চিত্রগুলোতে রিয়্যাল-টাইম ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। নোংরা থেকে শুরু করে যাবতীয় পরিত্যক্ত বস্তু শনাক্তকরণে সক্ষম এটি। কোকোবোর সর্বোচ্চ স্পিড ঘণ্টায় ৬ কিলোমিটার ও পদক্ষেপ ৫০ মিমি পর্যন্ত।
ওয়াটারপ্রুফ এই রোবট বাইরে ও দুর্গম রাস্তায় ছুটতে পারে। স্বয়ংক্রিয়ভাবেই এটি রাস্তায় বিভিন্ন বাধা চিহ্নিত করে সংঘর্ষ এড়িয়ে চলতে পারে। টানা ৩ ঘণ্টা ব্যাটারি ব্যাকআপ দিতে পারে কোকোবো। এছাড়াও এনার্জি লেভেল মনিটরের মাধ্যমে এটি প্রয়োজনের সময় নিজে থেকেই চার্জিং স্ট্যান্ড ফিরিয়ে দিতে পারে।
যেভাবে চোর ধরে
সন্দেহজনক ব্যক্তি চিহ্নিত করতে পারলে অডিও এবং ভিজ্যুয়াল সতর্কতা দেয় কোকোবো। আবার সেই সন্দেহজনক ব্যক্তির পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে এটি ধোঁয়া ছেড়ে তাকে বাধাও দিতে পারে।
কোকোবোর পরিদর্শন কাজের সময়, বিশেষ করে বেঞ্চের নীচে বা ভেন্ডিং মেশিনের পিছনে বা নীচের মতো জায়গাগুলো পরিদর্শনের জন্য একটি বাহু সংযুক্ত করা যেতে পারে যেখানে পৌঁছনো কঠিন।
এছাড়াও কোকোবোর ক্লাউডে বিভিন্ন ডেটার অ্যাকসেস রয়েছে। যেমন- নিরাপত্তা ব্যবস্থা, নজরদারি ক্যামেরার ফুটেজ, লিফট, বৈদ্যুতিক লক ও এলাকার অন্যান্য সুবিধা সম্পর্কেও একাধিক তথ্য তার নখদর্পণে। মানুষের সহযোগিতায় এই নতুন রোবটটি বড় আকারের নিরাপত্তার ক্রিয়াকলাপে দক্ষ ও গুণমানের উন্নতি উপলব্ধি করতে সক্ষম।