দক্ষিণ এশিয়ায় এনবি-আইওটি নেটওয়ার্ক সুবিধা চালু করা শীর্ষ অপারেটরের মধ্যে গ্রামীণফোনকে স্বীকৃতি দিল মোবাইল অপারেটরদের বৈশ্বিক সংগঠন ‘জিএসএমএ’। পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রথম টেলিকম অপারেটর হিসেবেও এ স্বীকৃতি অর্জন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এই স্বীকৃতি একই সঙ্গে বাংলাদেশ ও গ্রামীণফোনকে আইওটির বিশ্ব মানচিত্রে জায়গা করে দিয়েছে।
সোমবার গ্রামীণফোনের এক্সটার্নাল কমিউনিকেশন্সের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মুহাম্মদ হাসান এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ন্যারো ব্যান্ড ইন্টারনেট অব থিংস (এনবি-আইওটি) এক ধরনের অত্যাধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তি যা প্রতিদিন ওয়েস্ট বিন ও পাওয়ার মিটারের মতো সারাদেশে কোটি মানুষের জন্য যোগাযোগে সংযোগ নিশ্চিত করে। এনবি-আইওটি অনেক বেশি জ্বালানিসাশ্রয়ী। নিয়মিত ফোরজি যোগাযোগে যে ব্যান্ডউইথ প্রয়োজন হয় এনবি-আইওটি প্রযুক্তিতে তা হবে অনেক সাশ্রয়ী।
অর্থাৎ, সেন্সর ও মিটারের কাভারেজ থাকবে এমন সব রিমোট জায়গাতেও যেখানে ফোনকল করতেও সমস্যা হতে পারে সেখানে এনবি-আইওটি খুব সহজেই সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করবে। এর মাধ্যমে পাইপ কিংবা নালায় স্থাপিত ওয়াটার মিটার কিংবা বেজমেন্টে গাড়ি পার্কিংয় সেন্সরও এখন থেকে নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করা যাবে।
গ্রামীণফোন বিদ্যমান ফোরজি নেটওয়ার্কের সঙ্গে এনবি-আইওটির সক্ষমতা বৃহৎ পরিসরে আইওটি যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, ইউটিলিটি ও মিউনিসিপ্যালিটিকে আইওটি যোগাযোগে আলাদা নেটওয়ার্ক তৈরি ও চালনার প্রয়ােজন হবে না। তার বদলে তারা গ্রামীণফোনের উন্নতমানের আইওটি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারবে। স্মার্ট ইলেকট্রিসিটি/গ্যাস/ওয়াটার ইটারিং, সিটি পার্কিং, সিটি লাইটিং, যানবাহনে এই নেটওয়ার্কে যুক্ত করে বিভিন্ন শিল্পখাতে অটোমেশন সমাধান করা যাবে।
আইওটি নেটওয়ার্ক সেবার উন্মোচনকালে গ্রামীণফোনের ডেপুটি সিইও ও সিএমও ইয়াসির আজমান বলেন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে আসার ক্ষেত্রে গ্রামীণফোন সবসময়ই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। এনবি-আইওটি নেটওয়ার্ক নিয়ে আসার ক্ষেত্রে এশিয়ার অপারেটরদের মধ্যে অন্যতম হতে পেরে আমরা অত্যন্ত গর্বিত। আইওটি ও এআই একসঙ্গে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সমৃদ্ধি এবং কার্যদক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। এ যাত্রা একই সঙ্গে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রয়াস এবং মানুষকে শক্তিশালী নেটওয়ার্কে যুক্ত করার ক্ষেত্রে আমাদের অঙ্গীকারের অংশ।
নিকট ভবিষ্যতে ফাইভজি প্রযুক্তির সঙ্গে আইওটির সমন্বয় দেশের প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে জানান তিনি।
এ বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি জিএসএমের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৪৫টি দেশের একটি যেখানে এনবি-আইওটি সুবিধাসম্পন্ন বাজার রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় শুধুমাত্র বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কায় এনবি-আইওটি নেটওয়ার্ক রয়েছে।
জিএসএমএ ইন্টেলিজেন্সের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে সেলুলার আইওটি সংযোগ সংখ্যা হবে ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন, যার মধ্যে লাইসেন্সড এলপিডব্লিউএ সংযোগ সংখ্যা হবে ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন।