গত অনেকগুলো মাস সংবাদের শিরোনামে হুয়াওয়ে, ষড়যন্ত্র আর বিতর্ক যেন একে অপরের সাথে জড়িয়ে গিয়েছে। বিশ্বব্যাপী আইসিটি সেক্টরের এই শীর্ষ প্রযুক্তি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জনসাধারণের তির্যক দৃষ্টি পেতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। কারণ প্রথম দিকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আসার সাথে সাথে সমালোচকরাও কোম্পানিটিকেই অভিযুক্ত করতে শুরু করে। কিন্তু সত্য কী?
২০২১ সালে, জাপানি চলচ্চিত্র নির্মাতা রিও তাকেউচি হুয়াওয়ে সম্পর্কে একটি তথ্যচিত্র সিরিজ তৈরি করেন যেখানে তিনি কিছু বিহাইন্ড দ্যা সীন (পর্দার অন্তরালে) ফুটেজ দেখান। নিজ হাতে সম্পূর্ণ সম্পাদকীয় নিয়ন্ত্রণ রেখে তিনি হুয়াওয়ের অসংখ্য কর্মচারীদের সাথে কথা বলেছেন যা তাঁর ‘ফেসেস অফ হুয়াওয়ে’-তে তুলে ধরা হয়েছে।
একাধিক চীনা এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ‘ফেসেস অফ হুয়াওয়ে’ সিরিজটির দ্বিতীয় সিজন চালু করা হয় এই শুক্রবারে, ২৫শে ফেব্রুয়ারিতে। এর আগে গত বছর মার্চ মাসে তিনটি পর্বের ‘ফেসেস অফ হুয়াওয়ে’-এর প্রথম সিরিজটি আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে প্রকাশ করা হয়। সেই সময় এই সিরিজটি দর্শক ও সমালোচকদের কাছে অত্যন্ত প্রশংসিত হয়েছিল। তথ্যচিত্রগুলি আট কোটিরও বেশি অনলাইন হিট পেয়েছে এবং জাপানের সবচেয়ে বেশি পরিদর্শন করা ওয়েবসাইট ইয়াহু! জাপান -এর প্রথম পৃষ্ঠাতেও জায়গা করে নিয়েছে।
নতুন পর্বে, রিও তাকেউচি দেখিয়েছেন কানাডায় প্রায় তিন বছর গৃহবন্দি থাকার পর হুয়াওয়ের সিএফও মেং ওয়ানঝু-এর নিজের দেশ চীনে ফিরে আসা। তাকেউচি ও তার টিম শানজি কয়লা খনি পরিদর্শন করে আরও দেখিয়েছেন হুয়াওয়ের হারমনি অপারেটিং সিস্টেম কীভাবে নিরাপত্তাকে আরও উন্নত করেছে, হুয়াওয়ের প্রযুক্তি প্রয়োগ করে থাই স্বাস্থ্যসেবা ও কৃষি খাত কীভাবে উপকৃত হয়েছে এবং কীভাবে জাপানে গ্রিন এনার্জি সল্যুশনস ব্যবহার করা হয়।
এই গল্পগুলি এটাই দেখিয়েছে কীভাবে হুয়াওয়ে মার্কিন এন্টিটি লিস্ট থেকে বাদ পরার সংকটকে প্রযুক্তিগত টার্নিং পয়েন্ট হিসাবে কাজে লাগিয়ে আরও এগিয়ে গেছে। প্রাণবন্ত ও অত্যন্ত অনুপ্রেরণামূলক কাজের সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত এই কোম্পানিটি দ্রুত নতুন ব্যবসা এবং এর নিজস্ব ইকোসিস্টেম গড়ে তুলেছিল। ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি এবং প্রতিভা বিকাশের প্রতি গভীর মনোযোগ দেয়ার মাধ্যমে হুয়াওয়ে টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশগত বৈচিত্র্য এবং মহামারীর প্রভাবকে স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে অগ্রগতি করেছে।
তাহলে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা সহ্য করার পর হুয়াওয়ে এখন কোন অবস্থায় আছে? একটি ‘নেকড়ে’ সংস্কৃতির যে অভিযোগের রয়েছে তার মধ্যেও হুয়াওয়ে ঠিক কীভাবে তার কর্মীদের প্রতিভা বিকাশ করে? এবং এখন থেকে দশ বছর পর, কোন ধরনের প্রযুক্তি আমাদের ভবিষ্যতকে পরিবর্তন করবে? ভিডিওটি দেখা যাবে https://www.facebook.com/392039908040108/posts/1058653894712036/ লিংকে।
দ্রষ্টব্য: রিও তাকেউচি ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে জাপানে এনএইচকে-এর জন্য কাজ করেছেন। ২০০৩ সালে তিনি তার স্ত্রীর সাথে চীনে চলে যান এবং জাপান ও চীন উভয় দেশের উপর তথ্যচিত্র তৈরি করতে শুরু করেন। ২০২০ সালে তিনি একটি দুই-অংশের তথ্যচিত্র চিত্রায়িত করেছিলেন নানজিং সম্পর্কে যেখানে তিনি থাকেন। তিনি দেখিয়েছিলেন কীভাবে নানজিং এবং কোনও মৃত্যু ছাড়াই সফলভাবে করোনভাইরাসের মোকাবেলা করেছিল। এক বছর পরে এই চলচ্চিত্র নির্মাতা কোভিডের বিরুদ্ধে চীনের লড়াই – লং টাইম নো সি, এবং উহান ও চীনের মহামারী পরবর্তী যুগ সম্পর্কে দুটি সমান জনপ্রিয় তথ্যচিত্র তৈরি করেছিলেন।