উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা ৫০ বছর বয়সী শশিকলা চৌরাসিয়া। এখন তার পরিচয় ‘আম্মা কি থালি’র রাঁধুনি। ‘আম্মা কি থালি’ শশিকলার ইউটিউব চ্যানেলের নাম। যেখান থেকে তার মাসে আয় ৭০ হাজার টাকারও বেশি।
তবে কয়েক বছর আগেও শশিকলা জানতেনই না ইন্টারনেট কী। তাদের গ্রামের কেউই অবশ্য জানতেন এ সম্পর্কে। জন্ম খুব সাধারণ পরিবারে হওয়ায় তেমন পড়ালেখা করারও সুযোগ হয়নি তার। মাত্র ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন তিনি। এরপর কম বয়সেই বিয়ে হয়ে যায় তার।
শশিকলার তখন সংসারের কাজ আর তিন ছেলের দেখাশুনা করতেই সময় যেত। দারিদ্র্যের সঙ্গে সব সময় যুদ্ধ করতে হতো তাকে।
কয়েক বছর আগে তাদের গ্রামে ইন্টারনেট সুবিধা এলো। সময়টা ২০১৬ সাল। শশিকলার বড় ছেলে চন্দন তার এক বন্ধুর কাছে শুনেছিল ইন্টারনেটে ভিডিও দিলে নাকি অনেক টাকা পাওয়া যায়। এরপর তিন ভাই মিলে পরিকল্পনা করতে থাকে তারাও কীভাবে ইন্টারনেট থেকে আয় করতে পারেন।
তখন তাদের মাথায় আসে তার মায়ের কথা। মায়ের হাতের মজার মজার রান্না তাদের খুবই পছন্দ। এছাড়া গ্রামের সবার কাছেই ভালো রান্নার জন্য সুখ্যাতি আছে শশিকলার। এরপরই তার ছেলেরা ‘আম্মা কি থালি’ নামে ইউটিউব চ্যানেল খুলে ফেলে। সেটা ২০১৮ সালের মে মাসে। সেখানেই শশিকলার করা বিভিন্ন রান্নার রেসিপি দিতে থাকে তারা।
গ্রামীণ ও আঞ্চলিক বিভিন্ন রান্না করতেন শশিকলা। খুবই সাদামাটা রান্না। যেখানে নেই কোনো দামি বাসনপত্র, নেই খুব হাই কোয়ালিটি এডিটিং। তারপরও সেই ভিডিও পুরোবিশ্বের মানুষ পছন্দ করতে শুরু করে। বাড়তে থাকে চ্যানেলের ভিউ ও সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা। এখন তার চ্যানেলে রয়েছে ১০ লাখ ৭০ হাজার সাবস্ক্রাইবার। ভিউয়ের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬২ মিলিয়নে।
এই চ্যানেল থেকে শশিকলার আয় মাসে ৭০ হাজার টাকারও বেশি। পাকিস্তান, ফিজি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, দুবাই সহ সারা বিশ্বের মানুষ দেখেন তাদের ভিডিও।
শশিকলার সুজির গুলাব জামুন মিষ্টি তৈরির ভিডিওর ভিউ সংখ্যা ৫০ মিলিয়ন। দ্বিতীয়-সর্বোচ্চ ভিউয়ারশিপ তার রসগোল্লা। যেটি পেয়েছে ৪১ মিলিয়ন ভিউ।