মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ওপর চোখ পড়েছে প্রতারকদের। রোমাঞ্চকর অভিযানে এরকমই এক দল প্রতারককে আটক করেছে গোয়েন্দারা। অভিযান থেকে বেরিয়ে এসেছে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপ বা সেবা প্রতিষ্ঠান থেকে কিভাবে ধোঁকা দেয়া হয় গ্রামের সহজ-সরল মানুষদের। শিক্ষিত ব্যক্তিরাও ধরা পড়ছেন তাদের প্রতারণার জালে।
এই ব্যক্তি মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারি প্রতিষ্ঠানের কেউ নন। তারপরও নিজেকে প্রতিষ্ঠানটির কর্মী পরিচয় দিয়ে কথার জালে জড়িয়ে ফেলেছিলেন রাজধানীর একটি নামিদামি কলেজের শিক্ষিকাকে। হাতিয়ে নিয়েছিলেন এক লাখ ৪০ হাজার টাকা।
ঘটনার পর অভিযোগের সূত্র ধরে অভিযানে নামে গোয়েন্দারা। যশোরের শার্শা থেকে আটক হয় এক প্রতারককে।
এরপর অভিযান চলে ফরিদপুরের মধূখালি উপজেলার ডুমাইন গ্রামে। গ্রেফতার করা হয় আরও কয়েকজনকে। অভিযানের সময় গোয়েন্দাদের উপর চড়াও হয় প্রতারকরা।
এক একে প্রতারক দলের সাতজনকে আনা হয় ঢাকায়। প্রতারকরা জানায়, তাদের প্রতারণার কৌশল। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ি গোয়েন্দারা সংগ্রহ করেন আরও কিছু সিসি টিভি ফুটেজ।
সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা প্রতারক দলের সদস্যরা এজেন্ট দোকানগুলো থেকে কৌশলে কাস্টামার ডাটার ছবি তুলে পাঠিয়ে দেয় দল নেতার কাছে। ছবি দেখেই গ্রাহকের সব তথ্য পেয়ে গ্রাহককে ফোন দিয়ে বিভ্রান্ত করে। কাস্টমার কেয়ারের প্রতিনিধি পরিচয়ে তথ্য চায়। এরপরই ওটিপি পাঠানো হয় গ্রাহকের নাম্বারে। সেই ওটিপি প্রতারককে বলে দিলেই ঘটে বিপত্তি। ওটিপি ধরে সহজেই অ্যাপসের মাধ্যমে গ্রাহকের ফোনে ঢুকে বিকাশে থাকা টাকা নিজের কোন একটি অ্যাকাউন্টে নিয়ে নেয় প্রতারক।
এক প্রতারক জানান, “আমি শুধু দোকানদারের সঙ্গে কথা বলি, কথা বলে আমি আরেকজনকে দিয়ে দেই। দেয়ার পর সে কথা বলে টাকা নিয়ে আসে।”
মাঝেমাঝে কিছু অপরাধী ধরা পরলেও নানা সীমাবদ্ধতায় প্রতারণা সম্পূর্ণ বন্ধ করা যাচ্ছে না বলে জানান গোয়েন্দারা।
ডিবি উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, “আমরা অনুরোধ করবো বিকাশ কর্তৃপক্ষকে তাদের ডিলার বা এজেন্সি লোকদের সাইকোলজিক্যাল কিছু পরীক্ষা, এডুকেশিনাল কোয়ালিটি পরীক্ষা এবং যেই জায়গায় তারা দোকান করবে সেই জায়গাটি যেন সিসিটিভি ক্যামেরার কাভারেজ থাকে সেই ব্যবস্থাটা করবেন।”
সম্প্রতি বিকাশ প্রতারক ধরা পরার ঘটনায় গ্রাহকের তথ্যের গোপনীয়তা না রাখায় রাজধানীর নাথালপাড়ার এক বিকাশ এজেন্টকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।