ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ইন্টারনেট হচ্ছে ডিজিটাল সভ্যতার বাহন। ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে প্রতিটি ক্ষেত্রে ইন্টারনেট এখনই শ্বাস-প্রশ্বাসের মতো অতি প্রয়োজনীয়। বাংলাদেশের লাখ লাখ তরুণ তরুণী ইন্টারনেটের বদৌলতে সফল উদ্যোক্তা হয়েছে।ডিজিটাল যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ডিজিটাল সংযুক্তির মহাসড়ক তৈরি করতে না পারলে এর দায় আমরা এড়াতে পারবো না বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী। সময়ের চাহিদা পুরণে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের আওতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্ণমেন্ট ফোরাম (বিআইজিএফ)ও এমটব -এর যৌথ উদ্যোগে টেলিকম টেক্স পলিসি এন্ড ইকো সিস্টেম শীর্ষক আয়োজিত সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও বিআইজিএফ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো: খলিলুর রহমান, বিটিআরসি‘র চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, রবি‘র সিইও রিয়াজ রশীদ, এরিকসনের কান্ট্রি ম্যানেজার আবদুল সালাম, জিপির প্রতিনিধি হোসেন সাদাত এবং বাংলা লিংকের প্রতিনিধি তৈমুর রহমান প্রমূখ বক্তৃতা করেন। টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ইন্টারনেটকে অপরিহার্য একটি সেবা খাত হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, জাতীয় প্রবৃদ্ধিতে ইন্টারনেটের অবদান অপরিসীম। উৎপাদন প্রক্রিয়াসহ শিল্প-বাণিজ্যে ইন্টারনেটের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন তিনি।
তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীরা এখন বিনিয়োগের আগে জানতে চায় ফাইভ-জি সংযোগ আছে কীনা? মন্ত্রী বলেন, ইন্টারনেটের বিষয়ে রাজস্বের দিকে তাকালেই হবে না, সভ্যতার অগ্রগতির দিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে সবার আগে।
রাজস্ব বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের বোঝানোর মতো সুপারিশ মালা তৈরি করলে তিনি সম্ভাব্য সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস ব্যক্ত করেন।
মন্ত্রী মোবাইল ফোনের সেবার মান নিশ্চিত করার মাধ্যমে গ্রাহক সেবার মান বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন কলড্রপের জন্য গ্রাহকদের ক্ষতিপুরণ না দেওয়া গ্রহণ যোগ্য নয় এবং ব্যবসার নীতির সাথেও সামঞ্জস্যপূর্ণ্ হতে পারে না।
তিনি বলেন, মোবাইল অপারেটরসহ টেলকো সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সমূহকে গ্রাহকদের মনের কথা বুঝতে চেষ্টা করা উচিৎ। তিনি মোবাইল ডাটার প্যাকেজ পদ্ধতির সমালোচনা করে বলেন, আমার কেনা ডাটা আমি ব্যবহার করবো, যখন খুশি, যতক্ষণ প্রয়োজন ততক্ষণ করবো। ডাটা লিমিট প্রত্যাহার করায় টেলিটকের ভূমিকা ফলপ্রসূ অবদান রাখছে এবং অন্য অপারেটরসমূহকে গ্রাহক স্বার্থ নিশ্চিত করতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বে ডিজিটাল সংযোগ সম্প্রসারণের পাশাপাশি দেশে ডিজিটাল যন্ত্র উৎপাদনের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন দেশে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রনায়ক মোস্তাফা জব্বার।
ফাইভ-জিকে প্রথাগত মোবাইল প্রযুক্তি নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুগ পরিবর্তনের সহায়কের কাজ করবে ফাইভি জি।তিনি ফাইভ-জির প্রায়োগিক বিষয় সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, এখন আমাদের ২জি, ৪জিতো লাগবেই ৫জিরও সম্প্রসারণ করতে হবে। দেশে মোবাইল উৎপাদন হবার ফলে ৪জি-৫জি সেট উৎপাদনও সহজ হয়েছে। তিনি দেশে একদেশ এক রেট চালু করার জন্য বিটিআরসিকে ধন্যবাদ দেন।
হাসানুল হক ইনু স্মার্টফোনের সহজলভ্যতা এবং টেলকোখাতের ট্যাক্স যৌক্তিক মাত্রায় নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, টেলকো সেক্টরকে ঘিরে এককোটি মানুষ কর্মরত আছে তিনি ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেবার দাবি জানান।ডিজিটাল ইকোনোমির জন্য স্মার্ট ফোন সহজলভ্য এবং মোবাইল সেবার গুণগত মান নিশ্চিত করার উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব উচ্চপ্রযুক্তির পাশাপাশি বিদ্যমান মোবাইল সেবার গুণগতমান নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বিটিআরসি‘র চেয়ারম্যান টেলকোখাতের বিকাশে প্রণীত বিভিন্ন নীতিমালা তুলে ধরেন। তিনি বলেন বিটিআরসি নীতিমালা প্রণয়নসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে অংশীজনদের সাথে নিয়ে কাজ করছে তিনি বলেন বিটিআরসি কেবল নিয়ন্ত্রণ করেনা বরং সহায়কের ভূমিকা পালন করে।