জেনেভায় জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড সামিট অন দি ইনফরমেশন সোসাইটি (ডবিøউএসআইএস) ২০১৯ সালের ফলোআপ ফোরামের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আজ দেশে ফিরেছেন। আইটিইউ, ইউনেস্কো, ইউএনডিপি এবং ইউএনসিটিএডি এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত জাতিসংঘের টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের এ রকম বড় কোনো সামিটের চেয়ারম্যান হওয়ার ঘটনা বাংলাদেশে এটিই প্রথম।
সম্মেলনে বিশ্বের প্রায় শতাধিক রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান বিশ্বব্যাপী বিদ্যমান প্রযুক্তি বৈষম্য অবসানে নিজেদের দেশের অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন।
টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনের জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি‘ প্রতিপাদ্য নিয়ে জেনেভায় ৮ থেকে ১২ এপ্রিল এই ফোরাম অনুষ্ঠিত হয়। ৫দিনব্যাপী ডবিøউএসআইএসে বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধিসহ সরকারি-বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার ৩ হাজারেরও বেশী প্রতিনিধি অংশ গ্রহণ করেন। চেয়ারম্যান এর দায়িত্বের বাইরেও মন্ত্রী ডবিøউএসআইএসে ৯ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।
ঢাকায় প্রত্যাবর্তনের পর সম্মেলন নিয়ে মোস্তাফা জব্বার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ডবিøউআইএসের এবারের সম্মেলন বাংলাদেশের জন্য গৌরবের এবং অর্জনের। বিশ^সম্প্রদায়ের কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বে সমৃদ্ধির বাংলাদেশকে তুলে ধরার মাধ্যমে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে চিহ্নিত বাংলাদেশের প্রতি এই ফোরামের মাধ্যমে বিশ^ সম্প্রদায়ের মনোযোগ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উল্লেখ করেন মোস্তাফা জব্বার। বিশ্বে বৈষম্যহীনভাবে প্রযুক্তি রূপান্তরের জন্য ডবিøউএসআইএস একটি গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফর্ম। বৈষম্যহীন প্রযুক্তি নির্ভর বিশ্ব গড়তে শিল্পোন্নত এবং ধনী দেশগুলোই নয়, অনুন্নত আর উন্নত দেশ সবাইকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য ডবিøউএসআইএসকে সমন্বিত উদ্যোগে গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেছেন বলে উল্লেখ করেন। তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা জনাব সজীব ওয়াজেদ জয়’কে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে বলেন, তাদের অনুপ্রেরণা ও দিকনির্দেশনায় ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তব রূপ লাভ করেছে এবং একের পর এক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী আইসিটি বিশ্বের বৃহত্তম এই সম্মেলনের চেয়ারম্যান হিসেবে আইটিইউ মহাসচিব হাউলিন ঝাউকে সাথে নিয়ে গত ৮ এপ্রিল জেনেভায় ডবিøউএসআইএসের এক্সিবিশন উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে ৫ দিন ব্যাপী প্রযুক্তির বিশ^ সম্মেলনে তার কার্যক্রমের যাত্রা শুরু করেন। চেয়ারম্যানের দায়িত্বপালনের স্বীকৃতিস্বরূপ আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন্স ইউনিয়ন (আইটিইউ) অ্যাওয়ার্ড, সার্টিফিকেট অভ এক্সিলেন্স’ এ ভূষিত হয়েছেন মন্ত্রী। গত বুধবার জেনেভায় আইটিইউ মহাসচিব হাউলিন ঝাউ এই সার্টিফিকেট অভ এক্সিলেন্স মন্ত্রীর নিকট হস্তান্তর করেন।
সম্মেলনে মূল অনুষ্ঠানসমূহ ছাড়াও ডবিøউএসআইএস চেয়ারম্যান হিসেবে টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী ২০টি দেশের মন্ত্রীদের নিয়ে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠক পরিচালনা করেন। তিনি সম্মেলনের সাইড লাইনে আইটিইউ মহাসচিব হাউলিন ঝাউ এবং ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি অর্গানাইজেশনের মহাপরিচালক ফ্রান্সিস গুরির সাথে প্রযুক্তিখাতের দ্বিÑপক্ষীয় আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
সম্মেলনের বিভিন্ন ইভেন্টে মন্ত্রীর উপস্থাপনায় প্রথম তিনটি শিল্পবিপ্লব মিস করেও গত দশবছরে কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির দেশ থেকে ডিজিটাল শিল্প বিপ্লব বা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে বাংলাদেশ বৈশ্বিক নেতৃত্বের জায়গায় পৌছানোর সফলতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন প্রাজÍাবান নেতৃত্বে গৃহীত কর্মসূচিসমূহের চিত্র উঠে আসে।
২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের ঘোষণার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশকে একটি জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির দেশ হিসেবে গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার এই কার্যক্রম ২০১৪ সালে আইটিইউ এর নজরে আসে এবং সেই বছর তারা দেশব্যাপী ইউনিয়ন পর্যায় ডিজিটাল সেন্টার বাস্তবায়ন প্রকল্পকে ডবিøউএসআইএস পুরস্কার প্রদান করে। এছাড়া ২০১৫ সালে জাতীয় তথ্য বাতায়ন, ২০১৬ সালে সেবা পদ্ধতি সহজিকরণ-এসপিএস, পরিবেশ অধিদপ্তরের অনলাইন ছাড়পত্র, শিক্ষক বাতায়ন এবং কৃষকের জানালা এবং ২০১৭ সালে মাল্টিমিডিয়া টকিং বুক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের “টেলিমেডিসিন প্রকল্প”, “নাগরিক সেবা উদ্ভাবনে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার” এবং “ই-নথি” ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি পুরস্কার অর্জন করে। এবছরেও বাংলাদেশ একটি উইনার ও ৮টি চ্যাম্পিয়নশিপ পুরস্কার অর্জন করেছে।
জেনেভায় দেশের বিরল গৌরবের সফল প্রতিনিধিত্বকরার জন্য ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং আইসিটি ইন্ডাসিটজ্র ও আইসিটি ট্রেডবডিসমূহের প্রতিনিধিগণ জনাব মোস্তাফা জব্বারকে ফুলেল শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করে।
ফোরামে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে অপর সদস্যগণ হচ্ছেন, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বিটিআরসি চেয়ারম্যান মো: জহিরুল হক, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের উপসচিব উর্মি তামান্না, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রীর একান্ত সচিব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান, বিটিআরসি‘র পরিচালক (এসএস) লে: কর্নেল মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, বিআইএমইই, ঢাকা‘র কো-ফাউন্ডার বিজয় জব্বার এ