মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে লেখা প্রথম গবেষণা বই উন্মোচন করেছে পাঠ্যবইয়ের প্রকাশক স্প্রিঙ্গার নেচার।
বইটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারিস: আ মেশিন-জেনারেটেড সামারি অফ কারেন্ট রিসার্চ’। লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি নিয়ে প্রকাশিত পেপারগুলোর সারাংশ করা হয়েছে এই বইতে।
উদ্ধৃতি, সাইটেশন, হাইপারলিঙ্ক এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি রেফারেন্স কনটেন্ট দেওয়া হয়েছে এতে। বইটি বিনামূ্ল্যে ডাউনলোড করে পড়া যাবে বলেও প্রতিবেদনে জানিয়েছে প্রযুক্তি সাইট ভার্জে।
বইটির বিষয় একঘেয়ে হলেও এমন বই রয়েছে এটিই দারুন ব্যাপার। ভূমিকা লেখার সময় স্প্রিঙ্গার নেচারের হেনিং শোয়েনেনবার্গার বলেন, স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির মাধ্যমে লেখা এ ধরনের বই “বৈজ্ঞানিক প্রকাশনার নতুন যুগের” শুরু করতে পারে।
শোয়েনেনবার্গার বলেন, শেষ তিন বছরে শুধু লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির ওপরই ৫৩ হাজারের বেশি গবেষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। ফলে এই বিষয় নিয়ে গবেষক বিজ্ঞানীরা সবগুলো পেপার পড়তে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। কিন্তু এআই দিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্ক্যান এবং সারাংশ তৈরি করা করার মাধ্যমে বিজ্ঞানীদের সময় অনেক বাঁচতে পারে।
“এই প্রক্রিয়ায় গবেষণার জন্য শত শত প্রকাশিত পেপার পড়ার মতো কাজগুলো দ্রুত হতে পারে। এর পাশাপাশি দরকার পরলে লিঙ্কে ক্লিক করে মূল প্রকাশনাটিও পড়তে পারবেন পাঠক,” বলেন শোয়েনেনবার্গার।
সাম্প্রতিক সময়ে মেশিন লার্নিংয়ের উন্নয়নের ফলে কম্পিউটারের মাধ্যমে শব্দ লেখার ক্ষমতা অনেক বেড়েছে, কিন্তু এই বটগুলোর ক্ষমতা এখনও অনেক সীমিত।
লাইব্রেরি লোডের মাধ্যমে ‘ফর্মুলিক টেক্সট’ উপস্থাপন করতে পারে এআই। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে সংবাদ সংস্থাগুলো ফুটবল ম্যাচ, ভূমিকম্প এবং আর্থিক খবরের সারাংশ করতে এআই ব্যবহার করে থাকে।
স্প্রিঙ্গার নেচার বইয়ের ভূমিকায় প্রযুক্তিবিদ রস গুডউইন বলেন, “আমরা যখন কম্পিউটারকে লেখা শেখাই, কম্পিউটার আমাদের স্থান নেয় না, যেমনটা পিয়ানোবাদকের স্থান নেয় রোবট পিয়ানো। কোনোভাবে এগুলো আমাদের কলমের কাজ করে এবং আমারা লেখকের চেয়েও বেশি কিছু হয়ে উঠি। আমরা লেখকের লেখক হয়ে উঠি।”
এআই দিয়ে বই লেখা শুরু হলেও এখন পর্যন্ত আমারা স্বয়ংক্রিয় লেখন প্রযুক্তি ব্যবহারের পর্যায়ে নেই বলে মনে করেন কার্নেগি মেলনের হিউম্যান কম্পিউটার ইন্টার্যাকশন ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যপক জেফ বিগহ্যাম। বইটি এআইয়ের দারুন কোনো লেখা নয় বলে জানিয়েছেন তিনি।