প্রযুক্তিজগতে বিশেষ করে সেলফোন খাতে আইফোনের জনপ্রিয়তা শীর্ষে। এর মাধ্যমে বাজারে অবস্থানে রয়েছে অ্যাপল। আইফোনের এ জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে এবার গাড়ি উৎপাদন শিল্পে প্রবেশ করতে চাইছে প্রতিষ্ঠানটি। এর অংশ হিসেবে জুনে কারপ্লে নামে পরবর্তী প্রজন্মের সফটওয়্যার উন্মোচন করা হয়েছে। তবে এটি গাড়ি উৎপাদন শিল্পের জন্য আশীর্বাদ নাকি বিষফোঁড়া হিসেবে জায়গা করবে তা নিয়ে সন্দিহান অন্যান্য প্রতিষ্ঠান।
সিএনবিসি প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, নতুন কারপ্লে সফটওয়্যারটি গাড়ির ভেতরের সব স্ক্রিনের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম। এছাড়া এটি গ্যাস মিটার থেকে শুরু করে স্পিড ডায়ালকে ডিজিটাল ভার্সনে রূপান্তর করেছে। সেই সঙ্গে আইফোন ব্যবহারের মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। প্রতিষ্ঠানটির দাবি কারপ্লে সফটওয়্যারটি উৎপাদনকারীদের গাড়ি বিক্রিতে সহায়তা করবে।
অ্যাপলের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পরিচালক এমিলি শুবার্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ৯৮ শতাংশ গাড়িতে প্রিবিল্ট হিসেবে কারপ্লে সফটওয়্যারটি ইনস্টল করা থাকে। সেই সঙ্গে কারপ্লে সফটওয়্যার থাকলে ৭৯ শতাংশ গ্রাহক গাড়ি কেনার আগ্রহ প্রকাশ করে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
নতুন ফিচারটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর সময় শুবার্ট বলেন, নতুন গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে কারপ্লে সফটওয়্যার থাকার বিষয়টি এখন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সফটওয়্যারটির কারণে গাড়ি উৎপাদন শিল্পসংশ্লিষ্টরা বিড়ম্বনায় রয়েছে। একদিকে কারপ্লে ইনস্টল করার মাধ্যমে কম আয়ের প্রভাব ও শিল্পে বড় ধরনের পরিবর্তনের সুযোগ। অন্যদিকে বড় বিনিয়োগের মাধ্যমে নিজস্ব ইনফোটেইনমেন্ট সফটওয়্যার তৈরি করা। যেখানে অধিকাংশ গ্রাহক কারপ্লে সফটওয়্যার ছাড়া গাড়ি কিনতে নারাজ।
গাড়ি উৎপাদনকারীরা গ্রাহকদের কাছে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন পরিষেবা ও ফিচার বিক্রি করে। যেগুলোর মধ্যে ইন্টারনেটে সংযোগ, স্বয়ংক্রিয় চালনা সুবিধা ছাড়াও গ্যাসের ব্যবহার থেকে বিদ্যুৎ ও ব্যাটারিতে স্থানান্তর হওয়ার বিষয় রয়েছে। ম্যাকেঞ্জির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০৩০ সাল নাগাদ গাড়ির সফটওয়্যার বাজার ৯ শতাংশ বাড়বে, যা গাড়ি উৎপাদন শিল্পের তুলনায় দ্রুত। ২০৩০ সাল নাগাদ গাড়ির সফটওয়্যার বিক্রির মাধ্যমে বাজার ৫ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলেও প্রতিষ্ঠানটির গবেষকরা পূর্বাভাস দিয়েছে। আর অ্যাপল সে বাজারে প্রবেশ করতে চায়।
অ্যাপলের সফটওয়্যার ব্যবহার না করেও জেনারেল মোটরস ইন কার সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে প্রতি বছর ২০০ কোটি ডলার মুনাফা অর্জন করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০৩০ সাল নাগাদ এটি ২ হাজার ৫০০ কোটি ডলারে পৌঁছাবে।