চীনের স্মার্টফোন রফতানিতে বড় পতন হয়েছে। দুর্বল ভোক্তা মনোভাব ও নতুন উন্মোচন অভাবের মধ্যে জুলাইয়ে চীনের স্মার্টফোন রফতানি ৩১ শতাংশ কমেছে। পাশাপাশি কভিডজনিত লকডাউন ও অন্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা স্থানীয় চাহিদাকেও কমিয়ে দিয়েছে। খবর সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
চীনের শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান চায়না একাডেমি অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজির নতুন প্রতিবেদন অনুসারে, জুলাইয়ে চীনে তৈরি মোট ১ কোটি ৯১ লাখ স্মার্টফোন রফতানি করা হয়েছে। এ সংখ্যা গত বছরের একই মাসে ছিল ২ কোটি ৭৭ লাখ ইউনিট। স্মার্টফোন রফতানির এ সংখ্যা জুলাইয়ের ২ কোটি ১০ লাখ ইউনিট থেকেও অনেক কম।
গত মাসে মোট রফতানিতে চীনা স্মার্টফোন ব্র্যান্ডের দখল ছিল ৯১ দশমিক ৮ শতাংশ। এ সময়ে ১৮টি নতুন মডেল উন্মোচন করা হয়েছে। জুলাইয়ে রফতানীকৃত স্মার্টফোনের ৭০ শতাংশই ছিল ফাইভজি। সব মিলিয়ে চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে দেশটি ১৫ কোটি ৩০ লাখ ইউনিট স্মার্টফোন রফতানি করেছে। এ সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৩ শতাংশ কম।
স্মার্টফোন রফতানিতে এ পতন চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ফলাফলে ঝুঁকি তৈরি করেছে। যদিও অ্যাপল এ মাসে নতুন ১৪ সিরিজ উন্মোচন করেছে। এজন্য প্রান্তিকের শেষ মাসে রফতানি বাড়ার আশাও রয়েছে। গত সপ্তাহে উন্মোচন হওয়া আইফোন ১৪ বিশ্বের বৃহত্তম স্মার্টফোন বাজারে প্রি-অর্ডারের বন্যা দেখেছে। এ পরিস্থিতিতে অ্যাপলের চীনা অনলাইন পরিষেবাগুলো বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়ে গিয়েছে।
অর্ডারের চাপে আইফোন ১৪ প্রো ও প্রো ম্যাক্সের চালান ১৬ সেপ্টেম্বর উন্মোচনের তারিখ পরে পাঁচ-সাত সপ্তাহ পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। আইফোনের প্রি-অর্ডার খোলার ২৪ ঘণ্টায় চীনা গ্রাহকরা অফিশিয়াল অ্যাপল স্টোর জেডিডটকমের মাধ্যমে আইফোন ১৪ মডেলের ২০ লাখেরও বেশি ইউনিটের অর্ডার দিয়েছে।
টিএফ সিকিউরিটিজের একজন বিশ্লেষক কুও মিং-চির মতে, দুটি প্রো মডেল চীনে সমস্ত আইফোন ১৪ সিরিজের প্রি-অর্ডারের প্রায় ৮৫ শতাংশ।
একটি গবেষণা নোট অনুসারে, চীনে আইফোন ১৪ সিরিজের প্রি-অর্ডার নিয়ে কথা বলার উপযুক্ত সময় এখনো আসেনি। এ গতি অব্যাহত থাকবে কিনা তা বিচার করার জন্য আমাদের আরো কয়েকদিনের প্রি-অর্ডারের পরিস্থিতি দেখতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে যে প্রি-অর্ডারের কোনো প্রতিশ্রুতি নেই। কারণ এতে অর্থ প্রদানের বাধ্যবাধকতা থাকে না। তাছাড়া আইফোন ১৪ প্রো ও প্রো ম্যাক্স সর্বোচ্চ পর্যায়ের ভোক্তাদের আকর্ষণ করে। এ ধরনের গ্রাহক মূলত মূল্য সংবেদনশীল নয় এবং সম্ভবত তারা প্রতি বছর তাদের ফোন আপগ্রেড করে।
চলতি বছর স্মার্টফোনের বৈশ্বিক রফতানি ৩ শতাংশ সংকুচিত হবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। কভিডজনিত লকডাউন, ইউক্রেনে যুদ্ধ ও চীনের দুর্বল অর্থনীতির কারণে স্মার্টফোনের চালান ধীর হয়ে গিয়েছে। জুনে প্রকাশিত কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের সর্বশেষ বৈশ্বিক পূর্বাভাস অনুসারে, চলতি বছর বিশ্বজুড়ে মোট স্মার্টফোন রফতানি ১৩৬ কোটি ইউনিট দাঁড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ১৩৯ কোটি ইউনিট। যদিও গত বছর স্মার্টফোন রফতানি ২০২০ সালের মোট ১৩৩ কোটি ইউনিট থেকে ৪ শতাংশ বেড়েছিল।