দেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যৌন হয়রানির প্রবণতা বাড়ছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২১ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যৌন হয়রানির হার ছিল ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ। চলতি বছর এই হার প্রায় দুই শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৯ দশমিক ৩৪।
বিটিআরসির সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ এক কর্মশালায় প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীতে বিটিআরসি কার্যালয়ে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে যৌথভাবে কর্মশালার আয়োজন করে বিটিআরসি ও সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ বলেন, গত বছর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপত্তিকর ছবির হার ছিল ৫ দশমিক ৮৫, সাইবার বুলিং ৫০ দশমিক ১৬ শতাংশ। চলতি বছর প্রতিটি ক্ষেত্রে সাইবার অপরাধ বেড়েছে। উপস্থাপনায় বলা হয়, ২০২২ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যৌন হয়রানির হার ৯ দশমিক ৩৪, আপত্তিকর মেসেজ ৬ দশমিক ৯৩ ও সাইবার বুলিং ৫০ দশমিক ২৭ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একেবারে নতুন। জনগণের মধ্যে এ বিষয়ে সচেতনতার ঘাটতি রয়েছে। তিনি বলেন, ব্যক্তি সচেতন না থাকলে সাইবার জগৎ নিরাপদ রাখা খুব কঠিন।
মোস্তাফা জব্বার আরও বলেন, সম্প্রতি সরকার ২৯ প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো ঘোষণা করেছে। এগুলো রাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও এসব প্রতিষ্ঠান থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের তথ্য প্রাপ্তিতে কোনো বাধা নেই।
প্রযুক্তি ব্যবহারে শিশু-কিশোরদের বিরত না রেখে বরং তাদের নিরাপদে রাখতে অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার। তিনি বলেন, সাইবার–সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সপ্তাহে সচেতনতা ক্যাম্পেইন করলে ফলপ্রসূ হবে। এ জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে এগিয়ে আসতে হবে।
আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্যে বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র বলেন, বিশ্বের প্রতিটি দেশ সাইবার অপরাধ–সংক্রান্ত নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। তরুণ সমাজকে সাইবার নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতন করতে প্রচার ও কর্মশালা আয়োজনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের সভাপতি কাজী মুস্তাফিজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের কমিশনার মো. মহিউদ্দিন আহমেদ, লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের কমিশনার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন, প্রশাসন বিভাগের মহাপরিচালক মো. দেলোয়ার হোসাইন, স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জুয়েল, লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের মহাপরিচালক আশীষ কুমার কুন্ডু, বিটিআরসি সচিব মো. নুরুল হাফিজ এবং যুব কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।