ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্র্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস নগদ দেশ ও জাতির স্বার্থে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। নগদের সাথে অন্যান্য এমএফএসের সার্ভিস চার্জের বিশাল পার্থক্য থাকায় জনগণকে মোট লেদ-দেনের হিসেবে বছরে হাজার কোটি টাকারও বেশি অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হয়। নগদকে ডাক অধিদপ্তরের সেবা হিসেবে স্বীকৃতি একটি অসাধারণ উদ্যোগ। স্বল্প সার্ভিস চার্জে জনগণকে সেবা দিতে নগদের এই অর্জন ডাক অধিদপ্তরের অর্জন বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি নগদকে এমএফএসে জনগণের অর্থ সাশ্রয়ে নেতৃত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান।
মন্ত্রী গতকাল বুধবার ঢাকায় ডাকভবনে ২০২১-২২ অর্থবছরের নগদ সেবা থেকে ডাক অধিদপ্তরের আয়ের অর্থ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ আহ্বান জানান।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মো: খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: হারুন উর রশীদ, নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভির আহমেদ, এবং নগদের প্রধান নির্বাহী সাফায়েত আলম– বক্তৃতা করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী নগদকে তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবন সমৃদ্ধ একটি এমএফএস উল্লেখ করে বলেন, নগদের কেওয়াইসি উদ্ভাবন ছিলো অসাধারণ একটি প্রযুক্তি যা অন্যরা নগদের পথ অনুরসরণ করে কেওয়াইসিতে প্রবেশ করেছে।
ডিজিটাল প্রযুক্তির এই অগ্রদূত বলেন, শুরুতে নগদের উদ্ভাবনী ধারণা দেখে নগদের অগ্রযাত্রায় ইতিবাচক ভূমিকা রেখে আসছি এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।
মন্ত্রী সৃজনশীল কাজের উৎসাহ যোগানোর প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ উল্লেখ করে বলেন, ’২০১৯ সালের ২৬ মার্চ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার নগদ একাউন্টে দশ হাজার টাকা প্রেরণের মাধ্যমে নগদ সেবার শুভ উদ্বোধন করেন। আমার নগদ একাউন্টের এই ব দশ হাজার টাকার এই ব্যালেন্স ধরে রাখার চেষ্টা করবো। এই জন্য নগদের শুভ যাত্রা আমার জন্য বড় সৌভাগ্যের। মন্ত্রী নগদের অব্যাহত সফলতা কামনা করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব নগদ সম্পর্কে ডাক অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সকলের পরিচ্ছন্ন ধারণা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতার মাধ্যমে এই সেবাটির উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করেন। ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নগদের অব্যহত সফলতার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
পরে ২০২১-২২ অর্থবছরের নগদ সেবা থেকে ডাক অধিদপ্তরের আয়ের অর্থ বাবদ চার কোটি পঞ্চাশ লক্ষ ৪৬ হাজার ৬শত ৪৬ টাকার চেক হস্তার করা হয়।
২০১৮-১৯ অর্থ বছর থেকে এ নিয়ে ডাক অধিদপ্তর নগদ সেবা থেকে ৯ কোটি দশ লক্ষ টাকার রাজস্ব আয় করে। এর মধ্যে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে এ খাতে ডাক অধিদপ্তরের মোট প্রাপ্ত টাকার পরিমান ছিল সাত লক্ষ ৯৩ হাজার টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ১ কোটি ১৯ লক্ষ ২২ হাজার টাকা, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩ কোটি ৩১ লক্ষ্ ৯৪ হাজার টাকা। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, নগদের দৈনিক সর্বোচ্চ লেনদেন ৯৫৩ কোটি টাকা এবং গ্রাহক সংখ্যা ৬ কোটি ৭০ লক্ষ। নগদের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে ৬২০১ জন এবং পরোক্ষ ২ লক্ষ ৫৫ হাজার। নগদের মাধ্যমে ২০২১ -২২ অর্থবছরে মোট ১৬টি মন্ত্রণালয়ে ও ১৭টি প্রকল্পের ১ কোটি পচাশি লক্ষ ভাতাভোগীর মধ্যে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বিতরণ করা হয়। প্রতি হাজার টাকা লেনদেনে এজেন্ট, ডিস্ট্রিবিউটর এবংএমএনও কমিশন বাদে নগদের গ্রস আয় প্রায় ২১ পয়সা। এর মধ্যে ডাক অধিদপ্তর শতকরা ৫১ ভাগের অংশ হিসেবে ১১ পয়সা রাজস্ব পায় অবশিষ্ট ১০ পয়সা নগদের আয়।