বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের সবচেয়ে বড় সিএসআর প্রোগ্রাম ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার-২০১৯-এর চূড়ান্ত ১০ জন মেধাবী আইসিটি শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা সফরে চীনে নেওয়া হয়েছে। চীনের বেইজিংয়ে হুয়াওয়ের এক্সিকিউটিভ ব্রিফিং সেন্টারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি ১০ জন আইসিটি মেধাবী শিক্ষার্থীকে স্বাগত জানায় বেইজিং হুয়াওয়ে কর্তৃপক্ষ। অনুষ্ঠানে চীনের বেইজিংয়ে নিয়োজিত বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত এম ফজলুল করিম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া চীনে বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর মো. মাহফুজুল আলম খান এবং অন্যান্য হুয়াওয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এসময় তারা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভূয়সী প্রশংসার মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করেন।
সিডস ফর দ্য ফিউচার প্রতিযোগিতাটি ২০০৮ সালে বিশ্বব্যাপী শুরু হয়। ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ১০৮টি দেশ ও অঞ্চলে প্রতিযোগিতাটি হয়েছে। এখনও পর্যন্ত বিশ্বের ৩৫০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৩০ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৩৬০০-এর বেশি শিক্ষার্থী চীনে হুয়াওয়ের হেডকোয়ার্টারে গিয়ে হাতে কলমে কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। বাংলাদেশে চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ওয়েস্টিন হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সিডস ফর দ্য ফিউচার-২০১৯ প্রতিযোগিতা শুরু হয়। পরবর্তীতে দেশের শীর্ষ ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী বাছাই প্রক্রিয়া চলে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো- বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট), খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)। চূড়ান্তভাবে ১০ জন শিক্ষার্থীকে বাছাই করা হয়। চীনে নেওয়ার আগে গত ৩ এপ্রিল এই ১০ শীক্ষার্থীকে অভ্যর্থনা জানানো হয়।
চীনের বেইজিংয়ে বাংলাদেশি দূতাবাসে নিয়োজিত রাষ্ট্রদূত এম ফজলুল করিম বলেন, ‘আমি প্রথমেই হুয়াওয়েকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাতে চাই। ধারাবাহিক অবদান রেখে হুয়াওয়ে বাংলাদেশে কাজ করছে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রক্রিয়ায় ইতোমধ্যে হুয়াওয়ের সক্রিয় অংশগ্রহণ আছে। ১৯৯৮ সাল থেকে হুয়াওয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে। এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সরকারের নেওয়া ‘ভিশন-২০২১’ বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে এগিয়ে দিচ্ছে। সরকারের এই ভিশন যুবকদের জন্য নতুন নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সিডস ফর দ্য ফিউচার ইতোমধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে সবচেয়ে প্রশংসনীয় বিষয় হলো, হুয়াওয়ে বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হয়েও তারা তাদের অর্জনকে প্রচার করে না। এর পরিবর্তে সবাইকে নিয়ে একটি সংযুক্ত বিশ্ব গড়তে তারা গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে বেশি বেশি বিনিয়োগ করছে। খুবই কম সময়ের মধ্যে নতুন নতুন উদ্ভাবন ও মানসম্পন্ন সেবা দিয়েই কোম্পানিটি এতোদূর এসেছে।’
হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সিইও ঝাং জেংজুন বলেন, ‘সফলতার জন্য শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন। হুয়াওয়ে এসব মেধাবী শিক্ষার্থীদের সামনে এগিয়ে নিতে চায়, যাতে তারা এই খাতের গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হতে পারে। হুয়াওয়ের প্রধান লক্ষ্য নতুন নতুন উদ্ভাবন করা, আর এই লক্ষ্যই কোম্পানিটিকে সাফল্যের চূড়ায় আরোহনে সহায়তা করেছে। অ্যাডভ্যান্সড টেকনোলজি, গবেষণা ও উন্নয়নে বেশি বেশি বিনিয়োগ এবং সর্বোচ্চমানের সেবা সরবরাহই হুয়াওয়ের সাফল্যের মূলমন্ত্র। আমি আশা করি এই প্রোগ্রাম শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিগত অভিজ্ঞতা ও কাজের দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করবে। গত ২০ বছর ধরে হুয়াওয়ে বাংলাদেশকে গভীরভাবে সহযোগিতা করে আসছে এবং সম্পূর্ণ সংযুক্ত ও বুদ্ধিবৃত্তিক বাংলাদেশ গড়তে সিডস ফর দ্য ফিউচার অনুষ্ঠানটি যুবকদের সহায়তা করে আসছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে হুয়াওয়ে তাদের অবদান অব্যাহত রাখবে।’
যেকোনো দেশের আইসিটি মেধাবী শিক্ষার্থীদের পরিচর্যা করতে এবং আইসিটি টেকনোলজির বিষয়ে জানাতে ও চীনের সংস্কৃতির বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে শিক্ষার্থীদের সুযোগ করে দিতে চায় হুয়াওয়ে। প্রতি বছরই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে হুয়াওয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের বাছাই করে।
ছবির ক্যাপশন: বেইজিংয়ে হুয়াওয়ের ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার-২০১৯’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মেধাবী ১০ জন আইসিটি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে চীনের বেইজিংয়ে বাংলাদেশি দূতাবাসে নিয়োজিত রাষ্ট্রদূত এম ফজলুল করিম, দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর মো. মাহফুজুল আলম খান এবং হুয়াওয়ের অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।