বাংলাদেশের টেলিকম অবকাঠামো খাতে এনটিটিএন (ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক), আইআইজি (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে), আইটিসি (ইন্টারন্যাশনাল টেরিস্ট্রিয়াল ক্যাবল) এবং আইসিএক্স (ইন্টারকানেকশন এক্সেঞ্জ) হিসেবে এক নম্বর প্রতিষ্ঠান সামিট কমিউনিকেশন্স লিমিটেড (এসসিএল) সাবমেরিন ক্যাবল (এসএমডব্লিউ৪) ম্যাইনটেইন্যান্স চলাকালে ইন্টারনেট সেবাসমূহ নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে ব্যাকআপ প্রদান করছে।
২০ এপ্রিল, ২০১৯ তারিখে এসএমডব্লিউ৪ ক্যাবলটিকে পরিকল্পিতভাবে ম্যাইনটেইন্যান্স শুরু করছে এসএমডব্লিউ৪ কনসোর্টিয়াম, যার ফলে দেশে সমগ্র এসএমডব্লিউ৪ ক্যাবল সিস্টেমে বিভ্রাট তৈরি শুরু হয়েছে। এটি ১ মে ২০১৯ তারিখে শেষ হওয়ার কথা। সারা দেশে এই ১২ দিন প্রায় ৩০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ কমে যাবে, ফলে ইন্টারনেট সেবার গতিও কমে যাওয়া শুরু হয়েছে। তবে, আইটিসি, এসএমডব্লিউ৪, এসএমডব্লিউ৫ এবং ঝামেলাহীন নেটাওয়ার্কের জন্য আরও কিছু পর্যাপ্ত ব্যান্ডউইথের মাধ্যমে সামিট কমিউনিকেশন্স লিমিটেড তার নেটওয়ার্ককে এমনভাবে প্রস্তুত করেছে যাতে, এসসিএল-এর গ্রাহকদের (৩৫০জিবিপিএস এরও বেশি) এই ভোগান্তির মধ্যে পড়তে না হয়।
এই ধরনের জাতীয় সংকটের সময় এসসিএল-এর আইটিসি, ব্যাকআপ প্রদানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এছাড়াও ঢাকা-কুয়াকাটা রুটে এসসিএল-এর এনটিটিএন, শুধুমাত্র এসসিএল-এর আইআইজি-এর জন্যই এসএমডব্লিউ৫-এর সর্বোচ্চ ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ প্রদান করছে তা নয়, বরং দেশে বাকী আইআইজি’সমূহকেও সেবা প্রদান করছে, যেটি দেশের এই ম্যাইনটেইন্যান্স সময়ে এসএমডব্লিউ৫ ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করছে। সর্বোপরি, দেশের সুবিধার জন্য এই দুর্যোগ পরিস্থিতির সময় এসসিএল পূর্ণ সক্ষমতার সাথে ব্যাকআপ দিতে প্রস্তুত।
সামিট কমিউনিকেশন্স লিমিটেড-এর এমডি এবং সিইও মো. আরিফ আল ইসলাম বলেন, “গত কয়েক বছর ধরে এসএমডব্লিউ৪ সি ক্যাবল বিভিন্ন ধরনের ম্যাইনটেইন্যান্স কার্যক্রমের সাথে পরীক্ষণ বিভ্রাটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তবুও, পরিকল্পিত এই রক্ষণাবেক্ষণ/বিভ্রাটের সময় এসসিএল গ্রাহকদের নিরবিচ্ছিন্ন সেবা প্রদান করেছে, বিশেষ করে এসসিএল আইটিসি কাজ শুরু করার পর। এবারও এর ভিন্নতা হচ্ছে না। আমরা গ্রাহকদের জন্য ১০০% প্রাপ্যতার মাধ্যমে সেরা সংযোগ প্লাটফর্ম হিসেবে বিকশিত হতে এবং দেশকে নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা প্রদানের চেষ্টা করে যাচ্ছি”।
সর্বোচ্চ সংখ্যক আপসিট্রম কানেক্টিভিটি, অত্যাধুনিক নেটওয়ার্ক ইকুইপমেন্ট, অভিজ্ঞ দল এবং অসাধারণ মানের সেবার মাধ্যমে দেশের বৃহত্তম আইটিসি অপারেটর হিসেবে সামিট তার সকল ব্যবসায়িক অংশীদারদের জন্য ঝামেলাহীন ও নিরাপদ সেবা নিশ্চিত করতে সেরা কানেক্টিভিটি প্ল্যাটফর্ম তৈরির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ও ভারতের আইটিসি নেটওয়ার্কগুলোর মধ্যে বিভিন্ন টেরেস্ট্রিয়াল ক্যাবল পথ রয়েছে, যা বিভিন্ন সাবমেরিন ক্যাবল সিস্টেম যেমন- আইএমইডব্লিউই, টিজিএন-ইএ, টিআইসি, এসএমডাব্লিউ৪, আই২আই ইত্যাদি ব্যবহারের মাধ্যমে বিশ্বের সাথে একাধিকভাবে সংযুক্ত।
সারাদেশ জুড়ে সামিট এনটিটিএন ৪৫,০০০ কিলোমিটারের বেশি ফাইবার স্থাপন করেছে এবং সকল মোবাইল অপারেটর, আইআইজি ও আইএসপিগুলোকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। দেশের মোট ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ চাহিদার এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি সরবরাহ করছে সামিট আইআইজি। বিশ্বব্যাপী ব্যান্ডউইথ আমদানি করে একটি অত্যাধুনিক শক্তশালী নেটওয়ার্কের মাধ্যমে গ্রাহকদের জন্য নিরবিচ্ছিন্ন সেবা প্রদান করছে আইটিসি।
বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিএসসিসিএল (এসএমডাব্লিউ৪ও৫) থেকে এবং টেরেস্ট্রিয়াল ক্যাবলের মাধ্যমে ভারত থেকে ইন্টারনেটের আপস্ট্রিম মেইনটেইন করে। বর্তমানে এসএমডাব্লিউ৪, এসএমডাব্লিউ৫ এবং আইটিসি এর মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রায় ১.১ টিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ ব্যবহৃত হয়। এসসিএল উভয় আইএলডিসি সিস্টেমগুলো (সাবমেরিন এবং টেরেস্ট্রিয়াল-এর মাধ্যমে) থেকে ব্যান্ডউইথ সংগ্রহ করেছে। এটি সম্মানিত গ্রাহকদের নিরবচ্ছিন্ন অভিজ্ঞতা প্রদানের জন্য সুরক্ষিত নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করার মাধ্যমে বর্তমানে সারা দেশের ব্যান্ডউইথ চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ সরবরাহ করে থাকে যা কিনা ৩৫০ জিবিপিএসেরও বেশি। বাংলাদেশের (কক্সবাজার, কুয়াকাটা এবং বেনাপোল) সম্ভাব্য গেটওয়ে থেকে ব্যালেন্স্ড ব্যান্ডউইথ মেইনটেইন করার মাধ্যমে এসসিএল নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করে। তাই এটি দেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুপরিচিত।